অ্যালিস্টারের একমাত্র গোলে রিয়ালকে হারাল লিভারপুল
Published: 5th, November 2025 GMT
অ্যনফিল্ডের আলো-ঝলমলে এক রাতে ইউরোপের দুই পরাশক্তির লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে নিল লিভারপুল। একমাত্র গোলটি এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের পক্ষ থেকে। তার সেই গোলেই মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে ‘দ্য রেডসরা’।
অবশ্য রিয়াল ভাগ্যবান যে হারের ব্যবধান আরও বড় হয়নি। কারণ তাদের প্রাচীর হয়ে ছিলেন থিবো কোর্তোয়া। পুরো ম্যাচ জুড়ে লিভারপুলের একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে রেখেছিলেন এই বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
ম্যাচের শুরু থেকেই লিভারপুল ছিল আগ্রাসী মেজাজে। কোচ আর্নে স্লট আগের ম্যাচের মতো প্রায় একই দল মাঠে নামান। শুধু এক পরিবর্তন ছিল শুরুর একাদশে। ফ্লোরিয়ান ভার্টজ জায়গা নেন কোডি গ্যাকপোর পরিবর্তে। শুরুতেই ভার্টজের পাস থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন দমিনিক সোবোস্লাই। কিন্তু খুব কাছ থেকে নেওয়া তার শট ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া।
রিয়ালের ভাগ্য আরও একবার রক্ষা পায় যখন ভিএআর দেখায় যে অরেলিয়েন চুয়ামেনির হাতে লেগে যাওয়া বলটি ইচ্ছাকৃত নয়। এরপর সোবোস্লাই আবারও ভয়ংকর এক শটে কোর্তোয়াকে পরীক্ষা নেন। তবে গোলরক্ষক ছিলেন অনড়।
রিয়ালও কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু কিলিয়ান এমবাপ্পে তার সাধারণ মানের অনেক নিচে ছিলেন। ১৭ ম্যাচে মাত্র দুইবার গোলবঞ্চিত থাকা ফরাসি তারকা এবার পোস্টের বাইরে শট নেন। প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়ালের প্রথম অনটার্গেট শট আসে জুড বেলিংহ্যাম থেকে। যা সহজেই ঠেকিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক জিওর্গি মামারদাশভিলি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিভারপুল ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোর্তোয়া তখন যেন একাই রিয়ালের রক্ষাকবচ। তিনি ভার্জিল ফন ডাইক, হুগো একিতিকে ও সোবোস্লাইর হেড ঠেকিয়ে দেন টানা তিনবার। কিন্তু ৬০ মিনিটে এসে ভেঙে যায় তার সেই প্রতিরোধ। সোবোস্লাইয়ের ফ্রি কিক থেকে উঠে আসা বলটিতে দুর্দান্ত হেডে জালে পাঠান অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। আর অ্যানফিল্ডে গর্জে ওঠে হাজারো দর্শক।
দীর্ঘ ইনজুরির পর ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড মাঠে নামেন শেষদিকে। ১৬ সেপ্টেম্বরের পর এটাই তার প্রথম ম্যাচ। যদিও লিভারপুল সমর্থকরা তাকে বিদ্রূপের সুরে অভ্যর্থনা জানায়। ম্যাচের আগে তার নামে থাকা অ্যানফিল্ডের পাশের দেয়ালে আঁকা মুরালটি ভাঙচুরের খবরও ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে নিখুঁতভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন তরুণ কনর ব্র্যাডলি। এর ফলে এই প্রথমবারের মতো এই মৌসুমে গোলশূন্য থাকে রিয়াল মাদ্রিদ।
শেষ মুহূর্তে গ্যাকপোর শটও কোর্তোয়া ঠেকিয়ে দেন। কিন্তু লিভারপুলের রক্ষণের দৃঢ়তা এবার অটুট ছিল। ফলাফল চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম ক্লিন শিট এবং মর্যাদাপূর্ণ এক জয়।
ম্যাচ শেষে ম্যাক অ্যালিস্টার বলেন, “এটা ছিল দারুণ এক জয়, সত্যি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা জানি, এটাই শেষ নয়। গত মৌসুমেও আমরা প্রথম ধাপ ভালোভাবে শেষ করেছিলাম। কিন্তু পরে দ্রুতই বিদায় নিয়েছিলাম। এবার তাই সতর্ক থাকতে হবে।”
অন্যদিকে, রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া বলেন, “আমরা অনেক ভুল করেছি। বিশেষ করে বক্সের কাছাকাছি। এমন ম্যাচ ছোট ছোট ভুলেই নির্ধারিত হয়ে যায়। বড় দলের বিপক্ষে আমাদের আরও ঠান্ডা মাথায় খেলতে হবে।”
চার ম্যাচ শেষে লিভারপুল ও রিয়াল দু’দলই এখন নয় পয়েন্টে সমান। তবে আজকের জয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে লিভারপুল। দীর্ঘ ছয় ম্যাচে ছয় হারের পর টানা দ্বিতীয় জয়। যা তাদের মৌসুমে নতুন মোড় আনতে পারে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
খাগড়াছড়িতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে চলছে সনাতন ধর্মালম্বীদের রাস উৎসব। গত সোমবার সন্ধ্যায় ধর্মীয় আনুষ্ঠানিতার মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত পর্যন্ত।
দুর্গার পূজার এক মাস পর রাস পূজা করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। এই উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ির শ্রী শ্রী লক্ষী নারায়ণ মন্দিরে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। এই উৎসবকে ঘিরে মন্দিরের পাশে বসেছে মেলা। চট্টগ্রাম-ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দোকানিরা এসে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
আরো পড়ুন:
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
বাউফলে খেলার মাঠে মেলা বন্ধের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ
পুণ্যার্থী সাগর চক্রবর্তী, স্বপন দে ও বিপাশা বিশ্বাস জানান, খাগড়াছড়ি যেহেতু পাহাড়ি জেলা এবং বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস, সে জন্য এখানে ভিন্নতাও আছে। মেলায় প্রতিদিন ভিড় করছেন পাহাড়ি-বাঙালিরা। তারা সবার মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করবেন বলে জানান।
খাগড়াছড়ির লক্ষী নারায়ণ মন্দিরের পুরোহিত রতন চক্রবর্তী বলেন, “এই পূজা ও নামযজ্ঞের মধ্যে দিয়ে সবার জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করেন ভক্তরা।”
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “পূজা যেন সুন্দর ও সুস্থভাবে শেষ হয়, সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই উৎসব উপলক্ষে সবাই যেন নির্বিঘ্নে যাতে ধর্মীয় কার্যক্রম চালাতে পারেন সেজন্য পুলিশ টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে।”
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ