মাত্র দুইদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি বন্দর বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে ১৫ টাকা এবং খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মোকাম থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে হুহু করে বেড়েছে গেছে পেঁয়াজের দাম। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, দুইদিন আগেও যেখানে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয়েছিল ৬৫ টাকা কেজি, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ৭০ টাকার খুচরা দরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে।
পেঁয়াজ কিনতে আসা স্থানীয় ক্রেতা আখলিমা বেগম বলেন, “গত দুইদিন আগেও ৭০ টাকায় পেঁয়াজ কিনেছি, আজ এসে দেখি ৯০ টাকা।। প্রতিদিনই বাজারে গেলে নতুন দাম শুনতে হয়, এতে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
দিনমজুর মহব্বত আলী বলেন, “বাংলাদেশের আর নিয়ম! নিয়ম ছাড়াই চলছে সব। আমরা গরিব মানুষ, গরিবই থাকি। বাজারে আসলে কি থুয়ে কি কিনব, হিসাব মিলে না। কয়েকদিন আগে ৬০ টাকা করে পেঁয়াজ কিনলাম। আজ তা কিনতে হলো ৯০ টাকা কেজি দরে।”
হিলি বাজারে সবজি খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, “কয়েকদিন ধরে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান আমরা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি পাইকারি কিনে তা ৯০ টাকা কেজি হিসেবে খুচরা বিক্রি করছি।”
হিলি বাজারে পেঁয়াজ পাইকারি ব্যবসায়ী ফেরদৌস রহমান বলেন, “দেশে যেসব স্থানে পেঁয়াজের মোকাম রয়েছে, সেখানেই পেঁয়াজ আমদানি কমে গেছে। নতুন পেঁয়াজ উৎপাদন শুরু হলে দামটা অনেকটা নাগালের মধ্যে আসবে। আবার সরকার যদি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়, তাহলে বাজার দাম স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/মোসলেম/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলবাদী শক্তির স্থান এ দেশে হবে না: বাসদ
দেশে যাঁরা এখন ক্ষমতায় যেতে খুবই আগ্রহী, তাঁদের মধ্যে কিছু মৌলবাদী শক্তি রয়েছে। কিন্তু মৌলবাদী শক্তির স্থান এ দেশে হবে না। এ দেশের সাধারণ মানুষ গ্রহণ করবে না। পাকিস্তান অনেক চেষ্টা করেছে এই দেশের ভেতরে মৌলিবাদী শক্তি স্থাপন করার জন্য। কিন্তু তারা তা পারেনি।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হকের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলের নেতারা এ কথা বলেন।
সাধারণ মানুষের দল বা সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি এই সরকারের মধ্যে নেই বলে মন্তব্য করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশের সাধারণ মানুষ। এই সরকারের আমলে এক লাখ পোশাকশ্রমিকের চাকরি নেই। চা–দোকানগুলো বন্ধ। হোটেল–রেস্তোরাঁয় বেচাবিক্রি কমে গেছে। মানুষ কম খায়। খুবই কম খরচ করে। মানুষের আয়রোজগার কমে গেছে।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে নয়—এ কথা উল্লেখ করে হারুনুর রশিদ বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত, যাঁরা চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতেন, তাঁরা এখন বিপাকে পড়েছেন। অথচ মন্ত্রী-আমলারা ও উচ্চবিত্তরা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক কিংবা লন্ডনে যাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। তিনি বলেন, ভারতে ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে সরকার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
হারুনুর রশিদ আরও বলেন, রাজনীতিতে সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ ও জনসাধারণের ভূমিকা থাকা উচিত। অথচ এখন কিছু মৌলবাদী শক্তি কেবল ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তিনি আরও বলেন, মৌলবাদী শক্তির এই দেশে কোনো স্থান হবে না—এ দেশের সাধারণ মানুষ তা কখনোই গ্রহণ করবে না। পাকিস্তান অতীতে বহুবার এই মৌলবাদী শক্তিকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, লেখকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।