গাজীপুর নগরের হায়দরাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৭টি রুগ্‌ণ ঘোড়া ও ৫ মণ ঘোড়ার মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালান।

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর নগরের হায়দরাবাদ এলাকায় এক বছর ধরে ঘোড়ার মাংস বিক্রি হচ্ছে। পরে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তারপরও গোপনে শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ওই কাজ করছেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাত ১১টার দিকে সেখানে অভিযান চালানো হয়। একটি ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে ৩৭টি রুগ্‌ণ ঘোড়া ও ৫ মণ ঘোড়ার মাংস জব্দ করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, জবাই করে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যেই ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি। উদ্ধার করা ঘোড়া ও জব্দ করা ঘোড়ার মাংসগুলো স্থানীয় একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে। পরে সেগুলো জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কাছে হস্তার করা হবে।

গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের সার্জন হারুন রোমান জানান, ঘোড়াগুলোর অধিকাংশই রুগ্‌ণ এবং ঘোড়ার মাংসে টক্সিন রয়েছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ঘোড়ার মাংস ক্রয় ও খাওয়া থেকে সবাইকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলবাদী শক্তির স্থান এ দেশে হবে না: বাসদ

দেশে যাঁরা এখন ক্ষমতায় যেতে খুবই আগ্রহী, তাঁদের মধ্যে কিছু মৌলবাদী শক্তি রয়েছে। কিন্তু মৌলবাদী শক্তির স্থান এ দেশে হবে না। এ দেশের সাধারণ মানুষ গ্রহণ করবে না। পাকিস্তান অনেক চেষ্টা করেছে এই দেশের ভেতরে মৌলিবাদী শক্তি স্থাপন করার জন্য। কিন্তু তারা তা পারেনি।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হকের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলের নেতারা এ কথা বলেন।

সাধারণ মানুষের দল বা সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি এই সরকারের মধ্যে নেই বলে মন্তব্য করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশের সাধারণ মানুষ। এই সরকারের আমলে এক লাখ পোশাকশ্রমিকের চাকরি নেই। চা–দোকানগুলো বন্ধ। হোটেল–রেস্তোরাঁয় বেচাবিক্রি কমে গেছে। মানুষ কম খায়। খুবই কম খরচ করে। মানুষের আয়রোজগার কমে গেছে।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে নয়—এ কথা উল্লেখ করে হারুনুর রশিদ বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত, যাঁরা চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতেন, তাঁরা এখন বিপাকে পড়েছেন। অথচ মন্ত্রী-আমলারা ও উচ্চবিত্তরা চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক কিংবা লন্ডনে যাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। তিনি বলেন, ভারতে ভিসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে সরকার কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

হারুনুর রশিদ আরও বলেন, রাজনীতিতে সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ ও জনসাধারণের ভূমিকা থাকা উচিত। অথচ এখন কিছু মৌলবাদী শক্তি কেবল ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তিনি আরও বলেন, মৌলবাদী শক্তির এই দেশে কোনো স্থান হবে না—এ দেশের সাধারণ মানুষ তা কখনোই গ্রহণ করবে না। পাকিস্তান অতীতে বহুবার এই মৌলবাদী শক্তিকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি।

আলোচনা সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, লেখকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ