মেয়েকে ব্যবসায় আনতে শেয়ার উপহার দিচ্ছেন মা-বাবা
Published: 11th, April 2025 GMT
দুই ছেলের পর এবার মেয়েকেও উত্তরাধিকার হিসেবে পারিবারিক ব্যবসায় আনছেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি।
আনোয়ার উল আলম চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী শবনম শেহনাজ চৌধুরী মিলে তাঁদের একমাত্র মেয়ে সানজানা শেহনাজ চৌধুরীকে দুটি পারিবারিক কোম্পানির প্রায় ৬২ লাখ শেয়ার উপহার দিচ্ছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮ কোটি টাকা। কোম্পানিগুলো হচ্ছে আরগন ডেনিমস ও ইভিন্স টেক্সটাইল। দুটিই বস্ত্র খাতের কোম্পানি।
কোম্পানি দুটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় উদ্যোক্তাদের শেয়ার উপহার দেওয়ার তথ্য প্রকাশের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, আরগন ডেনিমসের চেয়ারম্যান শবনম শেহনাজ চৌধুরী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনোয়ার উল আলম চৌধুরী তাঁদের কন্যা সানজানা শেহনাজ চৌধুরীকে কোম্পানিটির প্রায় সোয়া ২৫ লাখ শেয়ার উপহার দিচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবারের বাজারমূল্য অনুযায়ী এসব শেয়ারের দাম ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার বেশি। আনোয়ার উল আলম ও শবনম শেহনাজ দম্পতি ইভেন্স টেক্সটাইলের প্রায় পৌনে ৩৭ লাখ শেয়ার মেয়েকে উপহার দিচ্ছেন। গতকালের বাজারমূল্য অনুযায়ী এই শেয়ারের দাম প্রায় ৪ কোটি টাকা।
কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মেয়েকে কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত করতেই মূলত বাবা–মা এই শেয়ার উপহার দিচ্ছেন। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিধান অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার না থাকলে কেউ পরিচালক হতে পারেন না। ন্যূনতম শেয়ারধারণের এই শর্ত পূরণ করে মেয়েকে পরিচালক পদে বসাতেই মেয়েকে এসব শেয়ার উপহার দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার উল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যবসা বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে সদ্য দেশে ফিরেছে আমাদের একমাত্র মেয়ে। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে তার এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে কোম্পানির ব্যবসা এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। সে জন্য তাকে দুই কোম্পানির পর্ষদে যুক্ত করার জন্য বিএসইসির শর্ত অনুযায়ী ন্যূনতম শেয়ার উপহার দেওয়া হচ্ছে, যাতে পর্ষদে যুক্ত হতে তার কোনো বাধা না থাকে।’
আনোয়ার উল আলম চৌধুরী আরও জানান, তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে আগেই পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। এখন উত্তরাধিকার হিসেবে মেয়েকে যুক্ত করা হচ্ছে।
এদিকে পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হয়ে এরই মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন আনোয়ার উল আলম চৌধুরীর দুই ছেলে শাহ আদিব চৌধুরী ও শাহ রায়ীদ চৌধুরী। আরগন ডেনিমস ও ইভিন্স টেক্সটাইলের ব্যবসার পাশাপাশি দুই ভাই মিলে পোশাকের স্থানীয় ব্র্যান্ড ‘নোয়ার’ গড়ে তুলেছেন। এরই মধ্যে নোয়ার স্থানীয় পোশাকের ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ ছাড়া জাপানি ব্র্যান্ড মিনিসোকে বাংলাদেশে এনেছেন এই দুই ভাই। তাঁরাই এখন বাংলাদেশে মিনিসো ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, পারিবারিক ব্যবসার বাইরে দুই ছেলে মিলে একটি দেশীয় ও একটি বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের ব্যবসা পরিচালনা করছে। এখন পারিবারিক ব্যবসায় মেয়েও যুক্ত হচ্ছে। তিন সন্তান উত্তরাধিকার হিসেবে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরবে। নতুন প্রজন্মই ব্যবসার নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এদিকে আরগন ডেনিমস ২০১৩ সালে ও ইভিন্স টেক্সটাইল ২০১৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর মধ্যে আরগন ডেনিমস ‘এ’ ও ইভিন্স টেক্সটাইল ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত। ঢাকার বাজারে গতকাল দুই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আরগন ডেনিমসের প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪০ পয়সা বা আড়াই শতাংশ বেড়ে ১৬ টাকা ৪০ পয়সায় ও ইভিন্স টেক্সটাইলের শেয়ারের দাম ৫০ পয়সা বা প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ য় র উপহ র দ চ ছ ন প র ব র ক ব যবস য় শ হন জ চ ধ র ব যবস র অন য য় গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানের রাস্তায় রাস্তায় ‘হিটেড বেঞ্চ’
জাপানের টোকিও, সাপোরো এবং ওসাকার মতো বড় বড় শহরগুলোর রাস্তায় হিটেড বেঞ্চ বসানো হয়েছে। তীব্র শীতের রাতে গৃহহীন মানুষদের উষ্ণতা এবং স্বস্তি দেওয়াই এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।এই বেঞ্চগুলো সৌরশক্তি চালিত হয়ে থাকে।
হিটেড বেঞ্জগুলো দিনের বেলায় সূর্যের আলো থেকে তাপ সংগ্রহ করে বিশেষ "ফেজ-চেঞ্জ মেটেরিয়াল" ব্যবহার করে তা সংরক্ষণ করে। এরপর সংরক্ষিত তাপ রাতে ধীরে ধীরে নির্গত হয় এবং প্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত উষ্ণতা সরবরাহ করতে পারে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং সাশ্রয়ী।
আরো পড়ুন:
কারা বেশি কাঁদেন?
যেসব কারণে মানুষ স্বর্ণ জমায়
হিটেড বেঞ্চের জন্য কোনো অতিরিক্ত জ্বালানী বা বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। এই মানবিক উদ্যোগটি জাপান সরকারের একটি সহানুভূতিশীল পদক্ষেপ, যা নগর পরিকল্পনায় উদ্ভাবন এবং সামাজিক কল্যাণের এক চমৎকার উদাহরণ বলছেন দেশটির নাগরিকেরা।
ঢাকা/লিপি