পেট্রাপোল কাস্টমসের সফটওয়্যার বন্ধ, বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় ৯৩৭ ট্রাক
Published: 4th, May 2025 GMT
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসের ডি জি সিস্টেম লিংক সফটওয়্যার সেবা সাত দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ঢিমেতালে চলছে আমদানি-রপ্তানি। এতে পেট্রাপোল বন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট দেখা দিয়েছে। বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ৯৩৭ পণ্যবাহী ট্রাক।
ভারতে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্ট স্ট্যাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তি বলেন, পেট্রাপোল কাস্টমস ও বন্দরে লিংক সার্ভিসটি টাটা কোম্পানি দিয়ে থাকে। গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে ঝড়ের পর লিংক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার পর্যন্ত ঠিক হয়নি। টাটা কোম্পানির কলকাতা অফিস কোনো সমস্যা ধরতে পারেনি। এখন দিল্লির ডি জি সিস্টেম বিষয়টি মনিটরিং করছে। বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় পেট্রাপোল বন্দরে ৯৩৭ ভারতীয় পণ্যবোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। কাস্টম ও বন্দর কর্তৃপক্ষ অনলাইন সিস্টেমের বিকল্প হিসেবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্যাবে ওয়াইফাই সংযোগ দিয়ে কাঁচামাল পণ্য ও আগের শিপিং বিলের কাজ সম্পন্ন করা পণ্য ঢিমেতালে আমদানি-রপ্তানি করছে। কবে সমাধান হবে কেউ বলছে না।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্ট্যাফ অ্যাসোসিয়েশনের কার্গো সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাকিব বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসে লিংক না থাকায় আমদানি-রপ্তানিতে বিঘ্ন ঘটছে। আগে প্রতিদিন ৫০০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি হতো, কিন্তু এখন আমদানি হচ্ছে খুবই কম। আজ রোবার দুপুর ২টা পর্যন্ত পণ্য আমদানি হয়েছে ২ ট্রাক। আর রপ্তানি হয়েছে ৯২ ট্রাক পণ্য।
তিনি আরও বলেন, ২৮ এপ্রিল পণ্য আমদানি হয়েছে ৩০২ ট্রাক ও রপ্তানি হয়েছে ১৮৬ ট্রাক, ২৯ এপ্রিল আমদানি হয়েছে ৪৮ ট্রাক ও রপ্তানি হয়েছে ২৪০ ট্রাক, ৩০ এপ্রিল আমদানি ৪৪৯ ট্রাক ও রপ্তানি ১৮৭ ট্রাক। ৩ মে আমদানি হয়েছে ১৫০ ট্রাক পণ্য ও রপ্তানি হয়েছে ২১৩ ট্রাক পণ্য। এভাবে আমদানি-রপ্তানি চললে বাংলাদেশের অনেক শিল্প কলকারখানায় কাঁচা মাল সংকট দেখা দেবে।
বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব অফিসার আবু তাহের বলেন, পার্শ্ববর্তী পেট্রাপোল বন্দরে ইন্টারনেট লিংক না থাকায় তারা অনলাইন সিস্টেমে কাজ করতে পারছে না। অনলাইনের বিকল্প হিসেবে ট্যাবে ওয়াইফাই কানেকশন দিয়ে নামমাত্র আমদানি-রপ্তানি চালু রেখেছে পেট্রাপোল কাস্টমস।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ল ক স টমস আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন নোট চিনছে না টাকা জমার মেশিন
ঈদের আগে নতুন ডিজাইনের ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে টাকা জমা দেওয়ার জন্য সিডিএম, সিআরএম বা মেট্রোরেলের টিকিট বিক্রির মেশিন নতুন নোট নিচ্ছে না। মূলত নতুন ডিজাইনের নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এসব মেশিনের সফটওয়্যার এখনও ‘আপডেট’ না করায় এমন হচ্ছে। অবশ্য ব্যাপকভাবে নতুন নোট এখনও বাজারে আসেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শাখার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম) এবং ক্যাশ রিসাইক্লেনিং মেশিনে (সিআরএম) টাকা জমা দেওয়া যায়। এটিএম বুথের আদলে এসব বুথ স্থাপন করা হয়। নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে গ্রাহক নিজেই এই মেশিনের সাহায্যে তাঁর অ্যাকাউন্টে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট জমা দিতে পারেন। এ জন্য সফটওয়্যারে নোট এবং নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। মেট্রোরেলের টিকিট কাউন্টারে স্থাপিত বুথেও একই উপায়ে টাকা চেনানো হয়। সে অনুযায়ী এসব মেশিনে লেনদেন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ঈদের আগে ১ জুন নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়। এর পর ৪ থেকে ১৪ জুন টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ ছিল। তিন ধরনের নোট মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাজারে ছাড়া হয়েছে ৬০০ কোটি টাকার কম। এসব কারণে কোনো কোনো ব্যাংক হয়তো তাদের নিজেদের সফটওয়্যার প্রোগ্রামে নতুন নোট এখনও অন্তর্ভুক্ত করেনি । তবে এটা কঠিন কোনো বিষয় না। ব্যাংকগুলো চাইলেই বুথের ভেন্ডাররা যা করতে পারেন। দুয়েকটি ব্যাংক এটা করলেও বেশির ভাগ ব্যাংক এখনও করেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, যেসব ব্যাংক এখনও নতুন নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বিষয়ে সিস্টেম হালনাগাদ করেনি, শিগগিরই তারা করবে। আর মেট্রোরেলের বিষয়টি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দেখবে।
সব নোটই এতদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যুক্ত ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সব নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগামী আগস্টের মধ্যে সব ধরনের নতুন নোট বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন ডিজাইনের নোটের মধ্যে ২০০, ১০ ও ৫ টাকায় স্থান পেয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের আঁকা গ্রাফিতি। সব নোটেই ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ স্থান পেয়েছে।
ডিজাইন চূড়ান্ত করা থেকে শুরু করে একটি নোট বাজারে আনতে কয়েক ধাপ অতিক্রম করতে হয়। টাকার কালি, কাগজ, নিরাপত্তা সুতাসহ সবই বাইরে থেকে আনতে হয়। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আনতে সাধারণভাবে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। তবে এবার বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের আগে তিন ধরনের নোট বাজারে আনা হয়।
জানা গেছে, নতুন ডিজাইনের সব নোটের কাগজ এখনও দেশে আসেনি। আবার আগের ডিজাইনের নতুন নোট এ মুহূর্তে বাজারে না ছাড়ার সিদ্ধান্ত ছিল। যে কারণে ঈদের আগে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়।