বাজেট–বৈষম্যের প্রতিবাদে জবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 7th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বাজেট বরাদ্দে ধারাবাহিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলটি কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো—দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী দুটি হলের নির্মাণ কাজ শুরু করা; শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ আবাসনসুবিধার ব্যবস্থা করা; জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন পরপর জানানো।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘প্রহসনের বাজেট মানি না, মানবো না’, ‘বৈষম্যের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘জবিয়ানদের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রতিবছর ইউজিসির বাজেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেওয়া হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চরম অবহেলার শিকার হচ্ছে। তারা অবিলম্বে এ বৈষম্য বন্ধ এবং জবির জন্য উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবহেলার শিকার হয়ে আসছে। শুধু একটি নামধারী বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড় করানো হয়েছে, সুবিধা নেই বললেই চলে।’
পূর্ববর্তী সরকার হোক বা ইউজিসি—কেউই শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে এই সরকার গড়েছি, কিন্তু তারা কি সেই পুরোনো পথেই হাঁটছে? ঢাবির জন্য বরাদ্দ ৩০০–৪০০ কোটি, আর জবির জন্য নামমাত্র বাজেট! আমরা আর বসে থাকব না। প্রয়োজনে ইউজিসি ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করব।’
বিভিন্ন আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই সাহসী ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, ‘গুলির মুখেও আমরা পিছু হটিনি। অথচ ৫ আগস্টের পর দেখা গেছে, বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে ঢাবি, চবি ও অন্যান্য নামী বিশ্ববিদ্যালয়।’
কিশোর সাম্য আরও বলেন, ‘আমরা কি মানুষ না? তারা এসি রুমে বসে আয়েশ করবে, আর জবি শিক্ষার্থীরা মেসে না খেয়ে থাকবে? আমরা তো চাকরি চাইনি, এসিও চাইনি। আমরা আমাদের যোগ্যতা দিয়েই জীবন গড়ব; কিন্তু আমাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দিন। আমাদের আর ঠকাবেন না। পাগলদের খেপাবেন না। কারণ, পাগল সামলানো আপনাদের সাধ্যের বাইরে।’
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার অঙ্গীকার করে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের সঙ্গে বাজেটের যে বৈষম্য, তা কোনোভাবেই মানা যায় না। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা আগামীকাল সকাল ৯টায় ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর দ দ আম দ র ইউজ স
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াই ঘণ্টা দেরিতে শুরুর পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি হয়ে গেল প্রস্তুতি ম্যাচ
কাতার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্পষ্ট জানিয়েছিল—আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনটি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি খেলতে যাচ্ছে তারা। যার অর্থ দাঁড়ায়, টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে কাতারের প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ এটি। কিন্তু খেলার সময় ঘনিয়ে আসতেই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বলে দিল, আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি নয়, এটি প্রস্তুতি ম্যাচের সিরিজ।
আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি না প্রস্তুতি ম্যাচ, এই বিভ্রান্তির মধ্যেই পেরিয়ে যায় খেলা শুরুর নির্ধারিত সময়। আড়াই ঘণ্টা পর আফগানিস্তান ও কাতারের খেলোয়াড়েরা মাঠে নামলে ধারাভাষ্যকাররা বলেন, এটি ‘প্রীতি ম্যাচ’। অন্যদিকে আফগান বোর্ডের মতে, এটি এখনো ‘প্রস্তুতি ম্যাচ’ই। ম্যাচের মর্যাদা ঘিরে এই বিভ্রান্তিকর ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে।
কাতারের দোহায় ওয়েস্ট এন্ড পার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা শুরুর কথা ছিল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায়। খেলা শুরুর আগপর্যন্ত কাতার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তাদের এক্সে ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের সূচি প্রকাশ করে এটিকে ‘পুরুষদের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির দ্বিপক্ষীয় সিরিজ’ হিসেবে প্রচার করে আসছিল। সিরিজের সূচিতে ৮, ৯ ও ১১ নভেম্বর তিনটি ম্যাচের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ম্যাচ শুরু হওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে দুই দলের খেলোয়াড়দের স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেও ‘আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি’র কথা উল্লেখ করা হয়।
তবে এরপর আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি) টুইট করে জানায়, সিরিজটিতে খেলবে তাদের ‘এ’ দল, অর্থাৎ আফগান আবদালিয়ান। খেলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে পোস্ট করা ওই টুইটে বলা হয় ‘আফগান আবদালিয়ান দোহায় কাতারের বিপক্ষে তিনটি টি–টোয়েন্টি অনুশীলন ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত, যা রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপ ২০২৫–এর প্রস্তুতির অংশ। এই অনুশীলন ম্যাচ সিরিজ আজ রাতে দোহায় শুরু হবে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ যথাক্রমে ৯ ও ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।’
এই বিবৃতির পর ম্যাচগুলো আসলেই টি–টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক মর্যাদা বহন করবে কি না, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বলে রাখা ভালো, কাতার–আফগানিস্তান সিরিজের শেষ ম্যাচের তিন দিন পর কাতারেই রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার কথা, যেখানে খেলবে আফগানিস্তানের ‘এ’ দল।
বিলম্বিত সম্প্রচারে বিভ্রান্ত দর্শকেরাম্যাচটি আইসিসি ওয়েবসাইটে ‘টি–টোয়েন্টি ইন্টারন্যাশনাল’ হিসেবেই সূচি তালিকায় ছিল। তবে খেলা শুরুর আগে সূচি থেকে সেটি সরিয়ে ফেলা হয়। যদিও ম্যাচের পেজটি তখনো সক্রিয় ছিল। সেই পেজে ম্যাচের স্ট্যাটাসে লেখা ছিল ‘বাতিল’।
ইউটিউবে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় লাইভ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুই ঘণ্টার বেশি সময় সম্প্রচার শুরু হয়নি। গুগলের মোবাইল অ্যালার্টে ম্যাচটিকে ‘বাতিল’ বলা হয়, যা সম্ভবত আইসিসি ওয়েবসাইটের তথ্যের সঙ্গে মিল রেখেই করা হয়।
শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সময় রাত আটটায় খেলা শুরু হয়। কাতার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ইউটিউব চ্যানেলে তখনো লেখা ছিল—‘পুরুষদের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ’। তবে ধারাভাষ্যকার শুরুতেই বলেন, ‘কাতার–আফগানিস্তান প্রীতি ম্যাচে স্বাগত।’
এ বিষয়ে উইজডেন ডটকম আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, ম্যাচগুলো আসলে দুটি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি ম্যাচ, যেগুলোর কোনো আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টির মর্যাদা নেই। খেলা শুরুর সময় আড়াই ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার পেছনে ‘প্রযুক্তিগত সমস্যার’ কথা জানায় আফগান বোর্ড।
পরে দারউইশ রাসুলীর নেতৃত্বে আফগানিস্তান ‘এ’ প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে, জবাবে কাতার অলআউট হয় ১০৮ রানে।