বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বাজেট বরাদ্দে ধারাবাহিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলটি কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো—দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী দুটি হলের নির্মাণ কাজ শুরু করা; শিক্ষার্থীদের ৭০ শতাংশ আবাসনসুবিধার ব্যবস্থা করা; জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি প্রতি ১৫ দিন পরপর জানানো।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘প্রহসনের বাজেট মানি না, মানবো না’, ‘বৈষম্যের গদিতে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘জবিয়ানদের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রতিবছর ইউজিসির বাজেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেওয়া হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চরম অবহেলার শিকার হচ্ছে। তারা অবিলম্বে এ বৈষম্য বন্ধ এবং জবির জন্য উপযুক্ত বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিতের দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবহেলার শিকার হয়ে আসছে। শুধু একটি নামধারী বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড় করানো হয়েছে, সুবিধা নেই বললেই চলে।’

পূর্ববর্তী সরকার হোক বা ইউজিসি—কেউই শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়ে এই সরকার গড়েছি, কিন্তু তারা কি সেই পুরোনো পথেই হাঁটছে? ঢাবির জন্য বরাদ্দ ৩০০–৪০০ কোটি, আর জবির জন্য নামমাত্র বাজেট! আমরা আর বসে থাকব না। প্রয়োজনে ইউজিসি ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করব।’

বিভিন্ন আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই সাহসী ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, ‘গুলির মুখেও আমরা পিছু হটিনি। অথচ ৫ আগস্টের পর দেখা গেছে, বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে ঢাবি, চবি ও অন্যান্য নামী বিশ্ববিদ্যালয়।’

কিশোর সাম্য আরও বলেন, ‘আমরা কি মানুষ না? তারা এসি রুমে বসে আয়েশ করবে, আর জবি শিক্ষার্থীরা মেসে না খেয়ে থাকবে? আমরা তো চাকরি চাইনি, এসিও চাইনি। আমরা আমাদের যোগ্যতা দিয়েই জীবন গড়ব; কিন্তু আমাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দিন। আমাদের আর ঠকাবেন না। পাগলদের খেপাবেন না। কারণ, পাগল সামলানো আপনাদের সাধ্যের বাইরে।’

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার অঙ্গীকার করে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের সঙ্গে বাজেটের যে বৈষম্য, তা কোনোভাবেই মানা যায় না। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা আগামীকাল সকাল ৯টায় ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর দ দ আম দ র ইউজ স

এছাড়াও পড়ুন:

মুখে বললে লেখা হবে কাগজে

ভারতের কেরালা রাজ্যের এক শিক্ষার্থী দারুণ একটি যন্ত্র বানিয়েছেন। যন্ত্রটি মানুষের মুখের কথা শুনে কাগজে লিখে দিতে পারে। গত মে মাসে অনুষ্ঠিত এক প্রদর্শনীতে যন্ত্রটি মানুষের সামনে আনা হয়। ‘টক-টু-রাইট’ নামের এই যন্ত্র মূলত শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁরা কারও সাহায্য ছাড়াই নিজের কথা সহজে লিখে প্রকাশ করতে পারবেন।

কেরালার ওই শিক্ষার্থীর নাম অজয় এইচ। তিনি লিংকডইন পোস্টে যন্ত্রটি সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, যন্ত্রটি আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) ভয়েস-টু-পেন সিস্টেম, যা কথাকে কলমের মাধ্যমে হাতের লেখায় রূপান্তর করে।

অজয় ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী। তিনি জানিয়েছেন, র‍্যাসপবেরি পাই, আরডুইনো ও পাইথন ব্যবহার করে এ প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্দ্বী ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারে, এমনভাবে যন্ত্রটি নকশা করা হয়েছে।

অজয় লিখেছেন, ‘এই প্ল্যাটফর্ম আমাদের দেখিয়েছে কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এমবেডেড সিস্টেম এবং সামাজিক প্রভাবের জন্য একটি স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি মিলিয়ে সহজলভ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রযুক্তি তৈরি করা যায়।’

অসাধারণ এ কাজের জন্য অজয় তাঁর দলের অন্য সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অপর্ণা হরি, রুবাক হরি নায়ার ও আকাশ জি নায়ার; যাঁদের নিষ্ঠা, সৃজনশীলতা আর একসঙ্গে কাজ করার মানসিকতাই এই উদ্ভাবনকে সফল করেছে।

এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যবহারকারীরা প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘অসাধারণ আইডিয়া! আপনি যদি এটাকে আরও উন্নত করেন, অনেক মানুষের উপকারে আসবে। দারুণ কাজ!’

আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘সত্যি, বিষয়টি অনেক ভালো লেগেছে। অভিনন্দন ও ভবিষ্যতের কাজের জন্য শুভকামনা।’

ভার্জিনিয়া টেকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল প্রকৌশলী এমন একটি রোবোটিক পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যেটি চলাফেরায় অক্ষম কিংবা দৈনন্দিন কাজ করতে অসুবিধা হয়, এমন মানুষদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ