Samakal:
2025-05-09@11:06:31 GMT

জবিতে উপাচার্য ভবনে তালা

Published: 9th, May 2025 GMT

জবিতে উপাচার্য ভবনে তালা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাজেট বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে গতকাল উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। বিক্ষোভের একপর্যায়ে উপাচার্য ভবনে তালা লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান ও জকসু নির্বাচনের দাবিতে গণভোটের আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। 

চার দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুরে উপাচার্য ভবনে তালা লাগিয়ে দেন তারা। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ভবনেই ছিলেন এবং তিনি দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে যান। কর্মসূচি শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ তোলেন, যুগ যুগ ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যের শিকার। প্রশাসনের উচিত ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। প্রশাসন দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, দাবি আদায়ে আগামী সপ্তাহে লংমার্চ করা হবে। 
গত মঙ্গলবার চার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। সেগুলো হলো– ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বাড়ানো এবং অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা; দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং পুরান ঢাকায় ড.

হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ আগামী ১০ মের মধ্যে শুরু করা; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ১৫ দিন অন্তর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও হল নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মুক্তমঞ্চে ব্রিফ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ; আগামী ১৫ মের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, দাবিগুলো যৌক্তিক। বাজেটসহ শিক্ষার্থীদের সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন তিনিও।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মির্জাপুরে চুরি যাওয়া গাভি ফেরত দিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় চুরির পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া বাছুরসহ গাভি ফিরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গাভির মালিক ফজলু শেখের ভাগনে উজ্জ্বল সিকদার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী হাসান বলেন, আদালতের মাধ্যমে গাভি ফেরত নিতে মালিককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি কী করেছেন তাঁর জানা নেই।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের ফজলু শেখের গোয়ালঘর থেকে তাঁর বাছুরসহ একটি গাভি চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার কদিমধল্যা এলাকা থেকে আল-আমিন (৩৫) নামের এক চোরকে আটক করে। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মালতি গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকায়। এ সময় পুলিশ তাঁর হেফাজতে থাকা একটি পিকআপ থেকে বাছুরসহ গাভিটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে ফজলু শেখ চুরি যাওয়া গাভি ও বাছুর নিজের বলে শনাক্ত করলে পুলিশ তাঁর করা অভিযোগে আটক আল আমিনকে গ্রেপ্তার দেখায়।

এদিকে এসআই আলী হাসানের কাছে গাভি ও বাছুর ফেরত দিতে অনুরোধ করেন গাভির মালিক ফজলু শেখ ও তাঁর স্বজনেরা। কিন্তু নানা অজুহাতে এসআই গড়িমসি করছিলেন বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের মাধ্যমে গতকাল দুপুরে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় উজ্জ্বল সিকদারের সামনে এক বিএনপি নেতা তাঁর মুঠোফোন দিয়ে আলী হাসানের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় এসআই আলী হাসান ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন ওই বিএনপি নেতার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি (আলী হাসান) দাবিতে অনড় থাকেন।

উজ্জ্বল সিকদার বলেন, ‘আমরা তাঁর (আলী হাসান) কাছে অনুরোধ করছিলাম, গরুটা দিয়া দেন। তিন দিন ধইর‍্যা না খাইয়া রইছে। বাড়িতে নিয়ে গোসল করাইগ্যা, খাওয়াইগ্যা। দুধ না পানাইলে গাইয়ের বান নষ্ট অয়্যা যাইব। উনি ঘারই পাতে না। ওনি ৫০ হাজার টাকা চায়। আমি কইছি গাই আপনি রাইখা দেন। বাছুর আমারে বাগি (বর্গা) দেন। ওই কয় ট্যাহা দিলে অহনই থানায় থিক্যা গরু দিয়া দিব। না দিলে থানায় থিকা দিব না। কোর্টে যাওন লাগব।’ তিনি বলেন, ‘দুই বিএনপি নেতার উপস্থিতিতে লাউড স্পিকার দিয়ে ফোনে কথা বলার সময়ও তিনি টাকা চাইছেন। আমরা কথা বলার সময় তাঁর কথা শুনছি।’

অভিযোগের বিষয়ে এসআই আলী হাসান বলেন, ‘ওনাদের বলে দিছি। ওনারা কোর্টের মাধ্যমে আবেদন করবে। আমাদের গরু অমুক মামলায় উদ্ধার হইছে, আমরা ফেরত চাই। কোর্ট তখন আমাকে লিখবে মালিকানা যাচাই করে প্রতিবেদন দিন। ওইটা আসলে আমি প্রতিবেদন দিব। ওইটা কোর্টে যাবে। তখন কোর্ট গরু ফেরত দিতে বলবে।’ ঘুষ দাবির বিষয়ে বলেন, ‘কার কাছে টাকা চাইছি, তাঁকে আমার সামনে আসতে বলেন।’

তবে মধ্যস্থতাকারী স্থানীয় ভাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন ও ভাতগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বজলুর রহমান বলেন, গাভি ফেরত দিতে পুলিশ ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল। এর মধ্যে তাঁরা (উজ্জ্বল সিকদাররা) ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের ওই কর্মকর্তা মানেননি।

জানতে চাইলে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গরুর মালিকসহ আত্মীয়দের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এখানে কারও টাকা চাওয়ার কথা না। কেউ চাইলে তাঁরা তাঁর (ওসি) সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে ওসি বলেন, তিনি টাকা চাওয়ার বিষয়ে এসআই আলী হাসানকে জিজ্ঞাসা করছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, গরু ছাড়ার বিষয়ে কারও কাছে টাকা চাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ