চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল চত্বরে পণ্যবাহী একটি কনটেইনারে হঠাৎ আগুন লাগে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে এই আগুন নেভানো হয়। এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।

বন্দর ও কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর এম ইয়োকোহামা জাহাজে সিঙ্গাপুর থেকে কনটেইনারটি বন্দরে আনা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর কনটেইনারটি বন্দর চত্বরে রাখা হয়। গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে কনটেইনারটি থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। তাৎক্ষণিকভাবে বন্দরের ফায়ার সার্ভিসসহ নিরাপত্তাকর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বন্দরসচিব মো.

ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, কনটেইনারটি থেকে ধোঁয়া বের হওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানা গেছে, প্রায় ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারটিতে মুঠোফোন, মোটরসাইকেল ও কম্পিউটারের সরঞ্জাম রয়েছে। এতে মুঠোফোনের ব্যাটারিও ছিল। কনটেইনারটি খালাসের জন্য এখনো বিল অব এন্ট্রি জমা হয়নি।

জানতে চাইলে কাস্টমসের উপকমিশনার এইচ এম কবির প্রথম আলোকে বলেন, ধোঁয়া দেখার পর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় কনটেইনারটির বেশির ভাগ পণ্য বের করে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। শুধু কিছুসংখ্যক কার্টন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্‌যাপন

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্‌যাপিত হবে জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়। 

যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে। 

দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ