শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা রাশিয়ার
Published: 18th, May 2025 GMT
কমপক্ষে ২৭৩টি ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে এটিই সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা।
আজ রবিবার রাশিয়ার এই হামলায় কিয়েভে একজন নারী নিহত ও কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
রবিবার ভোরে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেছে, শুক্রবার শান্তি আলোচনার পর মস্কো হামলা জোরদার করেছে।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনকে ফোন করবেন ট্রাম্প
ইউক্রেনে বেসামরিক বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৯
স্থানীয় সময় সকাল ৮ টার দিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ২৭৩টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে, যা মধ্যে প্রধানত কেন্দ্রীয় কিয়েভ অঞ্চল এবং দেশটির পূর্বে দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চল লক্ষ্য করে।
বিমান বাহিনী বলছে, এটি তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার হামলার তৃতীয় বছরের শুরুতে, মস্কো তৎকালীন রেকর্ড ২৬৭টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছিল।
যুদ্ধের তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি বৈঠকে বসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল। তবে ওই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি অর্জন হয়নি। ১০০ মিনিটের বৈঠকে কেবল উভয় পক্ষের ১ হাজার যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের চুক্তি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামীকাল সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে ফোনে কথা বলবেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ন্যাটোর কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রবিবার রাতভর চলমান রাশিয়ান ড্রোন হামলায় রাজধানী কিয়েভ অঞ্চলে ২৮ বছর বয়সী এক নারী নিহত এবং ৪ বছর বয়সী একটি শিশুসহ কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছে, কিয়েভ ও এর আশেপাশের অঞ্চল এবং ইউক্রেনের পূর্ব অংশে ৯ ঘণ্টা ধরে হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এরপর স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ৯ টার দিকে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোকে আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বেশ কয়েকবার সক্রিয় করা হয়েছিল।
ইউক্রেনের সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিসইনফরমেশনের প্রধান আন্দ্রি কোভালেনকো রবিবারের হামলা সম্পর্কে টেলিগ্রামে বলেন, “এটি একটি কঠিন রাত ছিল। রাশিয়ানরা সবসময় আলোচনায় সবাইকে ভয় দেখানোর জন্য যুদ্ধ ও আক্রমণ ব্যবহার করেছে।”
টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, “রাতভর ৮৮টি ড্রোন ধ্বংস করেছে বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট। এই হামলায় ১২৮টি সিমুলেটর ড্রোনও ছিল, যেগুলো কোনো আঘাত না করেই হারিয়ে গেছে।”
কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, কিয়েভ শহরের দক্ষিণে ওবুখিভ জেলায় আহত সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র ইউক র ন য রব ব র
এছাড়াও পড়ুন:
মার্কিন ‘আগ্রাসনের’ হুমকি, জরুরি অবস্থা জারি করতে প্রস্তুত ভেনেজু
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আগ্রাসনের’ হুমকির প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে প্রস্তুত।
সাম্প্রতিক সময়ে ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সোমবার এ মন্তব্য করেন। খবর আলজাজিরার।
আরো পড়ুন:
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করল ওরেগন
যুক্তরাষ্ট্রে গির্জায় বন্দুক হামলা, নিহত ৪
মাদুরো এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আমেরিকান সাম্রাজ্য ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা চালালে, যাতে আমাদের জনগণ এবং দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়, সে লক্ষ্যে সংবিধানের আলোকে একটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে আজ আমরা পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”
এর আগে ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ বিদেশি কূটনীতিকদের বলেন, “প্রেসিডেন্ট মাদুরো একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের মাতৃভূমিকে আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখায়, তবে এই ডিক্রি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ‘বিশেষ ক্ষমতা’ প্রদান করবে।”
এই ডিক্রি মাদুরোকে সারা দেশে সৈন্য মোতায়েনের অনুমতি দেবে এবং জনসেবা ও তেল শিল্পের ওপর সামরিক কর্তৃত্ব দেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভেনেজুয়েলর উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটটি যুদ্ধজাহাজ, একটি পরমাণু শক্তি চালিত সাবমেরিন ও এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই অভিযানকে মাদক পাচার মোকাবিলার একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দাবি করলেও, বিশ্লেষকদের মতে এটি মাদুরোর ওপর চাপ তৈরির কৌশল।
সাম্প্রতিক সময়ে ভেনেজুয়েলার আন্তর্জাতিক জলসীমায় কমপক্ষে তিনটি নৌযানে বোমা হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী। দাবি করেছে, সবগুলো নৌকা ‘অবৈধ মাদক পাচার করছিল’।
এসব হামলায় ভেনেজুয়েলার কমপক্ষে ১৭ নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভেনেজুয়েলা বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। মাদুরোর নেতৃত্বধীন ভেনেজুয়েলা সরকার দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ‘সাম্রাজ্যবাদের’ বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আসছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, বিদ্যমান পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ‘ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে মাদক পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তু’ করার লক্ষ্যে বিমান হামলার পরিকল্পনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারে ভেনেজুয়েলার বড় ভূমিকা থাকার মার্কিন দাবি প্রত্যাখ্যান করে মাদুরো বলেছেন, তিনি চান দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘ঐতিহাসিক এবং শান্তিপূর্ণ’ হোক।
ঢাকা/ফিরোজ