কমপক্ষে ২৭৩টি ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে এটিই সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা।

আজ রবিবার রাশিয়ার এই হামলায় কিয়েভে একজন নারী নিহত ও কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

রবিবার ভোরে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেছে, শুক্রবার শান্তি আলোচনার পর মস্কো হামলা জোরদার করেছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনকে ফোন করবেন ট্রাম্প

ইউক্রেনে বেসামরিক বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৯

স্থানীয় সময় সকাল ৮ টার দিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ২৭৩টি ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে, যা মধ্যে প্রধানত কেন্দ্রীয় কিয়েভ অঞ্চল এবং দেশটির পূর্বে দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চল লক্ষ্য করে।

বিমান বাহিনী বলছে, এটি তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, রাশিয়ার ‍পূর্ণমাত্রার হামলার তৃতীয় বছরের শুরুতে, মস্কো তৎকালীন রেকর্ড ২৬৭টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছিল।

যুদ্ধের তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সরাসরি বৈঠকে বসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল। তবে ওই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি অর্জন হয়নি। ১০০ মিনিটের বৈঠকে কেবল উভয় পক্ষের ১ হাজার যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের চুক্তি হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামীকাল সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে ফোনে কথা বলবেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ন্যাটোর কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন।

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রবিবার রাতভর চলমান রাশিয়ান ড্রোন হামলায় রাজধানী কিয়েভ অঞ্চলে ২৮ বছর বয়সী এক নারী নিহত এবং ৪ বছর বয়সী একটি শিশুসহ কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছে, কিয়েভ ও এর আশেপাশের অঞ্চল এবং ইউক্রেনের পূর্ব অংশে ৯ ঘণ্টা ধরে হামলার সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এরপর স্থানীয় সময় রবিবার সকাল ৯ টার দিকে সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়। বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোকে আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বেশ কয়েকবার সক্রিয় করা হয়েছিল।

ইউক্রেনের সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিসইনফরমেশনের প্রধান আন্দ্রি কোভালেনকো রবিবারের হামলা সম্পর্কে টেলিগ্রামে বলেন, “এটি একটি কঠিন রাত ছিল। রাশিয়ানরা সবসময় আলোচনায় সবাইকে ভয় দেখানোর জন্য যুদ্ধ ও আক্রমণ ব্যবহার করেছে।”

টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, “রাতভর ৮৮টি ড্রোন ধ্বংস করেছে বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট। এই হামলায় ১২৮টি সিমুলেটর ড্রোনও ছিল, যেগুলো কোনো আঘাত না করেই হারিয়ে গেছে।”

কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, কিয়েভ শহরের দক্ষিণে ওবুখিভ জেলায় আহত সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র ইউক র ন য রব ব র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার

ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা একদিনে কমপক্ষে আরও ১৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়িয়ে গেল। এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা ও বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

আল জাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বেশ কিছু চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি মেডিকেল ক্লিনিকে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই হামলায় আল-তাওবাহ ক্লিনিকের ওপরের তলায় রোগীরা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছেন এবং নিহত ১৩ জনের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৫৩ হাজার ১০ জনে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি আরও ১৫২ জন আহত হয়েছেন। যার ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে। 

দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৮ হাজার আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার