পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল করার তাৎপর্য কী
Published: 22nd, May 2025 GMT
পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা গত মঙ্গলবার সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেছে। ভারতের সঙ্গে দেশটির সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের পর নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।
এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সংঘর্ষ দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশকে তাদের পঞ্চম যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতে চার দিন ধরে একে অপরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় তারা।
শেষমেশ ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত এক যুদ্ধবিরতি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ দুটিকে পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর কিনারা থেকে ফিরিয়ে আনে। এ ঘোষণার আগে ওই দিনই ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ উভয়ই নিজেদের বিজয় দাবি করেছে এ সংঘর্ষে। পাকিস্তান সরকার এই সংঘাতের সঙ্গে আসিম মুনিরকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সরাসরি যুক্ত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আসিম মুনিরের উজ্জ্বল সামরিক নেতৃত্ব, সাহস ও বীরত্বের স্বীকৃতি এটি। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। মন্ত্রিসভা জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।’এমন প্রেক্ষাপটে জেনারেল মুনিরকে কেন পদোন্নতি দেওয়া হলো, ফিল্ড মার্শাল পদে কী বোঝায় এবং এই পদোন্নতি পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের ভবিষ্যৎ ভূমিকার ক্ষেত্রেই–বা কী বার্তা দেয়—এমন নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
মুনিরকে কেন ফিল্ড মার্শাল করা হলো
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুনিরকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে তাঁর ‘দৃষ্টান্তমূলক সাহস ও দৃঢ়তার’ সঙ্গে সেনাবাহিনী পরিচালনা করা এবং ভারতের আক্রমণ প্রতিরোধে কৌশল প্রণয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আসিম মুনিরের উজ্জ্বল সামরিক নেতৃত্ব, সাহস ও বীরত্বের স্বীকৃতি এটি। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। মন্ত্রিসভা জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।’
পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুটি ফ্রন্টে লড়াই করছিল—পশ্চিম সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, আর পূর্বে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনীর। কিন্তু মুনিরের নেতৃত্বে আমরা সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছি।তালাল চৌধুরী, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীমন্ত্রিসভা পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিঁধুরও দ্বিতীয়বারের মতো মেয়াদ বাড়িয়েছে। এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে বর্তমানে চতুর্থ বছরে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী আল–জাজিরাকে বলেন, মুনিরের পদোন্নতির সিদ্ধান্তটি তাঁর নেতৃত্বগুণের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুটি ফ্রন্টে লড়াই করছিল—পশ্চিম সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, আর পূর্বে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনীর। কিন্তু মুনিরের নেতৃত্বে আমরা সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছি।’
ভারতের সঙ্গে চার দিনের সামরিক সংঘাতের পর সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল করার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল ড ম র শ ল পদ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বজন ভেবে লাশ নিয়ে এলেন, গোসল করালেন, এরপর যা ঘটল
সিলেটের জকিগঞ্জে ভুল করে এক ব্যক্তিকে নিজেদের স্বজন মনে করে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। তবে দাফনের আগে খবর আসে—যাকে মৃত মনে করা হচ্ছিল, তিনি জীবিত। পরে জানা যায়, ভুলে অন্য একজনের মরদেহকে নিজেদের স্বজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল। পুলিশি অনুমতি নিয়ে পরে ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়। গতকাল রোববার জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। পরে তাঁর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্রাহ্মণগ্রামের বাসিন্দা বাবুল আহমদ মরদেহ দেখে সেটিকে তাঁর ভাই সাবু আহমদ (৫৫) বলে শনাক্ত করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি তাঁর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার রাতে বাবুল আহমদ ও তাঁদের মামাতো ভাই উজির উদ্দিন মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। গতকাল সকালে দাফনের প্রস্তুতির সময় গোসলের ঠিক পরপরই গঙ্গাজল এলাকা থেকে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানান, সাবু আহমদ জীবিত এবং তিনি গঙ্গাজল বাজারে অবস্থান করছেন। বিষয়টি জানার পর উজির উদ্দিন গঙ্গাজল বাজারে গিয়ে সত্যি তাঁর ভাই সাবুকে জীবিত দেখতে পান।
উজির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শুধু তাঁদের পরিবার নয়, যাঁরা লাশটি দেখেছেন, সবাই বলেছিলেন, এটা সাবু আহমদ। কিন্তু মূলত তাঁদের ভাই বেঁচে ছিলেন। তিনি ভবঘুরে অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে করতে গঙ্গাজল এলাকায় গিয়েছিলেন। এরপর তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে দিতে গেলে সেটি আর নিতে চাননি। এরপর দুপুরে স্থানীয় এতিছানগর কবরস্থানে তাঁরাই নিহত ব্যক্তির লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের ভাই সাবু আহমদ গতকাল রাতেও বাড়িতে ছিলেন। আজ সোমবার সকালে আবার বাড়ি থেকে বের হয়েছেন।
সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির লাশকে ভুল করে সাবু আহমদ ভেবে বাড়িতে আনা হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সাবু আহমদ বেঁচে আছেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থাও তাঁরাই করেছেন।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ ছিল, এমন তথ্য পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তবে পুলিশ নিহত ব্যক্তির মরদেহ নিতে গেলে জানানো হয়, পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে, যাঁরা লাশটি শনাক্ত করেছিলেন, তাঁদের সেই স্বজন বেঁচে আছেন। এরপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ তাঁরাই দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তবে এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।