পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা গত মঙ্গলবার সেনাপ্রধান সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেছে। ভারতের সঙ্গে দেশটির সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের পর নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।

এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সংঘর্ষ দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশকে তাদের পঞ্চম যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। চলতি মাসের শুরুতে চার দিন ধরে একে অপরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় তারা।

শেষমেশ ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত এক যুদ্ধবিরতি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ দুটিকে পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর কিনারা থেকে ফিরিয়ে আনে। এ ঘোষণার আগে ওই দিনই ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ উভয়ই নিজেদের বিজয় দাবি করেছে এ সংঘর্ষে। পাকিস্তান সরকার এই সংঘাতের সঙ্গে আসিম মুনিরকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সরাসরি যুক্ত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আসিম মুনিরের উজ্জ্বল সামরিক নেতৃত্ব, সাহস ও বীরত্বের স্বীকৃতি এটি। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। মন্ত্রিসভা জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।’

এমন প্রেক্ষাপটে জেনারেল মুনিরকে কেন পদোন্নতি দেওয়া হলো, ফিল্ড মার্শাল পদে কী বোঝায় এবং এই পদোন্নতি পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের ভবিষ্যৎ ভূমিকার ক্ষেত্রেই–বা কী বার্তা দেয়—এমন নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।

মুনিরকে কেন ফিল্ড মার্শাল করা হলো

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুনিরকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে তাঁর ‘দৃষ্টান্তমূলক সাহস ও দৃঢ়তার’ সঙ্গে সেনাবাহিনী পরিচালনা করা এবং ভারতের আক্রমণ প্রতিরোধে কৌশল প্রণয়নের স্বীকৃতিস্বরূপ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আসিম মুনিরের উজ্জ্বল সামরিক নেতৃত্ব, সাহস ও বীরত্বের স্বীকৃতি এটি। তিনি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন। মন্ত্রিসভা জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।’

পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুটি ফ্রন্টে লড়াই করছিল—পশ্চিম সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, আর পূর্বে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনীর। কিন্তু মুনিরের নেতৃত্বে আমরা সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছি।তালাল চৌধুরী, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

মন্ত্রিসভা পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিঁধুরও দ্বিতীয়বারের মতো মেয়াদ বাড়িয়েছে। এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে বর্তমানে চতুর্থ বছরে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী আল–জাজিরাকে বলেন, মুনিরের পদোন্নতির সিদ্ধান্তটি তাঁর নেতৃত্বগুণের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দুটি ফ্রন্টে লড়াই করছিল—পশ্চিম সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, আর পূর্বে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনীর। কিন্তু মুনিরের নেতৃত্বে আমরা সুস্পষ্টভাবে বিজয়ী হয়েছি।’

ভারতের সঙ্গে চার দিনের সামরিক সংঘাতের পর সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল করার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল ড ম র শ ল পদ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ