ভোলা জেলার তজুমদ্দিনের চাঁদপুর ইউনিয়নে স্লুইসগেট নির্মাণকাজের অনিয়ম অনুসন্ধান করতে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকেরা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। উন্নয়নকাজে অনিয়মের ঘটনা ঘটলে সেটির অনুসন্ধান করা বা প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা একজন সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব। সেই পেশাগত দায়িত্ব পালনে এবং জনস্বার্থ রক্ষায় সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু যেভাবে নাজেহালের শিকার হলেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।  

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চাঁদপুর ইউনিয়নে নতুন জলকপাট নির্মাণকাজের ঢালাই শুরু হয় বৃহস্পতিবার। এলাকাবাসী সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে বলেন, ঢালাই কাজে অনিয়ম হচ্ছে। এই খবর পেয়ে পাঁচ-ছয়জন সাংবাদিক বিকেলে সেখানে যান। তাঁরা দেখেন, সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকর্তা নেই। ঠিকাদারের প্রকৌশলীও ছিলেন না। শ্রমিকেরা নিম্নমানের পাথর, বালু, সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই কাজ করছেন। শ্রমিকদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁরা সাংবাদিকদের ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে গ্রামবাসী সাংবাদিকদের পক্ষ নিলে শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন গ্রামবাসী আহতও হন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন দুটি জলকপাটসহ ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ ও বাঁধের তীরে ব্লক ফেলার কাজ করছে। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো.

তানভীর হাসানও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা একটা পর্যন্ত তিনি সাইটে ছিলেন। পরে তিনি ইউএনওর কার্যালয়ে জরুরি সভায় অংশ নেন। দুইটার পর তিনি সোনাপুরের সাইটে ছিলেন। আবার অন্য একটি সাইটে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসেছিলেন। সেখানেও তাঁকে সময় দিতে হয়েছে। তার মানে তাঁর অনুপস্থিতিতে অর্থাৎ তিনি চলে যাওয়ার পর সেখানে অনিয়মের ঘটনা ঘটতে পারে। এলাকাবাসীর অভিযোগকে এখানে গুরুত্বহীন করে দেখার সুযোগ নেই।

আমরা আশা করব, এলাকাবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। ঠিকাদার কর্তৃপক্ষকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সাংবাদিকদের লাঞ্ছনা করার ঘটনার বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধে সরকারি কর্তৃপক্ষের আরও বেশি মনোযোগ কাম্য।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ ধসের ঘটনায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ১০ তলা আবাসিক হলের অতিরিক্ত অংশের ছাদ ধসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

শুক্রবার (১ আগস্ট) ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের রবিবার (৩ আগস্ট) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাবির কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত

১০৯তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের পাশে নির্মাণাধীন ১০ তলা ছাত্রাবাসের দ্বিতীয় তলার সাথে যুক্ত অতিরিক্ত অংশের ছাদ ধসে পড়ে। এতে অন্তত ১২ জন শ্রমিক আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজন শ্রমিককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।

আরো পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে আহত ১২

এ ঘটনায় প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশল দপ্তরের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ