মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরে কর্মকালীন ঘুষ দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বর্তমানে রাঙামাটি পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। তার কর্মকালীন সময়ে বিধি মোতাবেক তিনি খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.

মো. কামরুজ্জামান এনডিসি স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্ত আদেশ সম্প্রতি রাইজিংবিডির হাতে এসেছে। অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি বিবেচনায় পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাককে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৩৯ ধারা এবং সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২ অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। 

তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে পাওয়া প্রাপ্ত নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ে চাকরিরত সময়ে আব্দুর রাজ্জাকের ইটভাটা থেকে ঘুষ নেওয়ায় একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়। এছাড়া একজন ইটভাটা মালিক তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনিক তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে গত ২০ এপ্রিল সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। প্রশাসনিক তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে।

পরিবেশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ১৯৯৫ সালে জুন মাসের ২০ তারিখে নমুনা সংগ্রহকারী হিসেবে সদর দপ্তরে যোগদান করেন। সাতদিন পর তিনি রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় (বগুড়া) যোগদেন। সেখানে তিনি টানা সাড়ে আট বছর নমুনা সংগ্রহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আব্দুর রাজ্জাক খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে দুই বছর নমুনা সংগ্রহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০৬ সালের ৫ জানুয়ারি পরিদর্শক হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে যোগ দেন। 

এরপর তিনি পরিদর্শক হিসেবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঁচ বছর, গাজীপুর জেলা কার্যালয়ে চার বছর, চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে দুই মাস, মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে এক বছর আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। 

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে কর্তৃপক্ষ তাকে রাঙামাটি বদলি করেন। সেখানে দায়িত্বরত অবস্থায় তিনি সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন। 

সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ফাইনালি তো কিছু হয়নি। এ বিষয়ে আমি আইনানুগভাবে লড়াই করব।” 

রাঙামাটি পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুমিনুল ইসলাম বলেন, “পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ফেব্রুয়ারি মাসে রাঙামাটি কার্যালয়ে যোগদান করেন। আগে কোথায় কী অনিয়ম হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে গতমাস থেকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়ায় অফিসের সকল কার্যক্রম থেকে আব্দুর রাজ্জাক বিরত রয়েছেন।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন কর ন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • পুলিশের ৯ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর