ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
Published: 10th, July 2025 GMT
ব্রাজিলের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে লাতিন আমেরিকার দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ আরো তীব্র করার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। বুধবার ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক চিঠিতে বিষয়টি জানান ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ব্রাজিল ‘আক্রমণ’ চালাচ্ছে। সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
৯০ দিনে মাত্র ৩টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
উড়োজাহাজ ও ফুড ড্রিংক কিনতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রাধান্য দেওয়া হবে: বাণিজ্য সচিব
এদিকে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে বলেছেন, ব্রাজিলের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তিনি দেশের বিচার ব্যবস্থায় যেকোনো হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।
সপ্তাহের শুরুতে বলসোনারোর বিচার নিয়ে ট্রাম্প লুলার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সেসময় লুলা বলেন, “বিচার কার্যক্রমে ব্রাজিল কারো হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না।” তিনি আরো বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানের কাছে ২২টি চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব চিঠিতে তিনি ওই সব দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানান। তার ভাষ্য অনুযায়ী নতুন শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
তবে ব্রাজিলকে পাঠানো চিঠিটি ছিল অনেক বেশি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আক্রমণাত্মক। সেখানে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি ব্রাজিলকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা যেকোনো পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন, যা বিদ্যমান ‘সেক্টরাল শুল্ক’ থেকে আলাদা।
গত বছর ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্র লাভজনক অবস্থানে ছিল। তারা ব্রাজিলে যতো পণ্য বিক্রি করেছে, তার চেয়ে কম পণ্য আমদানি করেছে। চিঠিতে ট্রাম্প প্রস্তাবিত ৫০ শতাংশ শুল্ককে ‘প্রয়োজনীয়’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ব্রাজিলের বর্তমান সরকারের গুরুতর অবিচার সংশোধনের জন্য এটি জরুরি।”
লুলার সঙ্গে ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের মধ্যে এই চিঠিটি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। কারণ তিনি ব্রাজিলকে অতি-ডানপন্থি নেতা জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র শ ল ক আর প র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
জাবিতে এইচডব্লিউপিএল বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের ১১তম বর্ষপূর্তি
‘ইউনাইটিং ফর পিস অ্যান্ড ফুলফিলিং হিউম্যানিটি’স ডিউটি টুগেদার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উদ্যোগে ‘সেপ্টেম্বর ১৮ এইচডব্লিউপিএল ওয়ার্ল্ড পিস সামিটের একাদশ বার্ষিকী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে এ সামিট অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধভাবে মানবতার দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক মাশরুর রহমান, এইচডব্লিউপিএল বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এইচডব্লিউপিএল বাংলাদেশের উপপ্রধান শাখা ব্যবস্থাপক ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (IUB) আইন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল খান।
তিনি বলেন, “বিশ্বে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কেবল সরকার বা আন্তর্জাতিক সংস্থার নয়, প্রতিটি নাগরিকেরও দায়িত্ব রয়েছে। এইচডব্লিউপিএল বিশ্বব্যাপী তরুণদের মধ্যে শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলার কাজে নিরলসভাবে কাজ করছে।”
এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “আইনের চর্চা ন্যায় ও মানবতার চর্চা। এইচডব্লিউপিএল-এর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো আমাদের তরুণ প্রজন্মকে শুধু আইনি জ্ঞান নয় বরং মানবিকতা, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মতো চিরন্তন মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত করছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা কোনো একদিনের কাজ নয়- এটি একটি অবিরাম প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে আইন শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, তরুণরা যদি ন্যায় ও মানবতার পথে এগিয়ে আসে, তবে একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ভবিষ্যতেও শান্তি, মানবাধিকার ও বৈশ্বিক ন্যায়ের পক্ষে এমন আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা ও দায়বদ্ধতা তৈরির মাধ্যমেই আমরা সত্যিকার অর্থে মানবতার বিজয় ঘটাতে পারব।”
প্রভাষক মাশরুর রহমান বলেন, “শান্তি কেবল একটি ধারণা নয়, এটি একটি অবিরাম প্রয়াস। শিক্ষার্থীদের উচিত ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সামাজিক জীবনের প্রতিটি স্তরে শান্তি ও সহনশীলতার চর্চা করা।”
আলোচনা পর্বে বক্তারা বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা, শিক্ষায় মানবিক মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্তি এবং আইন শিক্ষার নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানের শেষে ‘পিস আইডিয়া কনটেস্ট’-এর বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এইচডব্লিউপিএল (হেভেনলি কিলচার, ওয়ার্ল্ড পিস, রেস্টোরেশন অব লাইট) একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), যা জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (UN ECOSOC)-এর স্বীকৃত অংশীদার।
সংগঠনটির মূল লক্ষ্য যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধ করা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও জাতি নির্বিশেষে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বজুড়ে শান্তির সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
ঢাকা/আহসান হাবীব/এস