বিশ্বের পনিরপ্রেমীরা এই সংবাদ শুনলে চমকে যাবেন। তার কারণ মাত্র পাঁচ পাউন্ড ওজনের একখণ্ড পনিরের দাম শুনলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হবে। এর আগে বিশ্বে আর কোনো পনিরের খণ্ড এত বেশি দামে বিক্রি হয়নি।

 ৪২ হাজার ডলারের (৫১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা প্রায়) বেশি, তখন সেটি বিশেষ হয়ে ওঠে। এমনই এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে স্পেনের বিখ্যাত ক্যাবরালেস পনিরের একটি খণ্ড।

সম্প্রতি স্পেনের একটি প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জনের পর এই পনিরের খণ্ড নিলামে ৪২ হাজার ২৩২ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে। তাই এটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছে। স্পেনের ওই ক্যাবরালেস পনিরখণ্ড এখন নিলামে বিক্রি হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে দামি পনির।

আরো পড়ুন:

স্পেন দলে চমক, নেশন্স লিগ ঘিরে নতুন প্রত্যাবর্তনের গল্প

ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে স্পেনের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস

ক্যাবরালেস পনির যে সাধারণ কোনো পনির নয়, সেটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বোঝা গেছে। ব্যতিক্রমী এই পনির তৈরি হয় স্পেনের অ্যাস্টুরিয়াস অঞ্চলের ‘আঞ্জেল দিয়াজ এরেরো’ নামে পনির তৈরির একটি কারখানায়। সেরা হওয়া পনিরটি গরুর দুধ দিয়ে তৈরি, ১০ মাস ধরে সেটি রাখা হয়েছিল ‘লোস মাজোস’ নামের এক গুহায়। গুহাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত, সেখানকার বিশেষ আবহাওয়ায় ধীরে ধীরে পরিপক্ব করা হয় এই পনির। এর ফলে এটি স্বাদে ও গন্ধে হয়ে ওঠে অনন্য। স্পেনের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই পনিরের রং খানিকটা নীলাভ হওয়ায় এটি ‘ব্লু চিজ’ নামে জগদ্বিখ্যাত।

স্পেনের রেগুলেটরি কাউন্সিল ডিওপি ক্যাবরালেস একটি প্রতিযোগিতায় ওই পনিরখণ্ডকে ‘সেরা পনির’ বলে ঘোষণা করেছে। রেগুলেটরি কাউন্সিল ডিওপি ক্যাবরালেস হলো সেই কর্তৃপক্ষ, যারা ক্যাবরালেস পনিরের উৎপাদন, গুণমান ও নাম সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মকানুন ও মানদণ্ড প্রয়োগ করে থাকে। তারা নিশ্চিত করে যে ক্যাবরালেস পনির শুধু ওই নির্দিষ্ট এলাকার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে তৈরি হলেই কেবল ‘ক্যাবরালেস’ নাম ব্যবহার করতে পারবে।

সেরা পনির নির্বাচিত হওয়ার পর পনিরখণ্ডটি নিলামে তোলা হয়। অ্যাস্টুরিয়াসের একটি নামকরা রেস্তোরাঁ সেটি ৪২ হাজার ২৩২ মার্কিন ডলারে কিনে নেয়। এত দামে নিলামে বিক্রি হয়ে পনিরটি নতুন রেকর্ডের অংশ হয়ে যায়। পাঁচ পাউন্ড ওজনের বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই পনিরের প্রতি পাউন্ডের দাম পড়েছে প্রায় ৮ হাজার ৪৪৬ ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পনিরের মূল্য শুধু স্বাদের কারণে নয়; বরং এর ঐতিহ্য ও তৈরি প্রক্রিয়ার কারণে নির্ধারিত হয়। এ পনির যেন দুধের নয়, সোনার তৈরি।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র একট

এছাড়াও পড়ুন:

সংসদ নির্বাচন: চার ইসির নেতৃত্বে পাঁচ বিশেষ কমিটি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যে চার নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ বিষয়ে কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আইনশৃঙ্খলা, মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, নির্বাচনী অনিয়ম তদন্ত এবং প্রবাসী ভোট নিয়ে এসব কমিটি কাজ করবে। বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আলাদা অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত জরুরি বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের এসব কমিটি গঠিত হলো।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ তদারকির দায়িত্বে তাহমিদা আহমদ: পাঁচটি কমিটির মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি তদারকি করবেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুতের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, প্রশিক্ষণ ও তদারকির লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, যুগ্মসচিব (প্রশাসন ও অর্থ), যুগ্মসচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২), সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২)। এ কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।

কমিটির কার্যপরিধি: জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি কর্মকর্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত, তদারকি ও প্রযোজ্য সংশোধন বিষয়াদি; যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যাবলি তদারকি; নির্বাচনি কর্মকর্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়াদি তদারকি ও সমন্বয়; এবং ঘ) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি। 

আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে ইসি সানাউল্লাহ: আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, প্রকল্প পরিচালক, আইডিইএ প্রকল্প (২য় পর্যায়), যুগ্মসচিব (প্রশাসন ও অর্থ), যুগ্মসচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২),সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২)। কমিটি প্রয়োজনে যে কোনো কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।

কমিটির কার্যপরিধি: নির্বাচন পরিচালনা কাজের জন্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ; নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিতব্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের তদারকি ও সমন্বয়; পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, সশস্ত্র বাহিনী, আনসার ও অন্যান্য সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিতকরণ; ভোটকেন্দ্র বা নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধন; ব্যালট পেপারসহ বিভিন্ন নির্বাচনি মালামাল পরিবহন, বিতরণ এবং ভোটগ্রহণ কাজে নিরাপত্তা বিধানের জন্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারদের সহায়তা প্রদান; নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত সকল বাহিনীর সাথে সমন্বয়পূর্বক সম্ভাব্য সহিংসতা, সন্ত্রাস বা বিশৃঙ্খলার আশংকা নিরূপন ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং ছ) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি।

নির্বাচনী তদন্ত কমিটির তদারকিতে আবদুর রহমানেল মাছউদ: এদিকে নির্বাচনী তদন্ত কমিটির তদারকিতে বিশেষ কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব (আইন), যুগ্মসচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-১),  উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২), সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন উপসচিব (নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ)। এছাড়া কমিটি প্রয়োজনে যে কোন কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।

এ কমিটির কার্যপরিধি ক) আইন, বিধি, প্রবিধি ও নীতিমালা প্রণয়ন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন সম্পর্কিত কার্যাবলি; খ) আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও প্রয়োগে মাঠ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, রিটার্নিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য নির্দেশিকা ও ম্যানুয়াল প্রস্তুত কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়; গ) ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়; এবং ঘ) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি।

ভোটের সময় যুগ্ম জেলা জজদের সমন্বয়ে নির্বাচনি তদন্ত কমিটি গঠন করে থাকে ইসি। তারা ভোটের অনিয়মে চিহ্নিত করে ইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। এবার তাদের কার্যক্রম সরাসরি ইসিই তদারকি করবে।

প্রবাসী ভোট ও পর্যবেক্ষক সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ: দেশের বাইরের ভোট (Out of Country Voting-OCV) ও পর্যবেক্ষক সমন্বয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ইসির সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২), উপসচিব (নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ), পরিচালক (জনসংযোগ),  সিস্টেম ম্যানেজার (আইসিটি) এবং কমিটি প্রয়োজনে যে কোন কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।

কমিটির কার্যপরিধি: ক) প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রদানের পদ্ধতি প্রণয়ন;
খ) প্রবাসীদের ভোট প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সমন্বয়;
গ) প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকারের বিষয়ে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থাসমূহের সাথে সমন্বয়;
ঘ) পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুসারে দেশী এবং বিদেশী পর্যবেক্ষকদের কার্যক্রম তদারকি ও সমন্বয়; এবং
ঙ) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ