ক্রেডিট কার্ড, সঞ্চয়পত্র কেনাসহ ১৩ সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না
Published: 10th, July 2025 GMT
চলতি অর্থবছর থেকে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি সেবা নিতে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। ১৩ ধরনের সেবা নিতে আপনাকে রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না। সর্বশেষ বছরের আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখিয়ে এত দিন এসব সেবা নিতে হতো। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে কিছুটা স্বস্তি এল সাধারণ করদাতাদের।
এবার দেখা যাক, চলতি বছর থেকে কোন কোন সেবাকে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
১.
২. ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মেয়াদি আমানত খোলা ও বহাল রাখায় এই সুবিধা দেওয়া হয়। এর মানে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেউ যদি এফডিআর করেন, তাহলেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না ব্যাংক কর্মকর্তাকে।
৩. যেকোনো ধরনের ক্রেডিট কার্ড নেওয়া ও নবায়নের সময় এত দিন আপনাকে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগত। চলতি অর্থবছর থেকে ক্রেডিট কার্ড নেওয়া বা নবায়নে এই বাধ্যবাধকতা নেই।
৪. সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ।
৫. সমবায় সমিতির নিবন্ধন নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না।
৬. সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণের সময়।
৭. চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি ও সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণ।
৮. পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়।
৯. এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থপ্রাপ্তিতে।
১০. স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে।
১১. স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে।
১২. ত্রিচক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নের সময়।
১৩. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই–কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যয় সংকোচনে আরো কঠোর সরকার
চলমান সংকোচন নীতির অংশ হিসেবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছসাধনের লক্ষ্যে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ-১ থেকে গত ৮ জুলাই জারি করা ওই নির্দেশনায় অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় ছাড়া অন্যান্য সব ধরনের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে। উপসচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটিতে যানবাহন ক্রয়, নতুন ভবন নির্মাণ ও বিদেশ সফরের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে নির্দিষ্ট খাতের বরাদ্দ থাকলেও তা ব্যয় করা যাবে না। সকল ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে যানবাহন ক্রয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও ব্যয় না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।
নতুন আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যতীত অন্য কোনো মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয় করা যাবে না। তবে যেসব নির্মাণকাজ ৫০ শতাংশের বেশি অগ্রসর হয়েছে, সেগুলো অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে শেষ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
সরকারি অর্থায়নে কোনো ধরনের বিদেশ সফর, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম বা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশনায়। তবে কিছু ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে। মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে বিদেশে অধ্যয়ন, বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ অর্থায়নে প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিদেশ সফরের অনুমতি থাকবে। তাছাড়া, মৌলিক ও আবশ্যিক প্রশিক্ষণের বৈদেশিক অংশ গ্রহণের সুযোগও রাখা হয়েছে।
এছাড়া, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই) ও ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট টেস্ট (এফএটি)-এর আওতায় বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা পরিপত্র অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সরকারি অর্থ ব্যয়ে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনতে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা