চলতি অর্থবছর থেকে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি সেবা নিতে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। ১৩ ধরনের সেবা নিতে আপনাকে রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না। সর্বশেষ বছরের আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখিয়ে এত দিন এসব সেবা নিতে হতো। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে কিছুটা স্বস্তি এল সাধারণ করদাতাদের।

এবার দেখা যাক, চলতি বছর থেকে কোন কোন সেবাকে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানো থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

১.

নানা প্রয়োজনে আপনি সঞ্চয়পত্র কেনেন। সংসারের বাড়তি খরচ জোগাতে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার টাকা বেশ কাজে লাগে। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না।

২. ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মেয়াদি আমানত খোলা ও বহাল রাখায় এই সুবিধা দেওয়া হয়। এর মানে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত কেউ যদি এফডিআর করেন, তাহলেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না ব্যাংক কর্মকর্তাকে।

৩. যেকোনো ধরনের ক্রেডিট কার্ড নেওয়া ও নবায়নের সময় এত দিন আপনাকে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগত। চলতি অর্থবছর থেকে ক্রেডিট কার্ড নেওয়া বা নবায়নে এই বাধ্যবাধকতা নেই।

৪. সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ।

৫. সমবায় সমিতির নিবন্ধন নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখাতে হবে না।

৬. সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণের সময়।

৭. চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি ও সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণ।

৮. পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়।

৯. এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থপ্রাপ্তিতে।

১০. স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

১১. স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে।

১২. ত্রিচক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নের সময়।

১৩. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই–কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সময় গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ

ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৫ বছর আগে উচ্চ আদালতের দেওয়া ৯ দফা নির্দেশনা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। নির্দেশনা প্রতিপালনের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এক রিটের ধারাবাহিকতায় আবেদনকারীপক্ষের করা সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি উর্মি রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন রেখেছেন আদালত।

ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে পরদিন ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আাদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দেন।

সম্প্রতি ঢাকার বায়ুদূষণের বিষয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৮ অক্টোবর এইচআরপিবি সম্পূরক ওই আবেদন করে। আবেদনে ‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ, উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী মো. শাহজাহান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী খসরুজ্জামান এবং ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরশিদ আক্তার।

আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করায় গত বছর ঢাকায় বায়ুর মান উন্নত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিবাদীপক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বর্তমানে ঢাকার বায়ু দূষিত হয়েছে। ফলে বায়ুর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জীবনরক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। শুনানি নিয়ে আদালত ওই আদেশ দেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।

হাইকোর্টের ৯ দফার মধ্যে ঢাকা শহরে মাটি/বালু/বর্জ্য পরিবহন করা ট্রাক ও অন্যান্য গাড়িতে মালামাল ঢেকে রাখা; নির্মাণাধীন এলাকায় মাটি/বালু/সিমেন্ট/পাথর/নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা; সিটি করপোরেশনভুক্ত রাস্তায় পানি ছিটানো; রাস্তা/কালভার্ট/কার্পেটিং/খোঁড়াখুঁড়ির কাজে দরপত্রের শর্ত পালন নিশ্চিত করা; সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে গাড়ির চলাচলের সময়সীমা নির্ধারণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; পরিবেশগত সনদ ছাড়া চলমান টায়ার ফ্যাক্টরি বন্ধ করা; মার্কেট/দোকানের প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যাগে ভরে রাখা এবং বর্জ্য অপসারণ নিশ্চিত করার বিষয়গুলো রয়েছে।

‘ঢাকার বাতাসে আরেক ক্ষতিকর ধূলিকণা’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়, শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য দায়ী রেসপিরেবল সিলিকা (আরএস) বা একটি অতি ক্ষুদ্র ধূলিকণার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে রাজধানীর বাতাসে। শুষ্ক মৌসুমে বা নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এ ক্ষতিকর উপাদান বেশি পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি এর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • সঞ্চয়পত্র কেনার পর যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন
  • এখন দেখছি নতুন প্রতারকের জন্ম হয়েছে: কায়সার কামাল
  • ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি ডলার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ
  • ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর
  • সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
  • ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, এখনো কেন গুলি করছেন’
  • সঞ্চয়পত্রে জালিয়াতির ঘটনায় ছাত্রদল নেতার নাম
  • সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতার নাম
  • ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা তিন সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ