বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ শনিবার জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ‘বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চায় ভারত’ মর্মে যে মন্তব্য করেছেন, তাঁর ওই কূটনৈতিক শিষ্টাচার–বহির্ভূত মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এ ধরনের মন্তব্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল এবং জাতিসংঘ ঘোষিত সনদের লঙ্ঘন।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা এ দেশের সরকার ও জনগণই ঠিক করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন এই জামায়াত নেতা।

ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ সনদ মেনে চলার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের আপত্তিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছিলেন, সরকারের উচিত দ্রুত সুষ্ঠু, অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন দিয়ে জনগণের ইচ্ছা ও রায়ের মর্যাদা দেওয়া।

আরও পড়ুনবাংলাদেশে সংকটের জন্য বাইরের কাউকে দোষারোপ করা যায় না: ভারত২৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ