শুল্কহারে বৈষম্য থাকলে সবাই ক্রেতা হারাব
Published: 10th, July 2025 GMT
এস এম আবু তৈয়ব। ইনডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাঁর প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি করা পণ্যের ৯০ শতাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সারোয়ার সুমন
সমকাল: যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যে নতুন শুল্কারোপ কতটা প্রভাব ফেলবে?
এস এম আবু তৈয়ব: এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। কারণ, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের বেশির ভাগই গার্মেন্টস পণ্য।
আবার আমাদের বাজারও যুক্তরাষ্ট্রমুখী। আমরা নিজেরাও উৎপাদিত পণ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করি। প্রতিযোগী দেশের তুলনায় শুল্কহারে বৈষম্য থাকলে আমরা সবাই ক্রেতা হারাব। এতে বন্ধ করতে হবে অনেক কারখানা।
সমকাল: নতুন শুল্কহার পুনর্নির্ধারণে কী বিকল্প আছে সরকারের হাতে?
এস এম আবু তৈয়ব: এতদিন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ। এখন অতিরিক্ত শুল্ক হয়েছে ৩৫ শতাংশ। এতে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি তৈরি পোশাক রপ্তানি নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। যদি আগস্ট থেকে নতুন শুল্কহার কার্যকর হয়, তবে পোশাক রপ্তানি বড় ধাক্কা খাবে। এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনে ওদের থেকে বেশি পরিমাণে পণ্য আমদানি করতে হবে। এখনই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে বাংলাদেশকে।
সমকাল: বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী দেশের চিত্র কেমন?
এস এম আবু তৈয়ব: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী দেশ চারটি– চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তান। এরই মধ্যে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে শুল্কহার ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারতের সঙ্গে আলোচনা চললেও এখন পর্যন্ত চুক্তি হয়নি। চীনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এখনও কঠোর। এ ক্ষেত্রে চীন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। পাকিস্তানের ওপর শুল্কের হার বাংলাদেশের কাছাকাছি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এখনই সব শেষ হয়ে গেছে– এমনটা মনে করি না। তবে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ না নিলে সত্যি সত্যি শেষ হয়ে যাবে অনেক সম্ভাবনা।
সমকাল: প্রতিযোগী কোন দেশ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে আমাদের বাণিজ্যে?
এস এম আবু তৈয়ব: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বাংলাদেশের জন্য এবারে ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। তা ছাড়া কম্বোডিয়ার পণ্যের ওপর ৩৬ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশকে এ বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে। অন্যথায় পিছিয়ে পড়ব আমরা। কারণ, ভিয়েতনাম এখন বাংলাদেশের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। তারা এককভাবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ক্রয়াদেশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলে তারা বাংলাদেশের বাকি ৮০ শতাংশ ক্রয়াদেশের ওপর প্রভাব ফেলার ক্ষেত্র তৈরি হবে।
সমকাল: আমাদের উদ্যোগে ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন কিনা?
এস এম আবু তৈয়ব: আলোচনার জন্য আমাদের যে ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার, সেটির অভাব ছিল। প্রস্তুতির জায়গায় আমরা অনেক সময় পার করে ফেলেছি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা খসড়া চুক্তি তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বসা দরকার ছিল। সেটিতে আমরা যাইনি। আমাদের হয়তো ধারণা ছিল, বিষয়টি এত কঠিন হবে না। বাংলাদেশের প্রস্তাব আকর্ষণীয় মনে হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। এ কারণে হয়তো কাঙ্ক্ষিত হারে শুল্ক কমায়নি যুক্তরাষ্ট্র।
সমকাল: আপনাকে ধন্যবাদ।
এস এম আবু তৈয়ব: সমকালকেও ধন্যবাদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র আম দ র অবস থ র ওপর সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে সরকার
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।
আজ দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের করবী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
রবিবার (২ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
শুধু বৈধ নিরাপত্তা পাশধারী স্বীকৃত সাংবাদিকরা এতে অংশ নিতে পারবেন।
প্রেস উইং থেকে স্বীকৃত সাংবাদিকদের সোমবার দুপুর ১২টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা