রাবি ছাত্রদলের কমিটি: সভাপতি-সম্পাদকসহ অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই
Published: 29th, July 2025 GMT
দীর্ঘ ৪ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কমিটির ১১ জনের মধ্যে ৭ জনেরই নেই ছাত্রত্ব।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন এ কমিটির ছাত্রত্ব না থাকা সাত সদস্য হলেন, সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী সর্দার জহুরুল, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিলুর রহমান সোহাগ, সহ-সভাপতি ভূগোল বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিহা আলম মুন্নি, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শফিক এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফারসি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমান।
আরো পড়ুন:
শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অবরোধ
পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
ছাত্রত্ব থাকা চার নেতা হলেন, সহ-সভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিঠু এবং দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন।
অনিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে কমিটির বিষয়ে রাবি ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, “আমরা যেমন কমিটি চেয়েছিলাম, তেমনটা হয়নি। এই কমিটি নিয়ে আমরা কেউই সন্তুষ্ট না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে এই কমিটি যায় না। উপর থেকে বলা হয়েছে, সিনিয়রদের সন্মান দেখানোর জন্য এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়ার কথা বলেছেন তারা। তবে আমরা আশা করেছিলাম, নিয়মিত ছাত্রদের নিয়েই কমিটি দেওয়া হবে।”
সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু বলেন, “আমরা অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই ক্যাম্পাসে টিকে আছি। যারা এতদিন দলের জন্য এত কষ্ট সংগ্রাম করছে, তাদের সম্মানে এই খণ্ডকালীন কমিটি দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। আমাদের পরবর্তী কমিটিগুলো সব নিয়মিত শিক্ষার্থী দ্বারা পরিচালিত হবে।”
তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ফেইক আইডি দিয়ে ট্রল করা হচ্ছে। তাদের নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের সম্পূর্ণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। ছাত্রদল ভালো কাজ করলে তারা ভালো বলবে, খারাপ কাজ করলে সমালোচনা করবে। এটা আমরা সমর্থন করি।”
আরো পড়ুন: রাবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহী, সম্পাদক জহুরুল
সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল বলেন, “দুঃসময় যারা কষ্ট করেছে, তাদের একটা সম্মানের জন্য পরিচয় দিয়েছে। কমিটিতে যারা আছেন, তারা কেউ এমফিল করছেন, কেউ সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি আছেন, আবার রানিং শিক্ষার্থীও আছে।”
তিনি বলেন, “অনেকে তো অনেক কথা বলবে, এখানে বলার কিছু নেই। দুঃসময়ে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমরাই আন্দোলন করেছি। আমরা সবসময় সবার সঙ্গে মিলেমিশে থেকেছি। আমরা ক্যাম্পাসের সবকিছু নিয়ে পজিটিভভাবে কাজ করব আশা করছি।”
সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “আমাদের কমিটিতে ১১ জনের ভেতর সাতজনের অনার্স-মাস্টার্স শেষ হয়েছে। তবে এই সাতজন অন্য বিষয়ে এমফিল বা মাস্টার্স করছেন। আমরা কোনো ব্যবসা বা চাকরিতে এখনো যোগদান করিনি। নিয়ম অনুযায়ী রাজনীতি করছি। তাই আমাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়নি। কমিটিতে থাকা বাকি চারজনের এখনো অনার্স-মাস্টার্স শেষ হয়নি।”
তিনি বলেন, “মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের কমিটি কাজ করে যাবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা করে সাতদিনের মধ্যে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির পর কাউন্সিলের মাধ্যমে হল কমিটি গঠন করা হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র ক জ কর ন কম ট কম ট র আম দ র ই কম ট
এছাড়াও পড়ুন:
হাবিব ও সজীবের জল্লারপাড় লেকে জমজমাট মাদক বানিজ্য
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের জল্লারপাড় এলাকায় হাবিব ওরফে পিচ্চি হাবিব (মাদকসহ ৫/৭টি মামলার আসামি), একটা খুনি পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ভয়ংকর সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গাং লিডার।
বাবা মৃত কমল মিয়া এক সময় পুলিশের সোর্স ছিলেন যে কিনা খুন হয় নিজ সৎ ছেলের হাতে। হাবিবের বড় ভাই মানিক এলাকার জনি নামের এক ছেলেকে খুন করে যাবজ্জীবন সাজায় জেল খাটছে।
হাবিব ৫ই আগস্ট এর আগে আজমীর ওসমানেরক্যাডার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলো। গণঅভ্যূত্থানের আগে এলাকায় বড় করে ১৫ আগস্ট পালন ও নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন এবং ওসমান পরিবারের পালিত ক্যাডারদের দাওয়াত করে মহড়া দেয়ার ছবি ও বিভিন্ন মিছিল মিটিং এর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সে যোগ দেয় বিএনপিতে। এলাকার বিএনপি'র বিভিন্ন নেতা ও দেওভোগের অনেক নেতার দেখা মিলে হাবিবের অফিসে ও আড্ডায়। অনেকেই আসে হোন্ডার বহর নিয়ে যার ফলে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খুলেনা। মানুষকে আতঙ্কে রাখতে হাবিবকে দেখা যায় নিজে বড় বড় ছুড়ি নিয়ে মহড়া দিতে।
হাবিবকে শেন্টার দিচ্ছে বিএনপি'র ক্যাডার গাল কাটা জাকিরের ছোট ভাই ডাকাত সজিব। ডিস বাবুর নির্দেশে ডাকাতি করতে যাওয়া সজিব ডাকাতি মামলায় ৯বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, হাইকোর্ট থেকে আপিল করে জামিনে আছে। সদর থানায় ৪/৫ টির বেশি মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। হাবিব ও সজীব নারায়ণগঞ্জে আজমির ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত।
৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদাররা এলাকা ছাড়লেও হাবিব ও সজীব এলাকায় আছে বহাল তবিয়তে। এর কারণ হাবিবের মাদক ব্যবসার অডেল টাকা ও তাদের দুজনের ক্ষমতা। মাদকের টাকায় হাবিব করেছে এলাকায় আলিশান দুইতালা বাড়ি। হাবিব ও সজীবের আয়ের উৎস হল তারা পাইকারি হিরোইন ইয়াবা ও গাজা ব্যবসায়ী।
এক নং বাবুরাইল, ২ নং বাবুরাইল, জিমখানা, পাইকপাড়া, নলুয়াপাড়া, ঋষিপাড়া সব জায়গায় হাবিব ও সজীবের মাদক বিক্রি হয়। হাবিবের দখলকৃত সবচেয়ে বড় স্পট হলো জিমখানা পানির টাংকি যা ফাইম ও সায়েম দেখে। এসব স্পটে দৈনিক লাখ লাখ টাকার নেশা বিক্রি হয়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এখান থেকে মাসোহারা পৌঁছে যায় কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার পকেটে সেই সাথে নামধারী সাংবাদিকদের কাছে মাসোহারা পৌছে। জনশ্রুতি রয়েছে, এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত সাংবাদিকদের দাপটে হাবিব ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
হাবিবের প্রধান সেলসম্যান মিলন ও মাসুম ওরা একাধিকবার ডিবির কাছে গ্রেফতার হয় পরে বিশাল অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পায়। ওদের দুজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে বিভিন্ন তথ্য।
এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা হলেও হাবিবকে ধরতে পারছে না প্রশাসন এর কারণ পুরো এলাকা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা জল্লারপাড় মসজিদের সামনে বিভিন্ন দোকানদার তাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় এলাকায় পুলিশ আসছে, প্রশাসন ঢোকার আগেই হাবিব সটকে পড়ে। এলাকা ঘনবসতি হওয়ায় লুকিয়ে যায় অন্য কারো ঘরে এজন্য প্রশাসন ধরতে না পড়ে চলে আসে।
এলাকার সবাই রাতে যখন ঘুমায় তখন তার বিচরণ দেখা যায় বিভিন্ন অলিতে গলিতে। গভীর রাতে সঙ্গী সহ অনেক পাওয়ারের টর্চ লাইট ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র সাথে থাকে ডাকাত সজিব ও কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। হাবিব ও সজীবের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্যের জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগও।
একাধিক বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির কাজ করতে পারছে না তাদের দুজনের জন্য। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ। চাঁদা দিয়ে মীমাংসা করলেই বাড়ির কাজ করতে পারছেন। অন্যের কেনা বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিচ্ছে তারা দুজন জায়গার দাবি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসী এখন হাবিব ও সজীবের হাতে জিম্মি। সবাই এর থেকে মুক্তি চায়। হাবিব এতটাই ধুরন্দর যে প্রশাসনে হাত থেকে বাঁচার জন্য ৫ ই আগস্ট এর পর এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবসা দিয়েছে, তার সেলসম্যান মাসুম এই ব্যবসার ম্যানেজার সে সম্পূর্ণ ব্যবসা দেখাশোনা করছে। মাসুমেরও বিভিন্ন ছবি আছে আজমির ওসমানের মিছিলে ও ১৫ ই আগস্টের খিচুড়ির বিতরনের অনুষ্ঠানে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় হাবিব, সজীব ও মাসুম তাদের সবারই ওসমান পরিবারের পক্ষে ছিল নজর কাড়া ভূমিকা। মোট কথা এলাকাবাসী এখন সম্পূর্ণ জিম্মি হাবিব ও সজীবের কাছে।
নারায়ণগঞ্জের সব মাদকের স্পটে অভিযান হলেও জল্লারপাড়ায় হাবিবের মাদকের স্পটে কেন অভিযান হচ্ছে না এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে তারা হাবিব ও সজীবের জিম্মি থেকে মুক্তি হতে চায়।