বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারে শ্রমিকদের দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ
Published: 2nd, June 2025 GMT
ঢাকার সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকেরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টা পর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
কারখানার শ্রমিকেরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ গত ১৭ মে এক নোটিশের মাধ্যমে ১৮ থেকে ৩১ মে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। এ ছাড়া ওই নোটিশে শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন ২৫ মে পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়। ওই দিন দুপুরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন নিতে কারখানায় উপস্থিত হন। কারখানায় এসে তাঁরা মালিকপক্ষ বা কর্মকর্তারা কারখানায় আসেননি বলে জানতে পারেন। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কারখানাসংলগ্ন হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের ২৯ তারিখে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে বলে জানান। তবে ওই দিন বকেয়া পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
পরে গতকাল রোববার বকেয়া বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আজ সকাল ৯টার দিকে শ্রমিকেরা বকেয়া পরিশোধের দাবিতে হেমায়েতপুর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। একপর্যায়ে জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালিকপক্ষ আমাদের দুই মাসের বকেয়া বেতন দিচ্ছে না। সেনাবাহিনী কয়েকবার মালিককে কারখানায় এনে বেতন দেওয়ার তারিখ জানিয়েছিল। কিন্ত ওই তারিখে বেতন দেয় নাই। সামনে ঈদ, বেতন–বোনাস না পেলে বাড়ি যাব কীভাবে?’
এ বিষয়ে জানতে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। সামনে ঈদ, এই সময়ে শ্রমিকদের বেতনের বিষয়টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়ক দিয়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও জলকামান ব্যবহার করে সড়কে থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জে খুন ও ডাকাতি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোঃ রাসেলকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব -১১ এর সিপিএসসির স্কোয়াড কমান্ডার মোঃ শামসুর রহমান।
এর আগে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব । গ্রেপ্তারকৃত আসামি মোঃ রাসেল (৩০) ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর থানার মজিবর তালুকদারের ছেলে।
র্যাব জানায়, ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি রাতে সাগর নামের এক ব্যাক্তি আরএফএল কোম্পানীর কাভার্ড ভ্যান চট্টগ্রাম ডিপো হতে নরসিংদী ঘোড়াশাল যাওয়ার পথে সোনারগাঁও থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আষাঢ়িয়ারচর ব্রীজের পূর্ব পার্শ্বে ঢাকাগামী লেনের রাস্তার পাশে পৌঁছে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য ড্রাইভার মোঃ হোসেন আলী কাভার্ড ভ্যানটি থামালে ড্রাইভার এবং এজাহারকারীর ভাই হেলপার মোঃ সাগর কাভার্ডভ্যান হতে প্রসাব করার জন্য নীচে নামেন।
তারা প্রসাব করার পরপরই অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন্য ডাকাত চাকু, ছুরিসহ এসে তাদের চাকু ও ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের নিকট যা কিছু আছে তা দিয়ে দিতে বলে। এসময় ডাকাতদলের সাথে সাগরের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে এবং একপর্যায়ে ডাকাতরা ধারালো চাকু ও ছুরি দিয়ে সাগরকে এলাপাথারীভাবে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। একপর্যায়ে আসামিরা সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ঘটনার পরপরই হাইওয়ের টহলরত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার মোঃ হোসেন আলী পুলিশের সহায়তায় সাগরকে দ্রুত সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার সাগরকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে নিহতের বড় ভাই মোঃ আসাদুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি খুনসহ ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলার বিচারকার্য শেষে গত ২৮ মে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ডাকাতির সাথে জড়িত পলাতক আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ড প্রদান করেছেন। একই সাথে তাদের সবাইকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।