কারও জীবনে যদি ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ বা  মনোযোগের সময়কাল খুব শর্ট বা ছোট হয় তাহলে তার প্রকৃত জ্ঞান বাড়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আমাদের অ্যাটেনশন স্প্যান কমিয়ে দেওয়ার পেছনে কয়েকটি অভ্যাস দায়ী। যেগুলো জীবনের জন্যও টক্সিক ভূমিকা পালন করে। 

১. ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে ফোন ব্যবহার করা। এটা খুবই খারাপ অভ্যাস। দিনের প্রথম ও শেষ এক ঘণ্টা ফোন থেকে দূরে থাকা উচিত। 

২.

দ্বিতীয় ধ্বংসাত্মক অভ্যাস হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ না করেই ওষুধ সেবন করা। নিজের ইচ্ছামতো ওষুধ সেবন করলে অসুখ কমার বদলে বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা ছাড়াই ওষুধ সেবনের ফলে হয়তো অসুখের উপসর্গগুলো কমে যাবে কিন্তু মূল সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। প্রত্যেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। যদিও এতে টাকা কম ব্যয় হয় কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। 

আরো পড়ুন:

হজমশক্তি বাড়ানোর ৯ উপায়

পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়

৩. শর্ট ফর্ম সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট দেখাও একটি খারাপ অভ্যাস। যত ছোট কনটেন্ট,ততটাই ইউজলেস। যত ছোট কনটেন্ট ডোপামিন হরমোন লেভেলের জন্য ততবেশি ক্ষতিকর। দিনে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সময দিতে পারেন। খুব প্রয়োজন না হলে এর বেশি সময় দেবেন না। যদি আপনি আপনার জীবনের লক্ষ্য সেট করে থাকেন, স্বপ্ন সেট করে থাকেন তাহলে সেই স্বপ্ন তাড়া করতে সময় ব্যয় করুন। 

৪. অতিরিক্ত ভোগের অভ্যাস আপনাকে লাইফে এগোতে দেবে না। একজন বন্দির সময় যেভাবে বন্দি অবস্থায় কেটে যায়, আপনার সময়ও ওভাবে কেটে যাবে। খুব বেশি খাওয়া বা খুব ঘন ঘন খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নিজের দিনটাকে ভালোভাবে সাজিয়ে তুলুন। দিনের দশ শতাংশ সময় ভোগের জন্য ব্যয় করতে পারেন। আর দিনের ৯০ শতাংশ সময় আত্মচিন্তা ও উৎপাদন কাজে ব্যায় করুন। 

৫. জানেন তো- শর্ট অ্যানেটশনের অভ্যাস সবচেয়ে খারাপ। অথচ এই সিস্টেমের মধ্যেই আমরা বসবাস করছি। ধরুন আপনি ধনী হতে চান, আপনার উচিত-কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠানগুলো-রিজার্ভ ব্যাংকগুলো কাজ করে এবং কারা এর মালিক। তাদের সম্পর্কে জানা। যে বিষয়গুলো একটি টিকটক ভিডিওতে শর্ট অ্যাটেনশন স্প্যানে পাওয়া সম্ভব নয়। 

সূত্র: রেড পিল

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অ য ট নশন স প য ন

এছাড়াও পড়ুন:

সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা

আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রীন জিরো কূপন বন্ড ইস্যুতে জালিয়াতির কারণে সালমান এফ রহমান ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এছাড়া সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টের সাবেক সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা, আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা ও ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিংকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ৯৬৫তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের শনাক্ত করে সিআইবিতে রিপোর্ট করার নির্দেশ

বুধবার (৩০ জুলাই) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ৮৭১তম কমিশন সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। ওই বছরের ১২ জুলাই সেটার সম্মতিপত্র ইস্যু করা হয়েছিল। ওই বন্ডটির ইস্যুয়ার ছিল শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, যা ওই বছরের ২ মার্চ নিবন্ধিত একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। কোম্পানিটি নিবন্ধিত হওয়ার পরপরই ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ওই বন্ড ইস্যুর আবেদন করেছিল। ওই কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ছিল ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে ২৪৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ ভূমি ক্রয় বা উন্নয়ন সংক্রান্ত কারণে উত্তোলন করা হয়েছিল, যেটি কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

এছাড়া ওই বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ট্রাস্টি হিসেবে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড, নিরীক্ষক হিসেবে এমজে আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি, মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ব্যাংক ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার)। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালিত হয়েছে এবং এর প্রতিবেদন কমিশনে জমা হয়েছে।

এ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমানকে ১০০ কোটি ও ব্যাংকের তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার এবং পুঁজিবাজারে উভয়কে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

একই সঙ্গে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার এবং তৎকালীন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের তৎকালীন সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব ধরনের কাজে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে অ্যানফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক এ আর এম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং তৎকালীন স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এছাড়া ওই বন্ড সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও বিধিবিধান ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ