তৃতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের গজরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে এক যুবকের গোপনাঙ্গ কেটে দিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ওই যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার স্ত্রীকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রবিউল হক।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চওড়াপাড়া গ্রামের শামসুজ্জামানের ছেলে মো. উজ্জ্বল (৩৫) প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন কল্পনা বেগমকে (২৫)। পরে দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য গোপন করে তৃতীয় বিয়ে করেন তিনি। এ তথ্য জানার পর ক্ষুব্ধ হন দ্বিতীয় স্ত্রী। কৌশলে উজ্জ্বলকে চাঁদপুরের কৃষ্ণপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন কল্পনা। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কেটে দেb তিনি। এরপর কল্পনা এবং তার বাবা বাবুর আলী পালিয়ে যান।

উজ্জ্বলের তৃতীয় স্ত্রী ফারজানা বলেছেন, “আমাকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মুঠোফোনে উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কাটার বিষয়ে জানিয়েছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে গিয়ে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিই। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে তাকে ঢামেকে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) রেফার করে। আমি ধারণা করছি, কল্পনার পরকিয়া সম্পর্ক আছে। উজ্জ্বল তা জেনে ফেলায় ক্ষোভে সে (কল্পনা) এ কাণ্ড করেছে। আমি তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে কথা বলতে কল্পনা ও তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ভুক্তভোগী উজ্জ্বলের বক্তব্যও নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক বলেছেন, সদর হাসপাতাল থেকেও উজ্জ্বলের ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। উজ্জ্বলের দ্বিতীয় স্ত্রী কল্পনা গোপনাঙ্গ কেটেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। কল্পনা ও তার বাবাকে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/জয়/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ সোহানের দায়িত্ব নিল বিএনপি

চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ হিসেবে খ্যাত অসাধারণ প্রতিভাবান ক্ষুদে ফুটবলার সোহানের দায়িত্ব নিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক চাঁদপুরে এসে ফুটবলের সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ দিয়েছেন ৫ বছর বয়সী সোহানকে। 

আমিনুল হক বলেছেন, “সোহানের দায়িত্ব এখন থেকে বিএনপি নিয়েছে। তারেক রহমানের নির্দেশেই তার দায়িত্ব নেওয়া হলো। সোহানের বয়স ৭ বছর হওয়ার পর বিকেএসপি কিংবা যেকোন ভালো মানের ফুটবল ক্লাবে তাকে ভর্তি করা হবে।”

আরো পড়ুন:

বিএনপি ভোটে জিতলে তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী: হুমায়ূন কবির

রাজশাহী নগর বিএনপির সম্মেলনে তারেক রহমান বক্তব্য দেবেন

তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সোহানের ফুটবল খেলার দক্ষতা দেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশেই আমি দলের হয়ে সোহানের বাড়িতে ছুটে এসেছি। কিছু আর্থিক সহায়তা সোহানের জন্য দলের পক্ষে দেওয়া হলো। এখন থেকে প্রতি মাসে সোহানের জন্য আর্থিক সহায়তা পাঠানো হবে।”

আমিনুল হক আরো বলেন, “শুধু সোহান নয়, এরকম গ্রাম-গ্রামান্তরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে নিয়ে কাজ করার মানসিকতা আছে বিএনপির। যদি আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় বিএনপি আসে, তাহলে অবশ্যই এর সুফল এই ক্ষুদে খেলোয়াড়রা পাবে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সোহানদের পাশে সব সময় থাকব, এ আশ্বাস দিচ্ছি।”

২০১৯ সালের ২২ আগস্ট চাঁদপুরের মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাড়ে পাঁচ আনী গ্রামের প্রধানিয়া বাড়িতে মো. সোহেল প্রধান ও রেহেনা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় সোহান প্রধান। সে এখন কেজি ওয়ানে পড়ে।

মাত্র আড়াই বছর বয়সে দাদা মৃত শাহ আলম প্রধান একটি ফুটবল কিনে দেন সোহানকে। সেটা দিয়েই হয় তার ‘পায়ে খড়ি’। প্রতিদিন বাবার কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সোহান। 

মাত্র ছয় বছর বয়সে সোহানের ফুটবল খেলার স্কিল ও ড্রিবলিং দেখে অনেকেই অবাক হন। তার ড্রিবলিংয়ের একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা নজরে এসেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকের। 

সোহানের বাবা মো. সোহেল প্রধান বলেছেন, “আমি এই দেশে জন্ম নিয়ে সার্থক। আমার ছেলেকে আজকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই তারেক রহমান ও আমিনুল হককে। আমাদেরকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, এটা কখনোই ভোলার নয়। সবার সহযোগিতা নিয়ে আমার ছেলে একদিন অনেক বড় ফুটবল খেলোয়াড় হবে।” 

তিনি বলেন, “আমি ২৫ বছর ধরে সাইকেল মেকানিক হিসেবে কাজ করছি। এ আয় দিয়ে সংসার চালাচ্ছি। সোহানকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। সে বড় হয়ে একজন ভালো মানের ফুটবল খেলোয়াড় এবং দেশের সম্পদ হবে। কিন্তু, আর্থিক সঙ্কটে আমি ঠিকমতো সোহানের যত্ন নিতে পারছি না। তাই, সবার কাছে সহযোগিতা চাই, যাতে সোহানকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।”

শিশু সোহান বলে, “আমার বাবাই আমাকে ফুটবল খেলা শিখাচ্ছে। আমি নিয়মিত বাবার দোকানের সামনের রাস্তায় ও পাশের বালুর মাঠে ফুটবল খেলি। আমি যাতে একজন দক্ষ ফুটবল খেলোয়াড় হতে পারি, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেছেন, “সোহানের ফুটবল দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি অভিভূত। তার প্রতিভা যাতে কোনো সীমাবদ্ধতায় থেমে না যায়, সেজন্য তার ও তার পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থাকবে। তার জন্য কী করা যায়, সে বিষয়ে কাজ করব।”

ঢাকা/জয়/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আমার জাদু মরে নাই, তারে কোলে দেও, বাড়িত নিয়া ভাত খাওয়ামু’
  • চাঁদপুরের ‘ক্ষুদে মেসি’ সোহানের দায়িত্ব নিল বিএনপি