তৃতীয় বিয়ে করায় যুবকের গোপনাঙ্গ কাটলেন দ্বিতীয় স্ত্রী
Published: 24th, June 2025 GMT
তৃতীয় বিয়ে করার অভিযোগে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের গজরা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে এক যুবকের গোপনাঙ্গ কেটে দিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ওই যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার স্ত্রীকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চওড়াপাড়া গ্রামের শামসুজ্জামানের ছেলে মো. উজ্জ্বল (৩৫) প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন কল্পনা বেগমকে (২৫)। পরে দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য গোপন করে তৃতীয় বিয়ে করেন তিনি। এ তথ্য জানার পর ক্ষুব্ধ হন দ্বিতীয় স্ত্রী। কৌশলে উজ্জ্বলকে চাঁদপুরের কৃষ্ণপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন কল্পনা। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কেটে দেb তিনি। এরপর কল্পনা এবং তার বাবা বাবুর আলী পালিয়ে যান।
উজ্জ্বলের তৃতীয় স্ত্রী ফারজানা বলেছেন, “আমাকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মুঠোফোনে উজ্জ্বলের গোপনাঙ্গ কাটার বিষয়ে জানিয়েছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে গিয়ে উজ্জ্বলকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিই। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে তাকে ঢামেকে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) রেফার করে। আমি ধারণা করছি, কল্পনার পরকিয়া সম্পর্ক আছে। উজ্জ্বল তা জেনে ফেলায় ক্ষোভে সে (কল্পনা) এ কাণ্ড করেছে। আমি তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে কথা বলতে কল্পনা ও তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ভুক্তভোগী উজ্জ্বলের বক্তব্যও নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক বলেছেন, সদর হাসপাতাল থেকেও উজ্জ্বলের ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। উজ্জ্বলের দ্বিতীয় স্ত্রী কল্পনা গোপনাঙ্গ কেটেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। কল্পনা ও তার বাবাকে আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/জয়/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন
সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, “নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”
মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”
পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”
কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”
মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ