সাতটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যার মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণসহ ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড.
আরো পড়ুন:
একনেকে ৩৭৫৬ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১২৫৩২ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি রয়েছে। এগুলো হলো— ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকার উন্নয়ন প্রকল্প’।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘সাতটি বিভাগীয় শহরে ২০০ শস্যাবিশিষ্ট মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প’; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘নবনির্মিত চারটি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদী স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাসসেস টু জাস্টিস ফর উইমেন: স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি ডিসপুট রেজোলুশ্যন অ্যান্ড ইমপ্রুভিং ম্যানেজমেন্ট’; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন)’; শিল্প মন্ত্রণালয়ের ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (৩য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি)’; মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প’ এবং ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম প্রকল্প’; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘টিভিইটি টিচার্স ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’; সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ৩য় সংশোধিত প্রকল্প’; পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডাটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প’ ও ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমস)’, ‘প্রকিউরমেন্ট মডার্নাইজেশন টু ইমপ্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমআইএসডি)’ ও ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ক্যাপাসিটি এনহেন্সমেন্ট অ্যান্ড মডার্নাজেইশন প্রজেক্ট (এসসিইএমপি) প্রকল্প’ অনুমোদন করা হয়েছে।
এছাড়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক অডিট থ্রো ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি এনহেন্সমেন্ট (এসপিএডিটিইসি)’ ও ‘স্ট্রেনদেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন প্রজেক্টের (এসডিআরএমপি)’ মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন; স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; খাদ্য এবং ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ; সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভায় অংশ নেন।
ঢাকা/হাসান/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর একন ক উপদ ষ ট একন ক ব ষয়ক
এছাড়াও পড়ুন:
এক দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯৪
প্রতিদিনই বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার ৩৯৪ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীর সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল। গত মে মাসের তুলনায় চলতি মাসে রোগীর সংখ্যা হলো আড়াই গুণ।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মে মাসে যেখানে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট ডেঙ্গু রোগী ছিলেন এক হাজার ৭৭৩ জন, সেখানে জুনের এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৯৯-এ। এর আগে গত রোববার ৩২৯ জন এবং শনিবার ৩৫২ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৯৪ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৮, ঢাকা বিভাগে ৩৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫০, খুলনা বিভাগে ৮ জন এবং রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালে ৪৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আগের হিসাবে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ও নারী সমান। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের।
২২ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গু রোগী হয় তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। তার আগে ২০১৯ সালে রোগী ছিল এক লাখ ১ হাজার
৩৫৪ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে করণীয়
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) গতকাল অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ইন্টারনাল মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান ডেঙ্গু গাইডলাইন বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরের হালকা উপসর্গে (৩-৫ দিন জ্বর, মাথাব্যথা ও হালকা গায়ে ব্যথা) রোগীকে বাড়িতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও তরল পানীয় (স্যালাইন, ফলের রস ও স্যুপ) খেতে হবে।
বিএমইউতে করোনা, ডেঙ্গু ও জ্বরের সাম্প্রতিক প্রবণতা নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে ডা. নাজমুল বলেন, জ্বর কমানোর জন্য কেবল প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যাবে। ডেঙ্গুর জন্য অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন বা ব্যথানাশক জাতীয় ওষুধ নিষিদ্ধ। কারণ এগুলো রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়। জ্বর কমে যাওয়ার পর হঠাৎ শরীর খারাপ হওয়া, বারবার বমি, পেটব্যথা, রক্তপাত, ঘন ঘন দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট বা চামড়া মলিন, অস্থিরতা, অজ্ঞান ভাব, মাথা ঘোরানোর মতো উপসর্গ দেখা গেলে এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ রোগীর জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে, ফুসফুসে পানি জমার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা বলছে, এতে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় কোনো উপকার হয় না। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারেরও প্রয়োজন নেই। কারণ ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যদি নিশ্চিত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থাকে (যেমন নিউমোনিয়া), তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে।
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের ঊর্ধ্বগতি
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু প্রকোপের ঊর্ধ্বগতি চলমান। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। তার মধ্যে ৯৩ জনই বরগুনার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, রোববার বিভাগে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিলেন ১২৬ জন। যার মধ্যে বরগুনাতে ছিলেন ৭৩ জন। এখন বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ৪৩২ জন। তার মধ্যে ২৪২ জনই বরগুনা জেলার।