ইরানের ওপর থেকে তেল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর দেশটির পুনর্গঠনে সাহায্য করতে এমন পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনও ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের কৌশল বজায় রেখেছে, যার মধ্যে দেশটির তেল বিক্রির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানকে নিজেদের দেশ পুনর্গঠনে সাহায্য করতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগে কিছুটা নমনীয়তা আনা হতে পারে। 

ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের ওপর থেকে তেল নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছেন কিনা– জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশটিকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে তাদের অর্থের প্রয়োজন হবে। আমরা তা দেখতে চাই।

এর আগের দিন তিনি বলেছিলেন, ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধবিরতির পর চীন চাইলে ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে পারবে। তবে পরে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করে জানায়, প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্যের অর্থ এই নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র ওই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইরানি তেল কেনায় ট্রাম্প চীনের বেশ কয়েকটি ‘টিপট’রিফাইনারি ও বন্দরের ওপর ইরান সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সিএনবিসি চ্যানেলকে বলেছেন, চীনের ইরানি তেল কেনার সামর্থ্য নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য চীনের প্রতি একটি ইঙ্গিত যে, আমরা তোমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, আমরা তোমাদের অর্থনীতিকে আঘাত করতে আগ্রহী না।

চীন ইরানের শীর্ষ তেল ক্রেতা এবং দেশটি ট্রাম্প প্রশাসনের ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে। উইটকফ বলেন, আমরা চাই একসঙ্গে কাজ করতে। আশা করি, এটা ইরানিদের জন্যও একটা বার্তা হবে। ইরানের অপরিশোধিত তেলের শীর্ষ ক্রেতা চীন, দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি ইরানের তেলের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।

সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জা​দুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।

একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ