স্বাস্থ্যবিধিতে গুরুত্ব নেই এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে
Published: 27th, June 2025 GMT
এগারো শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গতকাল বৃহস্পতিবার একযোগে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। প্রথম দিন সারাদেশে অনুপস্থিত ছিলেন ১৯ হাজার ৭৫৯ পরীক্ষার্থী। এদিন অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৪৩ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও খোদ রাজধানীর অনেক পরীক্ষা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে উদাসীন দেখা গেছে। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা বেশির ভাগ অভিভাবকই ছিলেন মাস্ক ছাড়া। কারও হাতে ছিল না হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
সকালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ ও সিদ্ধেশ্বরী কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পরীক্ষার্থীই মাস্কবিহীন অবস্থায় কেন্দ্রে ঢুকছেন। এমনকি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।
সিদ্ধেশ্বরী কলেজ কেন্দ্রের গেটে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, অনেকে মাস্ক পরলেও বেশির ভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বারবার অনুরোধ করেও তেমন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরীক্ষার সময় যা যা মানার কথা ছিল, বাস্তবে এর অনেক কিছুই ছিল অনুপস্থিত। এবার নির্ধারিত সাতটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা ছিল। তবে রাজধানীর বেশির ভাগ পরীক্ষা কেন্দ্রে মাস্ক ব্যবহার ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কোনো মেডিকেল টিমেরও দেখা মেলেনি।
শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ পরিদর্শন শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি স্বীকার করেন, সব কেন্দ্রেই শতভাগ নিয়ম মানানো যাচ্ছে না। আমরা ধাপে ধাপে পরিস্থিতির উন্নয়ন করব।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কঠোর নজরদারি রয়েছে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেন।
প্রথম দিনে অনুপস্থিত ১৯৭৫৯ পরীক্ষার্থী, বহিষ্কার ৪৩
প্রথম দিন অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার হওয়া ৪৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জন এইচএসসির, ২৪ জন আলিমের ও ১৩ জন কারিগরির।
বোর্ডগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, অনুপস্থিত ১৯ হাজার ৭৫৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৩ হাজার ৩২৬ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ৮৬৭, কুমিল্লায় ২ হাজার ৪২৮, যশোরে ১ হাজার ৬৩৮, চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৩০, সিলেটে ৮২৪, বরিশালে ১ হাজার ২৯, দিনাজপুরে ১ হাজার ২৯১ ও ময়মনসিংহে ৮৮০ জন রয়েছেন।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন আলিম পরীক্ষায় প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিলেন ৪ হাজার ১৯৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডে ১ হাজার ৫০ জন পরীক্ষায় অংশ নেননি। শতাংশের হিসাবে সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিতি মাদ্রাসা বোর্ডে। এ বোর্ডে অনুপস্থিতির হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ক ষ পর ক ষ র থ প রথম দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থীর
স্কুলের ল্যাব সহকারীর ‘প্রতারণার’ কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার। বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা।
এ তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মো; রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণ হয়নি। আসেনি প্রবেশপত্র।
প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি। রাজু আহমেদ পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের শাস্তির দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাঁকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।