চলতি অর্থবছরের গতকাল রোববার পর্যন্ত দেশে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এর মানে, এই সময়ে ৩ হাজার ৪ কোটি ডলার দেশে এসেছে। দেশের ইতিহাসে আগে কোনো অর্থবছরে এত আয় আসেনি। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। ফলে চলতি অর্থবছরে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

এর আগে দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। সেই অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। আর সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে গত মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৯৭ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। গত মার্চে অর্থাৎ রোজার ঈদের সময় প্রবাসীরা ৩২৯ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন। যদিও পরের মাসে অর্থাৎ এপ্রিলে তা কমে নেমে আসে ২৭৫ কোটি ডলারে। তবে সার্বিকভাবে প্রবাসী আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে প্রবাসী আয় বাড়ায় ডলারের বাজার স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আজ রোববার রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার।

ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এতে ডলারের ওপর চাপ কমে গেছে। অবৈধ পথে অর্থ পাঠানোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ এবং বৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণকে উৎসাহিত করতে নানা প্রণোদনা প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব স এস ছ ল র প রব দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নয়, অধিকার চাই, প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা

জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঋণের বোঝা, শোষণ ও করপোরেট লুটপাটের এক নয়া উপনিবেশিক ব্যবস্থা। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। ঋণ নয়, অধিকার চাই। 

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনসহ ২৪টি সংগঠন আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় অনুষ্ঠানে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। 

দাবিগুলো হলো-উন্নয়নের নামে ঋণ নির্ভরতার অবসান করা, দক্ষিণের দেশগুলোর ঋণ বাতিল করা, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ, এডিবি’র শর্তযুক্ত ঋণ বন্ধ করা, জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা,  জনগণের সেবায় রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করা, কর ন্যায্যতা নিশ্চিত করা ও সম্পদের কর আরোপ করা ও বহুজাতিক করপোরেশনের কর ফাঁকি ও সম্পদ পাচার রোধ করা।

কমরেড বদরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের মোস্তফা আনোয়ার, জাহেদ ইকবাল খান, ফয়েজ হোসেন, লাভলি ইয়াসমিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়নের নামে ঋণের জালে জনগণকে বন্দী রাখার প্রতিবাদে রাস্তায় নামুন। তারা বলেন, স্পেনে বসেছে উন্নয়ন অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বের শাসকদের উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন। সম্মেলনের নাম ‘ফাইন্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট’-এটা শুনতে যতটা আশাব্যঞ্জক, বাস্তবতা ততটাই ভয়াবহ। এ সম্মেলনের পেছনে রয়েছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, জি-৭ রাষ্ট্রসমূহ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বহুজাতিক করেপারেট শক্তির চক্রবন্ধ। যারা ‘উন্নয়ন’ কথার আড়ালে বিশ্বজুড়ে ‘গ্লোবাল সাউথ’ জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে- ঋণের বোঝা, শোষণ ও করপোরেট লুটপাটের এক নয়া উপনিবেশিক ব্যবস্থা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ এশিয়ার নানা দেশে এই ‘তথাকথিত’ উন্নয়ন অর্থায়নের অর্থ হলো- কৃষি থেকে জমি কেড়ে নেওয়া, পানি ও বীজের ওপর করপোরেট নিয়ন্ত্রণ, শ্রমজীবীদের অধিকার খর্ব করা, বেসরকারিকরণ, বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে কাটছাঁট, প্রাকৃতিক সম্পদ বিক্রি করে ঋণ শোধ। উন্নয়নের নামে যা হচ্ছে, তা এক ভয়ংকর ঋণচক্র। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে আমাদের ভবিষ্যৎ হবে করপোরেট দাসত্বে বন্দি থাকা।

আয়োজিত সংগঠনগুলো হচ্ছে-এপিএমডিডি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, ইক্যুটিবিডি, জাতীয় হকার্স ফেডারেশন, এনআরডিএস, সিপিআরডি, এসএএপিই, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ কিষাণী সভা, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশন, বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতি, দলিত নারী উন্নয়ন সংস্থা, ইরেজার, ইয়ুথ ফর আপলিট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গিগ ওয়ার্কার্স অ্যাসোশিয়েশন, কান্দিভিটা সমউন্নয়ন মহিলা সমিতি (কসমস), গ্লোবাল লা থিংকার্স সোসাইটি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথমবারের মতাে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রেমিট্যান্স
  • পাকিস্তানকে ৩৪০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীন
  • এনবিআর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে আইএমএফ
  • কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করবে এনবিআর
  • উচ্চ সুদহার, খেলাপি ঋণ বিনিয়োগে প্রভাব ফেলছে
  • আইএমএফের ঋণের অর্থ এল, রিজার্ভ বাড়ল
  • ঋণ নয়, অধিকার চাই, প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা
  • রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি
  • প্রবাসী আয় ও বিদেশি ঋণে রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার কোটি ডলার