বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার পাঁচ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২৮ জুন) ও রবিবার (২৯ জুন) নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাস দিয়ে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম মনে করে তারা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্য ও নেতৃত্ব একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হয়ে পড়েছেন।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতারা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

ইসমাইল হোসেন, যুগ্ম-সদস্য সচিব সামিউল ইসলাম সিয়াম, মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মিলন, সিনিয়র সংগঠক মনিরুল ইসলাম শিমুল ও মুখপাত্র রিয়াদুল রিমন সরকার।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতাদের সবাই নিজ নিজ ফেসবুক পোস্টে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম মনে করে তারা এ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সংগঠনটির বেশিরভাগ সদস্য ও নেতৃত্ব একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের অনুসারী হয়ে পড়েছেন। ফলে সংগঠনের অরাজনৈতিক অবস্থান আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

আরো পড়ুন:

পদত্যাগপত্র পাঠালেন এনসিপির রাজশাহী জেলার প্রধান সমন্বয়কারী

আস্থা ভোটে হেরে গিয়ে পদত্যাগ করেছেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

একজন স্বাধীন ও অরাজনৈতিক মানসিকতার ছাত্র হিসেবে এ সংগঠনের সঙ্গে থাকা অসঙ্গতিপূর্ণ। তাই ব্যক্তিগত ও নৈতিক কারণে সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উল্লাপাড়ারা শাখার মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মিলন বলেন, “আমরা ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। পদত্যাগের মূল কারণ আমাদের ফেসবুক পোস্টে লেখা আছে। এর বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।”  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব ইয়াসিন তালুকদার রহিত বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। আমাদের কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। তবে, যদি মনে মনে কেউ কোনো দলকে পছন্দ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে বাধা দেবেন কি করে?”

তিনি বলেন, “পাঁচজন ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তারা কি কারণে পদত্যাগ করলেন সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। হয়তো কেউ তাদের ভুল বুঝিয়ে পদত্যাগ করিয়েছে।”  

সংগঠনের আহ্বায়ক রিফাত বিন জামান বলেন, “ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পাঁচজন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগের কোনো চিঠি আমাদের দেয়নি। ফেসবুকে তারা যে অভিযোগ এনেছেন, তা সত্য নয়। আমাদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম। কেউ যদি আমাদের সংগঠন ছেড়ে কোনো রাজনৈতিক দলে যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আমাদের বাধা দেওয়ার কোনো কারণ নেই।”

ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ র জন ত ক জন ত ক ম উল ল প ড় ল ইসল ম স গঠন র য গ কর আম দ র ফ সব ক সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ ও তাদের দোসররা

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি বলেছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘বিচারকাজে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। প্রশ্নের জবাব ও সূচনা বক্তব্য দেন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল। এ সময় ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদল, ফোরামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, গ্রেপ্তারের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হট্টগোল সৃষ্টি করে বিচারকার্যের পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।

সংবাদ সম্মেলন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ফ্যাসিস্ট রেজিমের যাঁরা তল্পীবাহক আছেন, তাঁরা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট রেজিমের প্রধান পলাতক শেখ হাসিনা। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনজীবীরা ও দেশের মানুষ মনে করছে, সেই বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত ও প্রতিহত করার একটা ট্রায়াল (মহড়া) ছিল গত ১১ আগস্ট। অর্থাৎ শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর যিনি গণতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন, খায়রুল হকের জামিন চাওয়ার নামে আইনজীবীরা যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেকেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের দোসর। তাঁরা সেদিন আদালতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রমাণ করার অপপ্রায়স চালিয়েছিলেন যে আদালত সঠিকভাবে কাজ করছেন না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘খায়রুল হকের কীর্তি বা কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ জানে। তিনি আজকে আইনের আওতায় এসেছেন।…তাঁর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি। বিচার চাই যেন ভবিষ্যতে আর নতুন কোনো খায়রুল হক এই জুডিশিয়ারি থেকে সৃষ্টি না হয়। আর জামিনের বিষয়ে অবশ্যই সবাই চাইতে পারে। কিন্তু জামিন চাওয়ার আবেদন সামনে নিয়ে আদালতের পরিবেশ নষ্ট করা, আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা—তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।’

লিখিত বক্তব্যে আদালতের ভেতরে বিশৃঙ্খলাকারী আওয়ামী লীগের দোসর আইনজীবী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানিয়েছে ফোরাম। একই সঙ্গে আদালতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করে সংগঠনটি।

উন্মুক্ত আদালতে বিচারপতিদের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি আদালতের প্রতি অবহেলা এবং সহকর্মী আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলা পেশাগত অসদাচরণের শামিল উল্লেখ করে আইনজীবীদের এই অপেশাদার আচরণের বিরুদ্ধে ‘পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচার বিধিমালা’ অনুসারে ‘ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন’ গ্রহণ করে সনদ বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রতিও দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এই সংগঠনটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ ও তাদের দোসররা
  • জবির ছাত্রী হলে মেডিকেল সেবা চালুর উদ্যোগ
  • বাংলাদেশে থাকা ৭১ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর পাশে মাস্তুল ফাউন্ডেশন