সাকা-মার্টিনেলির জোড়া গোল আর্সেনালের স্বস্তির জয়
Published: 2nd, October 2025 GMT
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে বুধবার রাতে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ঘরের মাঠ এমিরেটসে ২-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা। ম্যাচের শুরুতে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির সহজ গোলেই লিড পায় লন্ডন জায়ান্টরা। তবে ব্যবধান বাড়াতে দেরি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দুশ্চিন্তার ছায়া নেমে এসেছিল গ্যালারিতে। শেষ মুহূর্তে বুকায়ো সাকার গোল আর্সেনালকে চাপমুক্ত করে এবং জয় নিশ্চিত করে।
ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারত আর্সেনাল। মাইলস লুইস-স্কেলির নিখুঁত ক্রস থেকে মার্টিনেলির হেড গোলমুখে গেলেও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। তবে ১২ মিনিটেই গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। ওডেগার্ডের থ্রু–পাস থেকে ভিক্টর গিয়োকারেস শট নেন, গোলরক্ষক কোস্তাস জোলাকিস তা ঠেকালেও বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। রিবাউন্ডে সহজেই জালে পাঠান মার্টিনেলি।
আরো পড়ুন:
হালান্ডের জোড়া গোলের পরও ম্যানিসিটির নাটকীয় ড্র
রামোসের শেষ মুহূর্তের গোলে বার্সেলোনাকে হারাল পিএসজি
এরপরও খেলার ধারা একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে আর্সেনাল। কিন্তু গোল পেতে ব্যর্থ হয় বারবার। এ সময়ে অলিম্পিয়াকোসও একবার সমতায় ফেরার মতো সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল। সাবেক উলভস ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল পোডেন্সের ভয়ংকর ভলিটি আটকে দেন দাভিদ রায়া। অসাধারণ এক হাত বাড়িয়ে গোল রুখে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলা চলে।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে জালে বল জড়াতে পারেনি আর্সেনাল। গিয়োকারেসের শট সামান্য বাইরে যায়, ট্রসার্ডও সহজ সুযোগ মিস করেন। দ্বিতীয়ার্ধেও একই চিত্র। আক্রমণ একের পর এক, কিন্তু গোলের দেখা নেই। এমনকি ৬০ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ডেক্লান রাইস দলকে কিছুটা প্রাণ দিলেও সেখান থেকেও সাফল্য আসেনি।
অন্যদিকে অলিম্পিয়াকোসও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল সমতায় ফেরার। এল কাবির হেড রায়া ঠেকালেও ফিরতি বল থেকে চিকুইনহো জালে পাঠান। তবে অফসাইডের কারণে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা।
সময় গড়াচ্ছিল, চাপ বাড়ছিল। তাই শেষদিকে আর্তেতা মাঠে নামান সাকা ও ইবেরেচি এজেকে। তখনও যেন কিছুটা নার্ভাস দেখাচ্ছিল এমিরেটসকে। এরই মধ্যে ইনজুরিতে মাঠ ছাড়তে হয় ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েলকে, যা উদ্বেগ আরও বাড়ায়।
তবে শেষ হাসি হাসলেন সাকাই। যোগ করা সময়ে ওডেগার্ডের পাস থেকে বক্সে বল পেয়ে ইংলিশ উইঙ্গার শক্তিশালী শটে গোলরক্ষক জোলাকিসের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল পাঠান জালে। ২-০ গোলের ব্যবধানে আর্সেনাল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এবারের অভিযানে টানা দুই ম্যাচে জিতে দুর্দান্ত শুরু করল আর্সেনাল। অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে জয়টি হয়তো বড় ব্যবধানে হতে পারত, যদি সুযোগগুলো কাজে লাগানো যেত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাকা–মার্টিনেলির জোড়াতেই তিন পয়েন্ট পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো লন্ডনের ক্লাব।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল অল ম প য় ক স আর স ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইতালিকে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে
আরলিং হালান্ড যেন নিজেই ইতিহাস লিখে চলেছেন। দুই মিনিটের ব্যবধানে তার দুর্দান্ত দুই গোল ইতালিকে সান সিরোতে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে নরওয়েকে নিয়ে গেল ১৯৯৮ সালের পর তাদের প্রথম বিশ্বকাপে। ম্যানচেস্টার সিটির এই সুপারস্টারের গ্রুপপর্বে গোলসংখ্যা দাঁড়াল ১৬। যা পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানদোভস্কির রেকর্ডের সমান।
‘গ্রুপ–আই’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়ালিফাই করতে নরওয়ের সামনে ছিল শুধু গণিতের হিসাব মেলানোর অপেক্ষা। তাদের বাদ দিতে ইতালির দরকার ছিল অবাস্তব এক নয় গোলের ব্যবধান। যা মাঠে সম্ভব হয়নি। তাই দীর্ঘ ২৮ বছর পর বিশ্বমঞ্চে ফিরতে যাচ্ছে নরওয়ে। আত্মবিশ্বাসও আকাশছোঁয়া।
আরো পড়ুন:
আসিফের মন্তব্যে বাফুফের কাছে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ
অদম্য স্পেন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়
গত জুনে ইতালিকে ৩–০ গোলে হারানো ম্যাচটাই শেষ পর্যন্ত লুচিয়ানো স্পালেত্তির চাকরি শেষ করে দেয়। তার উত্তরসূরি জেনারো গাত্তুসো এবার প্লে-অফের প্রস্তুতি নেবেন।
গাত্তুসো তার সেরা খেলোয়াড়দেরই দলে ফেরান। মোলদোভার বিপক্ষে খেলা দলে কেবল জিয়ানলুকা মানচিনি টিকে থাকেন। অন্যদিকে নরওয়ের একমাত্র পরিবর্তন, এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলা অস্কার ববের জায়গায় নামেন ক্রিস্টিয়ান থরস্টভেট।
প্রথমার্ধজুড়ে ইতালি ছিল আধিপত্যে। ফেদেরিকো দিমারকোর ভলিটি সামান্য বাইরে গেলে ১১তম মিনিটে আলো ছড়ান মাত্র ২০ বছর বয়সী ফ্রানচেস্কো পিও এসপোসিতো। দুর্দান্ত টার্ন আর নিখুঁত ফিনিশ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন তিনি।
এরপর এসপোসিতো আরেকটি হেড বাইরে পাঠালেও দুই দলই তেমন পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। মাঝপথে রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে গাত্তুসো কার্ডও দেখেন।
বিরতির পর যেন নতুন উদ্যমে মাঠে নামে নরওয়ে। আলেকজান্ডার সর্লোথের শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর চুলের অনন্য সাজে পরিচিত জুলিয়ান রাইয়েরসনও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।
অবশেষে ৬৩তম মিনিটে গোল মেলে। সর্লোথের পাস থেকে দারুণ ড্রাইভে দূর কোণে বল পাঠান আন্তোনিও নুসা। জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা নিকটের পোস্টে চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি।
এরপর নুসার আরেকটি নিশ্চিত গোল দোনারুম্মা ঠেকালেও ম্যাচের মঞ্চ তখন তৈরি হালান্ডের জন্য। মানচিনির ঘন পাহারা ভেদ করেই তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন।
৭৮ মিনিটে বদলি নেমে চমৎকার ফুটওয়ার্কে বল এগিয়ে দেন অস্কার বব। সেখান থেকেই ভলিতে দুর্দান্ত ফিনিশ করেন হালান্ড। মাত্র এক মিনিট পর থরস্টভেটের ডান দিকের ক্রসে আবার গোল। ঠিক জায়গায় ঠিক সময়ে পৌঁছে সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান।
শেষ দিকে মাতেও পোলিতানোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেলেও ইতালির আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। যোগ করা সময়ে উলভসের ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লার্সেন ডান দিক দিয়ে দারুণ দৌড়ে মানচিনিকে কাটিয়ে বক্রশটে দোনারুম্মাকে পরাস্ত করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-১।
রাতটা তাই নরওয়ের। হালান্ডের জোড়া গোলের উৎসবে তারা ফিরল বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে, দুই যুগের বেশি সময় পর।
ঢাকা/আমিনুল