সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান ভারতের প্রখ্যাত গায়ক জুবিন গার্গ। একাধিক ভাষায় সমান দক্ষতায় গান গেয়ে কোটি ভক্তের হৃদয় জয় করেছিলেন এই সংগীতশিল্পী।

বাংলাদেশি সিনেমায়ও প্লেব্যাক করেছেন জুবিন গার্গ। চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’ সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট’ জুবিনের গাওয়া। এ গান দিয়েই মূলত ঢালিউড তারকা অনন্ত জলিল ভক্তদের কাছে অন্যরকম পরিচিতি লাভ করেন। 

আরো পড়ুন:

গোপন বিয়ের ছবি প্রকাশ না করার কারণ জানালেন রানী

ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন

প্রিয় শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে অনন্ত জলিল বলেন, “দেশের ভার্সিটিগুলোতে ‘ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট’ গানটা দারুণ জনপ্রিয় ছিল। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাইত, নাচ করত। দেশের সব কলেজের ছেলে-মেয়েদের কাছে গানটি মানে ছিল এক উন্মাদনা। জুবিন গার্গের কণ্ঠেই এই গান আমার জনপ্রিয়তাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছিল।” 

আবেগঘন কণ্ঠে অনন্ত জলিল বলেন, “সবাই জানে অনন্ত জলিলের গান ‘ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট’। কিন্তু এর পেছনে যিনি ছিলেন সেই জুবিন গার্গ আজ আর নেই। আমি ব্যথিত, আমি ঠিক ভুল করতে পারছি না। যেখানে যেতাম, বিদেশেও, মানুষ আমাকে এই গান শোনাতে বলত কিংবা গানটির সঙ্গে নাচতে বলত। জুবিন গার্গের গাওয়া এই গানই আমাকে সত্যিকারের ফেমাস করেছে।” 

জুবিন গার্গের প্রয়াণে শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশের সংগীতপ্রেমীরাও গভীর শোকাহত। তার কণ্ঠের সুর স্মৃতির ভুবনে অমলিন হয়ে থাকবে বহুদিন।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ