কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতুর সড়ক সংস্কারের নামে ৬৫ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাসুদ করিম এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজের টেন্ডার পায়। চলতি মাসের শুরুতে সংস্কার কাজ শেষ করার দাবি করা হলেও মাত্র ১৫ দিনের মাথায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত হয়েছে। এতে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের কুমারখালী অংশে অবস্থিত গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে পণ্যবাহী ট্রাক, বাস ও ছোট যানবাহনের অন্যতম পথ এটি। কিন্তু সড়কের বেহাল দশায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। 

বাইক চালক শামছুল আলম বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে সংস্কার করা রাস্তাটি এখন আগের চেয়েও খারাপ। বাইক নিয়ে চলাচল করাই দায়।’’ 

ট্রাকচালক জামিল হোসেন বলেন, ‘‘এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক চালানো মানে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলা।’’ আর অটোচালক আক্কাস বলেন, ‘‘আমার অটো উল্টে যাত্রীরা আহত হয়েছে। পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করি।’’ 

স্থানীয়রা জানান, পিচ ও পাথর দিয়ে নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছে। কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে পুরো প্রকল্পের অর্থ লুটে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপ-প্রকৌশলী লিটন আহমেদ বলেন, ‘‘কাজে কিছু ত্রুটি হয়েছে, তবে অনিয়ম হয়নি।’’ তবে পুরো দায় তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী ও আবহাওয়ার ওপর চাপিয়ে দেন।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাসুদ করিম এন্টারপ্রাইজের মালিকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ‘‘বৃষ্টির কারণে পিচ উঠে গেছে। এখানে ঠিকাদারের দোষ নেই। সরকার এ প্রকল্পে আর বরাদ্দ দেবে না।’’

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জামালপুর শহরে সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে ঢোকে পানি, দুই শতাধিক পরিবারের ভোগান্তি

জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রার পলাশতলা এলাকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বুধবারবেলা দুইটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, জলাবদ্ধতায় দুই শতাধিক পরিবার চরম দুর্ভোগে আছেন।

‘পলাশতলার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রা রেলক্রসিংয়ের সামনে পলাশতলা এলাকাটির অবস্থান। জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক থেকে একটি সংযোগ সড়ক এলাকাটির দিকে ঢুকেছে। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের ভাষ্য, বর্ষা মৌসুমে তাঁদের বানভাসির মতো বসবাস করতে হয়। এলাকার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান তাঁরা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকাটিতে সামান্য বৃষ্টি হলে আঙিনা উপচে কয়েকটি ঘরে পানি ঢোকে। পানি মাড়িয়ে যাবতীয় কাজ সারতে হয়। যেকোনো কাজে বাইরে গেলে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি মাড়িয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। ফলে তাঁরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় চার বছর ধরে এমন অসহনীয় জলাবদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে তাঁদের বসবাস করতে হচ্ছে।

শহিদুল্লাহ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, গত চার বছর ধরে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বানভাসির মতো বসবাস করছেন। জলাবদ্ধতার সমস্যা নিয়ে বহুবার পৌরসভাসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। দীর্ঘ সময় ধরে পানি থাকায়, অনেকের হাত-পায়ে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে।

দ্রুত সময়ের মধ্যে পলাশতলার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক এ কে এম আবদুল্লাহ-বিন-রশিদ। তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় আমি নিজে গিয়ে দেখে আসছি। যেসব স্থানে পানি আটকে আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই এলাকার পানি সরাতে ইতিমধ্যে পৌরসভার অন্য কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ