যবিপ্রবির সড়কে বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে
Published: 5th, August 2025 GMT
৩৫ একরের ছোট ক্যাম্পাস যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। গবেষণায় এগিয়ে থাকা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন সমস্যার শেষ নেই। তার মধ্যে অন্যতম, খানা-খন্দে ভরা সড়কগুলো।
দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে যবিপ্রবির অভ্যন্তরীন রাস্তাগুলোর এ বেহাল দশা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে যাতায়াতের সময় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রধান ফটক, মসজিদ, লাইব্রেরি, ডরমিটরি ও উপাচার্যের বাস ভবন এলাকার রাস্তায় ছোট-বড় অনেক গর্ত হয়ে গেছে। পুরো রাস্তার অধিকাংশ স্থানে বিটুমিন, পাথর উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ছাত্রদের মুন্সী মেহেরুল্লাহ হল এবং শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে যাওয়ার রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সেখানে ভবন নির্মাণের দোহাই দিয়ে রাস্তার কাজে হাত দেয়নি প্রশাসন। আবার ভবন নির্মাণের কাজ অনেক আগে শেষ হলেও রাস্তা সংস্কারের কাজে মনোযোগ দিতে দেখা যায়নি।
আরো পড়ুন:
‘নেতা হইছোস? সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করো?’
ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা আয়োজন
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগের মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমরা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গর্বিত হলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলোর করুণ অবস্থা আমাদের প্রতিনিয়ত হতাশ করে। বৃষ্টি হলে অনেক রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিশেষ করে মসজিদের সামনের প্রধান রাস্তার মোড়টি অনেক ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “রাস্তায় অসংখ্য গর্ত ও খোয়া উঠে যাওয়ার কারণে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়, বিশেষ করে যারা মোটরসাইকেলে চলাচল করে। এমনকি হেঁটে চললেও বিপদে পড়তে হয়। রাস্তার উঠে যাওয়া খোয়া বা ইটে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়া যেন এখানে সাধারণ ঘটনা।”
তিনি আরো বলেন, “একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু একাডেমিক উৎকর্ষ দিয়ে পরিচিত হয় না, এর অবকাঠামোগত পরিবেশও একটি বড় দিক। তাই আমাদের বিনীত অনুরোধ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত রাস্তা সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যাতে আমরা নিরাপদ, স্বস্তিদায়ক ও মর্যাদাসম্পন্ন একটি শিক্ষাজীবন কাটাতে পারি।”
ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তপু বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো অবস্থা অনেক খারাপ। দীর্ঘদিন রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয় না বলে রাস্তার কার্পেটিং উঠে ছোট বড় অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে আরো করুণ হয়ে পড়ে, সামান্য বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা চলাচলের ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করে। সমস্যার বিষয়টি বিভিন্ন সময় উপাচার্য স্যারকে শিক্ষার্থীরা জানালেও এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী অধ্যাপক ড.
ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ড, গৃহবধু নিহত
নরসিংদীতে অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক গৃহবধু নিহত হয়েছেন। ঘটনার সময় দগ্ধ তার ২ শিশু সন্তান গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন।
নিহত গৃহবধু আকলিমা বেগম (৩০) নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ইউনিয়নের আলগী গ্রামের এমআর এমরানের স্ত্রী। তিনি স্থানীয় একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করতেন।
অভিযোগ রয়েছে, নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপক মাকসুদুর রহমানের পরোক্ষ মদদে তার নিজ এলাকা নুরালাপুর ও আলগী গ্রামে অবৈধ গ্যাস সংযোগের ছড়াছড়ি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের নেই কোনো পদক্ষেপ।
আরো পড়ুন:
দায়বদ্ধতা থেকে সাজিদের ভিসেরা রিপোর্ট দ্রুত নেওয়ার চেষ্টা করেছি: এআইজি আশরাফ
জুলাই গণঅভ্যুত্থান: সিরাজগঞ্জে ৪ আগস্ট নিহত হয় ২৯ জন
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হয়।
এর আগে, সোমবার (৪ আগস্ট) রাত ১১টায় নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ইউনিয়নের আলগী গ্রামের নিজ বসতঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালানোর সময় লিকেজ থেকে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে গৃহবধু আকলিমা বেগম ও তার দুই সন্তানে সিয়াম (১২) ও সামিয়া (১৪) দগ্ধ হয়।
স্থানয়ীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আকলিমা বেগম রাতের খাবার গরম করার জন্য চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করেন। সে সেময় দিয়াশলাই জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘরে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই সন্তানসহ আকলিমা আগুনে দগ্ধ হন।
পরে স্থানয়ীরা তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে আকলিমার মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপক মাকসুদুর রহমানের পরোক্ষ মদদে তার নিজ এলাকা নরসিংদীর মাধবদী নুরালাপুর ও আলগী এলাকায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে আসছে একটি চক্র। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এলাকাবাসী কয়েকবার নরসিংদী তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানায়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আর সঠিক সময় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, সোমবার (৪ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে আগুন লাগায় শহর ও আশেপাশে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। সারাদিন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ জেলার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গ্রাহক চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এ বিষয়ে কথা বলতে নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ব্যাবস্থাপক মাকসুদুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “অগ্নিদগ্ধে নিহত আকলিমার লাশ এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। খোঁজ খবর নিচ্ছি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/হৃদয়/মেহেদী