সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৯ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জাতীয় শ্রমিক লীগ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

জাহাঙ্গীর আলম ব্যাপারী (৬২), ওয়ারী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা (৪২), ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ খান (৫৪), তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান (৪৯), রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোক্তার হোসেন (৩৩), ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আলম হাওলাদার (৫০), চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন (৪৮), খিলগাঁও থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক উদয়ন শার্নাল মাধব এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মো. রিপন (৩৮)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে মো. রিপনকে খিলগাঁও থানার পুলিশ এবং বাকিদের ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

ডিবির বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. জাহাঙ্গীর আলম ব্যাপারী, স্বামীবাগ এলাকা থেকে সেলিম রেজা ও সাখাওয়াত হোসেন মিঠুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ওয়ারী বিভাগের একটি টিম। আলাদা আরেকটি অভিযানে ডিবি সাইবার দক্ষিণ বিভাগ রাত সাড়ে ১১টার দিকে বনশ্রী এলাকা থেকে নাজমুল হাসান পলাশ এবং রাত ১২টার দিকে আবুল কালাম আজাদ খানকে গ্রেপ্তার করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই দিনে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে মোক্তার হোসেন এবং সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে লালবাগ এলাকা থেকে আলম হাওলাদারকে গ্রেপ্তার ডিবি মতিঝিল বিভাগের একটি টিম। একই দিন অপর এক অভিযানে সবুজবাগ থেকে উদয়ন শার্নাল মাধবকে গ্রেপ্তার করে ডিবি সাইবার বিভাগের একটি টিম।

খিলগাঁও থানার বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে খিলগাঁও থানার গোড়ান এলাকা থেকে মো. রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব ঘোচাতে আলোচনায় ৯ দল

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব ঘোচাতে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে ৯টি রাজনৈতিক দল। এ উদ্যোগে গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দলের সঙ্গে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও গণ অধিকার পরিষদ। আজ বুধবার দুপুরে এসব দলের নেতারা সংকট সমাধানে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন।

গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দল হলো গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জেএসডি ও ভাসানী জনশক্তি পার্টি। এর সঙ্গে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতারা আজ দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেছেন। আলোচনার পর বিভিন্ন দলের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।

গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দলের পক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম। তিনি বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিতে বলেছে। কোন পথে বিষয়টার সমাধান করা যায়, তা নিয়ে মতবিনিময়ের জন্য আজকে আমরা বসেছি। কিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছিও এসেছি। অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলা অব্যাহত রাখব। সংস্কার বাস্তবায়ন প্রশ্নে কাছাকাছি আসার চেষ্টা করব।’ আজকের আলোচনায় অগ্রগতি আছে বলে উল্লেখ করলেও তা এখনই বলতে চাননি হাসনাত কাইয়ূম।

আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা কেন এখনই খোলামেলা বলা হচ্ছে না—এর ব্যাখ্যা দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, একেক দল একেক ফর্মুলা প্রস্তাব করে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে। এখন আমরা একটা ফর্মুলা বললে অহেতুক বিতর্ক তৈরি হবে, যেটা আমরা এড়াতে চাই। সংস্কার নিয়ে সংকট সমাধানে আমরা অন্য দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। তবে সরকার চাইলেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে। কারও সঙ্গে তাদের কথা বলা দরকার হলে বলতে পারবে। আমরা কোনো উদ্যোগ না নিলে জনগণ বলত, আপনারা কিছু করলেন না। আশা করছি, ইনশা আল্লাহ একটা সুষ্ঠু সমাধান হবে। এটা করতেই হবে।’

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এনসিপি সব সময় আলোচনার পক্ষপাতী। সবার সঙ্গে মিলে যেকোনো সংকট দূরীভূত করতে আজকে এ আলোচনা। অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে। সংস্কার নিয়ে সংকট যেন সুষ্ঠুভাবে সমাধান হয়, এ ব্যাপারে সরকারকে সাহসী ভূমিকা নিতে হবে।

বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন দলের সঙ্গে ৯ দল আলোচনায় বসবে বলে জানান গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্যে এসে আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারব বলে আশা করি।’

৯ দলের আজকের আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মুখপাত্র ফারুক হাসান, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ