রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, প্রায় ২ ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ
Published: 10th, August 2025 GMT
সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে এবার যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর ও ধোপাকান্দি এলাকায় পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। দুপুর পৌনে একটা পর্যন্ত তাঁরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে নানা রকম স্লোগান দিচ্ছিলেন। এতে মহাসড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এদিকে সেখানে এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতারা সেখানে এসে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদন হয়নি। এ বিষয়ে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে সরকারের কাছে দাবি, হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানিয়ে আসছেন। গত ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ডিপিপির দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
চলমান কর্মসূচির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। পরপর বেশ কয়েক দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই মহাসড়কেই পরপর কয়েক দিন দুই ঘণ্টাব্যাপী বিভিন্ন বিভাগের প্রতীকী ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে মানববন্ধন করে মহাসড়কে অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের হাটিকুমরুল এলাকাটি যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধ করে রাখায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু জরুরি যানবাহন রায়গঞ্জ দিয়ে বিকল্প সড়কে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মাথায় রেখে নকশায় গুরুত্ব প্রদান
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে মাথায় রেখে স্থাপনার নকশা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। স্থাপত্য শাখার নোবেল হিসেবে খ্যাত আগা খান স্থাপত্য পুরস্কার বিজয়ী এই স্থপতি বলেছেন, “একজন শিল্পী একটি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন, আর তার শিল্পকর্ম তাকে সারা জীবন বাঁচিয়ে রাখে।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিন’ আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিটুইন ইরোশন অ্যান্ড ইমারজেন্সি’ শিরোনামে উপস্থাপনায় মেরিনা তাবাসসুম তার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “স্থাপত্য কেবল ভবন নির্মাণ নয়, এটি সংস্কৃতি, সমাজ ও মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত একটি জীবন্ত শিল্প। একজন স্থপতির দায়িত্ব শুধু কাঠামো তৈরি নয়, বরং এমন কিছু সৃষ্টি করা যা মানুষের জীবন, পরিবেশ ও সময়ের সঙ্গে কথা বলে।”
মেরিনা তাবাসসুম বলেন, “আমাদের কাজ যেন এই মাটির বাস্তবতার সঙ্গে মিশে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ণ এবং মানুষের জীবনধারার পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্থাপত্যের ভাষা বদলাতে হবে।”
তিনি যোগ করেন, “চরাঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বাঁচে। তাদের জীবনযাপন ও বাসস্থানকে টেকসইভাবে গড়ে তুলতে স্থাপত্যের নতুন ধারণা প্রয়োগ জরুরি।”
মেরিনা তাবাসসুম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং পুনর্বাসনযোগ্য ঘর তৈরিতে তার দল ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছে। এসব প্রকল্পে স্থানীয় মানুষকে যুক্ত করে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী নকশা তৈরি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু স্থাপনা নির্মাণ নয়, বরং মানুষের সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য সৃষ্টি করা। চরাঞ্চলের মানুষকে আত্মনির্ভর করে তুললেই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিনের সিনিয়র অ্যাডভাইজর, আরকিকানেক্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্থপতি জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্থাপত্য আজ বিশ্বে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছে। মেরিনা তাবাসসুমের মতো স্থপতিরা আমাদের গর্ব এবং নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।”
পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন স্থপতি মৌসুমী আহমেদ। স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার রিয়াদের সঞ্চালনায় পরে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর জয়নাব ফারুকী আলী, স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল ও প্রফেসর ফুয়াদ হাসান মল্লিক।
সমাপনী বক্তব্যে বিসিএমইএ প্রেসিডেন্ট ও মুন্নু সিরামিকের ভাইস চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম বলেন, “দেশের স্থাপত্য ও সিরামিক শিল্প একে অপরের পরিপূরক। শিল্প, শিক্ষা ও গবেষণার সমন্বয় ঘটিয়ে এই খাতকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে দেশের প্রখ্যাত স্থপতি, প্রকৌশলী, সিরামিক শিল্প উদ্যোক্তা, শীর্ষ কর্মকর্তা ও সিনিয়র সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/মাসুদ