কেরানীগঞ্জে প্রস্তাবিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের স্টেশন সরানোর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 10th, August 2025 GMT
ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঢাকা ইস্ট–ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য প্রস্তাবিত স্টেশন জনবসতিপূর্ণ গ্রাম থেকে অন্যত্র সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ঢাকা–মাওয়া মহাসড়কে এ অবরোধে কয়েক শ মানুষ অংশ নেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে মহাসড়ক।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি বিক্ষোভকারীদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। তাঁর এ আশ্বাসে পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের একটি নির্মাণাধীন প্রকল্প। এটি ঢাকা-বাংলাবান্ধা মহাসড়ক ও ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ককে ঢাকা-টেকনাফ মহাসড়কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে। এই মেগা প্রকল্পের অংশ হিসেবে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় একটি স্টেশন বা হাব নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই স্থানে ১৩টি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বসবাস করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এখানে স্টেশন নির্মিত হলে তাঁরা পৈতৃক ভিটেমাটিছাড়া হবেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে তেঘরিয়া ইউনিয়ন ইতিমধ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য সবচেয়ে বেশি জমি হারিয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সেনা ক্যাম্প, র্যাব-১০ সদর দপ্তর, রেললাইনসহ নানা প্রকল্পের জন্য শত শত একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এতে হাজারো পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের জন্য প্রায় দুই একর জমি লাগবে। এতে নতুন করে বহু পরিবার ভিটেমাটি হারাবে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
রাজেন্দ্রপুর বসতভিটা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক নুর হোসেন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আমাদের বাপ-দাদার বসতভিটা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠসহ সর্বস্ব হারাতে হবে। আমরা চাই, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হোক। তবে সেটি যেন জনস্বার্থবিরোধী না হয়। প্রস্তাবিত জায়গা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার পূর্বদিকে পয়েন্টটি সরিয়ে নিলেই গ্রামগুলো রক্ষা পাবে।’
রাজেন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা জেলা (দক্ষিণ) ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লা দাবি করেন, ‘নকশা অনুযায়ী প্রকল্পটি বিগত সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের মালিকানাধীন আবাসন প্রকল্প প্রিয়প্রাঙ্গণের ভেতর দিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে তা পরিবর্তন করে আমাদের গ্রামগুলোর ওপর চাপানো হয়েছে। আমাদের দাবি, প্রস্তাবিত স্টেশনটি সাধারণ মানুষের ভিটেমাটি থেকে সরিয়ে ওই আবাসন প্রকল্পের ভেতরে স্থাপন করা হোক।’
রাজেন্দ্রপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা কৃষক জহিরুল হক বলেন, ‘যে গ্রামগুলোর ওপর দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে, সেখানে তিন ফসলি জমিও আছে। আমরা ওই জমিতে চাষাবাদ করে ঘর-সংসার চালাই। জমি হারালে রুটিরুজির সব পথ বন্ধ হয়ে যাবে। কৃষক ও গ্রামবাসীর স্বার্থে প্রকল্পটি অন্য জায়গায় পাস করা হোক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত প রকল প র র এল ক র জন য অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের নিন্দা জানাচ্ছেন রাষ্ট্রদূতরা
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের গাজা দখলের পরিকল্পনার নিন্দা জানানো শুরু করেছেন পরিষদে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা। রবিবার অধিবেশন শুরুর পরপরই তারা নিন্দা জানানো শুরু করেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘বেপরোয়াভাবে শত্রুতা তীব্রতর করার পরিবর্তে সক্রিয় কূটনীতির বদৌলতে’ হামাস ১৪০ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।
পলিয়ানস্কি বলেছেন, “ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সহিংসতা আরো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে ইসরায়েলি জিম্মিদের নিরাপত্তা এবং জীবন বিপন্ন হয়েছে।”
তিনি ইসরায়েলকে গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার জন্য অভিযুক্ত করে বলেছেন, “এই অমানবিক হত্যাকাণ্ড শেষ হওয়ার আগে আরো কত ফিলিস্তিনিকে মারতে হবে?”
জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং জানিয়েছেন, গাজার পরিস্থিতি ‘আরো বিপজ্জনক দিকে বিকশিত হচ্ছে।’
তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ‘গাজা দখলের যেকোনো প্রচেষ্টার দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করতে হবে’ এবং গাজা শহরে সামরিক আক্রমণ পুনর্নবীকরণের ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাতে হবে।
ফু বলেছেন, “এই সমস্যার সমাধানের উপায় সামরিক নয়।”
ঢাকা/শাহেদ