মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হংকংয়ে কারাবন্দী ‘মিডিয়া মোগল’ জিমি লাইকে রক্ষা করতে তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এতে খুশি না হলেও তিনি তা করবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প এ কথা বলেছেন।

ফক্স নিউজ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তাঁকে (লাই) রক্ষা করার জন্য যা কিছু করা দরকার তার সব কিছুই আমি করতে যাচ্ছি। দেখি আমরা কী করতে পারি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবকিছু করব।’

৭৭ বছর বয়সী লাইয়ের বিরুদ্ধে হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী বিষয়বস্তু প্রকাশের ষড়যন্ত্র করার আলাদা একটি অভিযোগও আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে লাই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

ফক্স নিউজ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তাঁকে (লাই) রক্ষা করার জন্য যা কিছু করা দরকার, তার সব কিছুই আমি করতে যাচ্ছি। দেখি আমরা কী করতে পারি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবকিছু করব।

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ১ হাজার ৫০০ দিনের বেশি সময় ধরে নির্জন কারাবাসে আছেন লাই।

আরও পড়ুনহংকংয়ের ধনকুবের জিমি লাইকে কারাদণ্ড১৬ এপ্রিল ২০২১

ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেন, লাই হংকংয়ে ‘চীনবিরোধী অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের এক প্রধান পরিকল্পনাকারী ও অংশগ্রহণকারী’ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘মামলা-মোকদ্দমাকে অজুহাত করে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের শক্তির নাক গলানো বা হংকংয়ের আইন ও বিচারব্যবস্থাকে ক্ষতি করার ঘোর বিরোধিতা জানাচ্ছি আমরা।’

আরও পড়ুনমিডিয়া মোগল জিমি লাইয়ের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড১০ ডিসেম্বর ২০২২

ট্রাম্প বলেন, বাণিজ্য ও শুল্ক নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে তিনি লাইয়ের বিষয়টি উত্থাপন করবেন।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পরস্পরের পণ্যে তিন অঙ্কের শুল্ক আরোপ এড়াতে আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতির মেয়াদ বাড়িয়েছে। এর পরদিন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, আগামী দুই–তিন মাসের মধ্যে দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক কর্মকর্তারা আবারও বৈঠকে বসবেন। সেখানে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ ও তাদের দোসররা

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি বলেছে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘বিচারকাজে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। প্রশ্নের জবাব ও সূচনা বক্তব্য দেন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল। এ সময় ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদল, ফোরামের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, গ্রেপ্তারের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও তদন্তাধীন মামলা প্রত্যাহারে আবেদন শুনানিকালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতারা আদালতে অপেশাদার আচরণ করেছেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হট্টগোল সৃষ্টি করে বিচারকার্যের পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা।

সংবাদ সম্মেলন ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ফ্যাসিস্ট রেজিমের যাঁরা তল্পীবাহক আছেন, তাঁরা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট রেজিমের প্রধান পলাতক শেখ হাসিনা। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনজীবীরা ও দেশের মানুষ মনে করছে, সেই বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত ও প্রতিহত করার একটা ট্রায়াল (মহড়া) ছিল গত ১১ আগস্ট। অর্থাৎ শেখ হাসিনার অন্যতম দোসর যিনি গণতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন, খায়রুল হকের জামিন চাওয়ার নামে আইনজীবীরা যাঁরা ছিলেন, প্রত্যেকেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের দোসর। তাঁরা সেদিন আদালতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রমাণ করার অপপ্রায়স চালিয়েছিলেন যে আদালত সঠিকভাবে কাজ করছেন না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘খায়রুল হকের কীর্তি বা কার্যক্রম সম্পর্কে বাংলাদেশ জানে। তিনি আজকে আইনের আওতায় এসেছেন।…তাঁর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করি। বিচার চাই যেন ভবিষ্যতে আর নতুন কোনো খায়রুল হক এই জুডিশিয়ারি থেকে সৃষ্টি না হয়। আর জামিনের বিষয়ে অবশ্যই সবাই চাইতে পারে। কিন্তু জামিন চাওয়ার আবেদন সামনে নিয়ে আদালতের পরিবেশ নষ্ট করা, আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা—তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।’

লিখিত বক্তব্যে আদালতের ভেতরে বিশৃঙ্খলাকারী আওয়ামী লীগের দোসর আইনজীবী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি দাবি জানিয়েছে ফোরাম। একই সঙ্গে আদালতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করে সংগঠনটি।

উন্মুক্ত আদালতে বিচারপতিদের সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি আদালতের প্রতি অবহেলা এবং সহকর্মী আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলা পেশাগত অসদাচরণের শামিল উল্লেখ করে আইনজীবীদের এই অপেশাদার আচরণের বিরুদ্ধে ‘পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচার বিধিমালা’ অনুসারে ‘ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন’ গ্রহণ করে সনদ বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রতিও দাবি জানিয়েছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এই সংগঠনটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩১ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার ঘটনায় ডিইউজের উদ্বেগ
  • বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ ও তাদের দোসররা
  • আবার জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র চলছে: জামায়াত
  • আনিসুল-হাওলাদাররা জাপাকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছেন, অভিযোগ কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজারের
  • খুলনায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ছয় নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা