আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির বড় একটি অংশ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে সিইসি জানান, নির্বাচন ঘিরে কমিশন নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নারী ভোটার ও পুরুষ ভোটারের ব্যবধান কমানো এবং ৯টি আইন সংশোধনের কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রবিবার সুশীল সমাজ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি

দেশীয় ৭৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনযোগ্য জানিয়ে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি

সিইসি বলেন, বিশাল একটি ভোটার তালিকার কাজ আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শেষ করেছি। পোস্টাল ব্যালট নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এবার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তা নির্বাচনে কাজ করেন, যারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না তাদের জন্য এবার ভোটের সুযোগ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। এমনকি, হাজতে থাকা ভোটারদের ক্ষেত্রেও ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই প্রক্রিয়ায় আপনাদের মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথনির্দেশনা হয়ে উঠবে।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ১২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহফুজুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি।

ইসির সহকারী পরিচালক আশাদুল হক জানিয়েছেন, দিনব্যাপী এই সংলাপে আরো ৩৩ জন শিক্ষাবিদের সঙ্গেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পূজার ছুটি শেষে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নারী প্রতিনিধি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গেও সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন।

বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫২টি। তবে আদালতের আদেশে বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী ও জাগপার মধ্যে কেবল জামায়াতকে পুনরায় নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরুতেই তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

ঢাকা/এএএম/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন বন ধ

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ