জামায়াতের নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষ: গোলাম পরওয়ার
Published: 3rd, October 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘দ্বীনকে সংসদে পাঠানোর জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। যাঁরা একসময় ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের সবাইকে এখন আবার সক্রিয় হয়ে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে। আমিরে জামায়াত বলেছেন, “মুসলমানদের সামনে ৫৪ বছরের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের শক্তিকে পার্লামেন্টে নেওয়ার এমন অবারিত সুযোগ অতীতে আর কোনো দিন আসেনি।” ভবিষ্যতেও আসবে কি না আমরা জানি না। ফ্যাসিস্ট আমাদের গর্তে ঢোকাতে চেয়েছিল, আল্লাহ তাআলা তাদের গর্তে দিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে।’
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনার আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখা আয়োজিত সদস্য পুনর্মিলনী (১৯৭৭-২০২৫) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে পূর্ণ নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে এখন নির্বাচনী মাঠে নেমে পূর্ণ শক্তিতে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন যখন যাকে সিদ্ধান্ত দেবে, সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আমরা আমাদের ভাইকে বিজয়ী করা নয়, আমরা আমাদের আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।’
‘সম্প্রীতির টানে শিকড়ের পানে’ স্লোগানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গোলাম পরওয়ার আবেগঘন স্মৃতিচারণা করেন। তিনি খুলনার ছাত্রশিবিরের নেতা আমিনুল ইসলাম, মুন্সী আব্দুল হালিম, আমানুল্লাহ আমান, রহমত আলী, আবুল কাশেম পাঠান ও সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘তাঁদের ত্যাগ ও অবদান আমাদের রাজনীতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।’ এ সময় মিলনায়তনে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাকিব হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম (সাদ্দাম)। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, মহানগরের আমির মাহফুজুর রহমান, জেলার আমির এমরান হোসাইন, মহানগরের নায়েবে আমির নজিবুর রহমান, মহানগরের সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইনসহ ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা।
প্রধান বক্তা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না, সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুতে আল্লাহ তাআলা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যানেল দিতে পারছে না অনেকে। যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বামদের আঁতুড়ঘর, সেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা আমাদের এত কিছু দিয়েছেন। আমাদের এটা ধরে রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে যেন অহংবোধ চলে না আসে।’
নুরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘অহেতুক কথা বা কাজ করার ব্যাপারে সরাসরি আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। ফেসবুকে কথা চালাচালি যাঁরা করেন, তাঁদের বিরত থাকতে হবে। যদিও আমরা মনে করি আমাদের কোনো দায়িত্বশীল এসব করে না, যাঁরা সংগঠনের টাচে নাই, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবেগের বশবর্তী হয়ে করতে পারেন। যে আমাকে গালি দেয়, আমরা তাদের কোনো প্রতিউত্তর দেব না। কারণ, গালির কোনো প্রতিউত্তর হতে পারে না। সামনে জাতীয় নির্বাচনে যে যে এলাকায় দায়িত্ব পালন করছি, আমাদের জন্য এত সুযোগ তৈরি হয়েছে, আমরা কোনো দিন কল্পনা করিনি। এত বড় শিফমেন্ট (পরিবর্তন) আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, আমরা অন্তত ১৬০টি আসন পাব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র আল ল হ ত আল ল ইসল ম আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে গণভোটে ‘না’র পক্ষে প্রচার চালানো হচ্ছে, জাতি তাদের প্রত
‘‘অনলাইনে একটি দলের কর্মীবাহিনী আগে থেকেই গণভোটে ‘না’র পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে কারা সংস্কারের পক্ষে নেই, সংস্কারের বিরোধিতা করছে, জাতি তাদের চিনতে পারল। গোটা জাতি সংস্কারের পক্ষে। যারা এর বিপক্ষে যাবে, জাতি নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’’
রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।
দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনরত আট দল এই যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে। এর আগে বেলা ১১টায় আল ফালাহ মিলনায়তনে আট দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘আট দল শুরু থেকেই সংস্কারের পক্ষে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক সংস্কারের অনেক বিষয়ে একটি দল বিরোধিতা করেছে। তাই জাতিকে সংস্কারের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। সরকারও যেন আগে কী ছিল, নতুন করে কী কী সংস্কার হচ্ছে, সেটি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করে, প্রচারপত্র বিলি করে, জাতীয় প্রচারমাধ্যমে প্রচার করে জনগণকে জানায়।’’
তিনজন উপদেষ্টা কারা, জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘তাদের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ আট দলের কাছে আছে। প্রয়োজন হলে সেগুলো সময়মতো সামনে আনা হবে। সরকার যেন এ বিষয়ে সজাগ থাকে। প্রধান উপদেষ্টা যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রাখেন।’’
আট দলের কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘আট দলের লিয়াজো কমিটি আছে। শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে তাদের দায়িত্ব দেওয়া আছে। তারা আলোচনা করে কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। দলগুলোর সব দাবি পূরণ হয়নি। এ জন্য আন্দোলন চলমান।’’
আরেক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘আট দলের কর্মসূচির কারণে জাতীয় নির্বাচন প্রভাবিত হবে না। বরং এই আন্দোলনের কারণে সংস্কার প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো গণভোটে যাচ্ছে। এটা আন্দোলনেরই ফসল। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতেই এই আন্দোলন ভূমিকা রাখবে।’’
এ বিষয়ে জামায়াতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘উনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) যা বলেছেন, আমাদের ৮ দলের একই কথা ওনার জন্য প্রযোজ্য। এটা ওনাকে অনুরোধ করছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইজহারসহ আট দলের শীর্ষ নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//