প্রধান উপদেষ্টার ছয়টি বড় সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব
Published: 3rd, October 2025 GMT
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের ছয় নেতাসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিশন তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক
ড.
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ফেসবুকে এ সফরের উল্লেখযোগ্য ছয়টি সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার ৬ সাফল্য:
১. গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি ও ঐক্যের বার্তা
জাতিসংঘে ভাষণে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও অংশগ্রহণমূলক শাসনের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার আশ্বাস দেন। এই সফরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।
২. বৈশ্বিক কূটনীতিতে কৌশলগত সম্পৃক্ততা
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণকালে ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
এছাড়া, তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এবং ডাচ রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গেও বৈঠক করেন।
৩. রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব
জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধান এজেন্ডা ছিল রোহিঙ্গা সংকট। অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বনেতাদের জানান, বাংলাদেশ এখনো ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের পক্ষে জোর দেন এবং এ সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগে রাখার আহ্বান জানান। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মোট ৯৬ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
৪. বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ প্রস্তুতির স্বাধীন মূল্যায়নের আমন্ত্রণ
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতীক হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে আহ্বান জানান একটি স্বাধীন মূল্যায়নের মাধ্যমে যাচাই করতে—বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের জন্য কতটা প্রস্তুত। এই পদক্ষেপ সরকারের আত্মবিশ্বাস ও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় দেয়।
৫. প্রবাসী শ্রমিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ
সফরে আলবেনিয়া, কসোভোসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই উদ্যোগ রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন অংশীদার দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবে।
৬. সহযোগিতামূলক ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের মঞ্চ থেকে যে বার্তাটি দিয়েছেন, তা হলো: বাংলাদেশ কেবল নিজের স্বার্থে নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তি, গণতন্ত্র, মানবিকতা ও সহযোগিতার লক্ষ্যে দায়িত্বশীল একটি দেশ হিসেবে কাজ করে যাবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ম হ ম মদ ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল
কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চাইছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নানা দাবি তুলে তারা নির্বাচনকে ব্যাহত, বিলম্বিত বা বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এখন চায় একটি নির্বাচিত সরকার, যার পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
ভারত ‘দাদাগিরি’ দেখালে বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে পাবে না: ফখরুল
পানির ন্যায্য হিস্যা ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে জোর দেবে বিএনপি
এ সময় তিনি বলেন, "আমরা বারবার বলেছি, নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ, যা দিয়ে ট্রানজিশন করে গণতন্ত্রে যাওয়া সম্ভব। হতাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্যেও এখন একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যে ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।"
মির্জা ফখরুল বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নামে যারা এসেছে, তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে একটা জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তা জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা এখনো বলা যায় না। অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ হচ্ছে, নির্বাচন ছাড়া এটি আরও খারাপ হবে। আইনশৃঙ্খলার অবস্থাও খারাপ, নির্বাচিত সরকার না থাকলে তা আরও অবনতির দিকে যাবে।”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আগামীকাল যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় দেবে, এটা নিয়ে সারা দেশে এক ধরনের চরম অনিশ্চয়তা, এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে একটি মহল আবারও দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের তা রুখে দিতে হবে।”
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি সব রাজনৈতিক দলকে বলবো আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামনে এগিয়ে যাই। মওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণ করে আমরা যেন এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি।”
মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমানসহ আরো অনেকে।
ঢাকা/রায়হান/ইভা