রূপগঞ্জে জামায়াতের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকালে তারাব পৌর জামাতের উদ্যোগে খাদুন তালতলা চৌরাস্তা প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

তারাব পৌরসভার যুব, আইন, প্রশাসন ও রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার  আল-আমিনের সভাপতিত্বে এবং তারাব পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারি মাওলানা শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় সত্তর বছর ধরে একদল নিরীহ মানুষ নিজেদের জন্মভূমিতেই চরম অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে।

একসময় তারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করত, কিন্তু একদল সন্ত্রাসী শক্তি তাদের জমি-ঘরবাড়ি দখল করে নিয়ে রাষ্ট্রহীন নাগরিকে পরিণত করেছে। তারা আজ পৃথিবীর মানচিত্রে যেন অনাথ হয়ে পড়েছে।

অন্যায়ভাবে তাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বঞ্চিত করা হয়েছে মৌলিক অধিকার থেকে। কেবল তাই নয়, সকল প্রকার মানবিক কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন।

তাদের শিশুদের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে হাসি, বৃদ্ধদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে শেষ জীবনের শান্তি, আর নারীদের ওপর নেমে এসেছে অবর্ণনীয় নির্যাতনের পাহাড়। তাদের মুখের খাবার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একবেলা ভাতের জন্য তারা দুনিয়ার কাছে হাত পাতছে, অথচ আধুনিক সভ্য বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

যখন মানবাধিকার কর্মী ও বিবেকবান মানুষরা তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে চাইলেন, তখনও তাদের পথে তৈরি করা হলো দুর্ভেদ্য বাঁধা। সাহায্যের জাহাজ পর্যন্ত আটকে দেওয়া হলো, যাতে তাদের কাছে একটি টুকরো রুটি কিংবা ওষুধ পৌঁছাতে না পারে।

এতে প্রমাণিত হয়, শুধু সন্ত্রাসী শক্তিই নয়, আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা ও উদাসীনতাও এই মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করে তুলছে।

আজ পৃথিবীর বিবেকবান মানুষদের বিবেকও যেন শূন্য হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, সভ্য রাষ্ট্র ও বিশ্ব নেতারা কেবলই বিবৃতি দিচ্ছেন, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না।

তাদের নীরবতা এই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকে আরও উসকে দিচ্ছে। মানবতার এই চরম পরীক্ষার মুহূর্তে প্রশ্ন জাগে—পৃথিবীর সভ্যতা কি কেবল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে থাকবে? না কি একদিন বিশ্ববাসী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করবে যে মানবতা এখনো মৃত নয়?

যদি এখনই এই অন্যায়, দখল ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হয়, যদি অবিলম্বে নিরীহ মানুষদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া হয়, তবে এ আগুন শুধু একটি ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ থাকবে না—এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র বিশ্বে।

তখন আর কোনো শক্তিই এই ক্ষোভ, এই প্রতিরোধ দমন করতে পারবে না। ইতিহাস ক্ষমা করবে না; মানবতা-বিরোধী এই অপরাধীদের শাস্তি একদিন নিশ্চিতভাবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে।

আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লা,নারায়ণগঞ্জ জেলার আইন বিষয়ক সম্পাদক এভ.

ইসরাফিল হোসাইন, রূপগঞ্জ থানা দক্ষিণের আমীর মাওলানা সাইফুল ইসলাম সিরাজী, তারাব পৌরসভার আমীর মোঃ সহিদুল ইসলাম,তারাব পৌর সেক্রেটারি মোঃ নাজমুল হক প্রমুখ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ ম নবত

এছাড়াও পড়ুন:

না.গঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন হওয়ায় ঐক্য পরিষদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অত্যান্ত শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হওয়ায় জেলার সর্বস্তরের মানুষ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা তথা সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনী, বিজিবি, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল সার্জন, রেডক্রিসেন্ট, জেলা রোভার, স্বেচ্ছাসেবক, সকল রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিষদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস ও মহানগরের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল এ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, এবার কোন রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ও শঙ্কা ছাড়াই সুষ্ঠু,  সুন্দর, উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন হয়েছে। পূজোর এ আয়োজনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি মুহুর্তে আমাদের পূজো মন্ডপগুলোতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, এনএসআই, ডিবি, ডিএসবি, সিআইডি, ট্রাফিক পুলিশ, আনসার, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিট, বিদ্যুৎ বিভাগ, বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সনাতনী সম্প্রদায়ের সকল নেতৃবৃন্দদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতার কারণে আমাদের পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য  আমরা সকলরর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা  ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সর্বদা অটুট রাখতে সবাই কিভাবে এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করা যায়, তারই অন্যন্য নজির হচ্ছে এবারের এই শারদীয় দুর্গোৎসব।

আমি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ আমাদের ঐক্য পরিষদ ও অন্যান্য সনাতনী সংগঠনগুলো যারা নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা সমাপ্ত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সার্বিক সহযোগীতার কারণেই শারদীয় দুর্গা উৎসব নারায়ণগঞ্জে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। আশা করি, আগামী দিনগুলোতেও এরকম সহযোগীতা ও নিরাপত্তা বজায় থাকবে। আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • না.গঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন হওয়ায় ঐক্য পরিষদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
  • শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবো : মাও. জব্বার
  • ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ
  • ইনসাফপূর্ণ সমাজ গঠনে আল কোরআনের কোন বিকল্প নাই : ড. ইকবাল
  • হাসপাতালে শয্যাসংকট, মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা
  • মহানবমীতে আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জের বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শনে না.গঞ্জ ঐক্য পরিষদ  
  • রূপগঞ্জে চার শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে
  • দুই মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে ১৯ কিলোমিটার যানজট
  • নারায়ণগঞ্জে সাদাপোশাকে আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার, র‌্যাবের ৩ সদস্য আহত