রূপগঞ্জে জামায়াতের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
Published: 3rd, October 2025 GMT
রূপগঞ্জে জামায়াতের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকালে তারাব পৌর জামাতের উদ্যোগে খাদুন তালতলা চৌরাস্তা প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তারাব পৌরসভার যুব, আইন, প্রশাসন ও রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আল-আমিনের সভাপতিত্বে এবং তারাব পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারি মাওলানা শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ প্রায় সত্তর বছর ধরে একদল নিরীহ মানুষ নিজেদের জন্মভূমিতেই চরম অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে।
একসময় তারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করত, কিন্তু একদল সন্ত্রাসী শক্তি তাদের জমি-ঘরবাড়ি দখল করে নিয়ে রাষ্ট্রহীন নাগরিকে পরিণত করেছে। তারা আজ পৃথিবীর মানচিত্রে যেন অনাথ হয়ে পড়েছে।
অন্যায়ভাবে তাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বঞ্চিত করা হয়েছে মৌলিক অধিকার থেকে। কেবল তাই নয়, সকল প্রকার মানবিক কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন।
তাদের শিশুদের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে হাসি, বৃদ্ধদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে শেষ জীবনের শান্তি, আর নারীদের ওপর নেমে এসেছে অবর্ণনীয় নির্যাতনের পাহাড়। তাদের মুখের খাবার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একবেলা ভাতের জন্য তারা দুনিয়ার কাছে হাত পাতছে, অথচ আধুনিক সভ্য বিশ্ব নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
যখন মানবাধিকার কর্মী ও বিবেকবান মানুষরা তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে চাইলেন, তখনও তাদের পথে তৈরি করা হলো দুর্ভেদ্য বাঁধা। সাহায্যের জাহাজ পর্যন্ত আটকে দেওয়া হলো, যাতে তাদের কাছে একটি টুকরো রুটি কিংবা ওষুধ পৌঁছাতে না পারে।
এতে প্রমাণিত হয়, শুধু সন্ত্রাসী শক্তিই নয়, আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা ও উদাসীনতাও এই মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করে তুলছে।
আজ পৃথিবীর বিবেকবান মানুষদের বিবেকও যেন শূন্য হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, সভ্য রাষ্ট্র ও বিশ্ব নেতারা কেবলই বিবৃতি দিচ্ছেন, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না।
তাদের নীরবতা এই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকে আরও উসকে দিচ্ছে। মানবতার এই চরম পরীক্ষার মুহূর্তে প্রশ্ন জাগে—পৃথিবীর সভ্যতা কি কেবল ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে থাকবে? না কি একদিন বিশ্ববাসী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করবে যে মানবতা এখনো মৃত নয়?
যদি এখনই এই অন্যায়, দখল ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হয়, যদি অবিলম্বে নিরীহ মানুষদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া হয়, তবে এ আগুন শুধু একটি ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ থাকবে না—এই আগুন ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র বিশ্বে।
তখন আর কোনো শক্তিই এই ক্ষোভ, এই প্রতিরোধ দমন করতে পারবে না। ইতিহাস ক্ষমা করবে না; মানবতা-বিরোধী এই অপরাধীদের শাস্তি একদিন নিশ্চিতভাবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে।
আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আনোয়ার হোসেন মোল্লা,নারায়ণগঞ্জ জেলার আইন বিষয়ক সম্পাদক এভ.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ ম নবত
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জবাসী ফ্যাসিবাদকে মাথাচাড়া দেয়ার সুযোগ দেবে না : বাবুল
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচির বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নেমেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়। ১৭ নভেম্বর সোমবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া হোসিয়ারি সমিতির সামনের রাস্তায় জড়ো হতে থাকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সকাল থেকেই মহানগরের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। প্রতিবাদ সভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সবার মুখে স্লোগান ছিল, ‘খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’।
সকাল দশটায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান’র সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও মহানগর বিএনপি নেতা প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল ও বিএনপির সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম।
এসময় মহানগর বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, আমরা আজকে একত্রিত হয়েছি একটি সুষ্ঠু বিচার এর দাবী নিয়ে, হাসিনার ফাসির দাবী।
খুনি হাসিনার সৎ সাহস থাকলে তিনি বিচারের মুখোমুখি হতো, অথচ হাসিনা এখন ভারতে অবস্থান করছে, নেতাকর্মীদের রেখে পালিয়ে গিয়ে নানানভাবে ষড়যন্ত্র করছে দেশকে অশান্ত করার জন্য।
দেশে সন্ত্রাসের মাধ্যমে অস্থিরতা তৈরির এই অপতৎপরতা আমরা রুখে দেব, আওয়ামী লীগ আবারও নাশকতার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাই সাংগঠনিকভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি তাদেরকে মোকাবেলা করার জন্য।
এই নারায়ণগঞ্জবাসী কোনো ফ্যাসিবাদকে মাথাচাড়া দেয়ার সুযোগ আর দেবে না এবং তাদের সকল দোসরদের কঠোরহাতে দমন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সমাবেশ শেষে সকাল সাড়ে এগারটায় মিশনপাড়া মোড় হতে এক বিশাল মিছিল পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে নিতাইগঞ্জ নগর ভবনের সামনের রাস্তায় গিয়ে শেষ হয়।