হঠাৎ মাথা ঘুরতে শুরু করলে ভুলেও মাথা ঝাঁকাবেন না। নানা কারণে মাথা ঘুরতে পারে। যেমন—অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া,মেনিয়ারস রোগ, অস্বাভাবিক দৃষ্টিগত সমস্যা, অন্তঃকর্ণের রক্তনালির অস্বাভাবিকতা, অন্তঃকর্ণের প্রদাহ। এ ছড়া অনেক উঁচুতে উঠে নিচের দিকে তাকালে এবং চলন্ত ট্রেন বা গাড়ি থেকে প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালেও মাথা ঘুরতে পারে।
যাদের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের মাথার পেছন দিকে রক্ত প্রবাহ কম থাকে। আবার মস্তিষ্কের নিচের দিকে টিউমার, ভাইরাসজনিত ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস থাকলে হঠাৎ মাথা ঘোরা শুরু হতে পারে।
অনেকের রক্তে চিনির মাত্রা থাকে, তারা মাথা ঘোরার সমস্যায় ভুগতে পারেন। এছাড়া শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলেও মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়।
আরো পড়ুন:
প্রতিদিন শসা খেলে শরীরে যে প্রভাব পড়ে
লিভার ডিটক্সিফিকেশনের জন্য সাপ্লিমেন্ট খাওয়া কী জরুরি?
হঠাৎ মাথা ঘোরা শুরু হলে করণীয়
আশপাশে যা আছে আকড়ে ধরার চেষ্টা করতে হবে। দাঁড়িয়ে না থেকে বসে পড়তে হবে। খেয়াল করতে হবে যে, কোন ধরনের কাজ করলে মাথা বেশি ঘোরে, সেই ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মাথা ঘোরা শুরু হলে সচেতন এবং সহজভাবে শ্বাস গ্রহন করতে হবে।
সম্ভব হরে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। যাদের মাথা ঘোরার সমস্যা আছে তারা কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চাপ নেবেন না।
দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে মাথা ঘুরতে পারে, কারণ রক্তে চিনির মাত্রা কমতে শুরু করে। মাথা ঘোরার সমস্যা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ‘‘মাথা ঘোরা শুরু হলে কয়েক মিনিট শুয়ে চোখ বন্ধ করে থাকার চেষ্টা করুন। তারপর ধীরে ধীরে বসুন, সময় নিন। অবশেষে, ধীরে ধীরে দাঁড়ান - হঠাৎ বা দ্রুত নড়াচড়া করবেন না।’’
মাঝেমধ্যেই মাথা ঘোরার সমস্যা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্র: ওয়েবএমডি
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন ঘ র র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজার শিক্ষার্থীদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরা, কারণ...
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও আমেরিকায় যেতে পারছেন না গাজার কয়েক ডজন শিক্ষার্থী। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীদের জন্য প্রায় সব ধরনের অ-অভিবাসী ভিসা স্থগিত করায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
ভাঙাচোরা জীবন, সীমান্তে আটকে স্বপ্ন২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর কয়েক দিনের মধ্যেই গাজার মরিয়ামের (নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করছেন) জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। বাড়িঘর, স্কুল এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজা, যেখানে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন—সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায় ইসরায়েলের বিমান হামলায়। ডিসেম্বরে নিহত হন তাঁর শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী সুফিয়ান তাইয়েহ। মরিয়ম বলেন, ‘আমার কাছে তিনি বাবার মতো ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পর আমার মনে হলো পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে আমার পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেল।’
তবু রাফার তাঁবুতে ঠাঁই নিয়ে অনিশ্চিত বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–বিভ্রাটের মধ্যেও মরিয়াম হাল ছাড়েননি। সীমান্তের কাছে দুর্বল মিসরীয় সিগন্যাল পাওয়া যায়, এমন স্থানে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ অর্থায়নে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু তিনি এখনো গাজাতেই আটকে আছেন। ভিসা নিষেধাজ্ঞা থামিয়ে দিয়েছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন।
মরিয়ম বলেন, ‘সম্পূর্ণ অর্থায়িত পিএইচডি প্রোগ্রামের ভর্তির সুযোগের বার্তা পাওয়ার মুহূর্তটি আমি কখনোই ভুলব না। আমাদের তাঁবুতে ফিরে আমার বাচ্চাদের শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সুসংবাদটি জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমরা এই দুঃস্বপ্ন থেকে বাঁচব। কিন্তু ট্রাম্পের ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিতের কথা শুনে সবকিছু আবার ভেঙে পড়েছিল। মনে হয়েছিল যেন আমার স্বপ্নগুলো আবারও ধ্বংস হয়ে গেছে।’
যুদ্ধ না থাকলেও ফিলিস্তিন শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার দিতে মিসর বা ইসরায়েলে যেতে হতো। এখন রাফা সীমান্ত প্রায় বন্ধ আর ইসরায়েল যাওয়ার অনুমতি মেলা অসম্ভব।গাজা শহরের আরেক শিক্ষার্থী ২২ বছরের লায়লারও অবস্থা একই। ইসরায়েলের আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় পাঁচ বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে চার বছরে চলছিল। ওয়াই–ফাইয়ের সংযোগ পেতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা হেঁটে এদিক ওদিক যেতেন। সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে ফোন চার্জ করে আবেদনপত্র পাঠাতেন। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। কিন্তু তারপর এল নিষেধাজ্ঞা। সব এলোমেলো হয়ে গেল। তিনি জানালেন, ‘আমরা এখনো গাজাতেই আটকে আছি।’
লায়লাও ছদ্মনাম। তিনি গার্ডিয়ানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর আগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা