বিএনপিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট শেয়ার, পদ গেল জামায়াত নেতার
Published: 4th, October 2025 GMT
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিএনপিকে নিয়ে আপত্তিকর ছবি শেয়ার করায় ৯নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে তার সদস্য পদ তিন মাসের জন্য মুলতবি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর জেলা জামায়াতের আমির মো.
জানা গেছে, জামায়াতের এ নেতা ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করেন। এ ঘটনার জেরে বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের সংর্ঘষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আহতরা হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
হাজীগঞ্জের উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম জানান, বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমি ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করে। শুক্রবার সকালে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে নেতা-কর্মীদের উপর জামায়াতের নেতা কর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে।
এদিকে হাজীগঞ্জের উপজেলা জামায়াত নেতা মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরাণ পোস্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “রাতেই পোস্ট ডিলিট করা হয়েছে। এমনকি মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করে আরো একটি পোস্ট করেছেন। তারপরও মসজিদ কমিটি তাকে নিয়ে সকালে একটি বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নেয়। ওইসময় বিএনপি নেতা নেছার আহম্মেদের নেতৃত্বে ইলিয়াসের উপর হামলা চালানো হয়। সেসময় প্রতিরোধ করতে গেলে জামায়াতের অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন।”
এ বিষয়ে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, “ঘটনা যা হয়েছে, ফেসবুকে পোস্ট করে পরে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তারপরেও শুক্রবার সকালে বৈঠক বসার পূর্বেই নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।”
ঢাকা/অমরেশ/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ম য় ত র আম র ফ সব ক উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজার শিক্ষার্থীদের মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরা, কারণ...
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও আমেরিকায় যেতে পারছেন না গাজার কয়েক ডজন শিক্ষার্থী। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারীদের জন্য প্রায় সব ধরনের অ-অভিবাসী ভিসা স্থগিত করায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
ভাঙাচোরা জীবন, সীমান্তে আটকে স্বপ্ন২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর কয়েক দিনের মধ্যেই গাজার মরিয়ামের (নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করছেন) জীবন ওলটপালট হয়ে যায়। বাড়িঘর, স্কুল এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজা, যেখানে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পড়ছিলেন—সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায় ইসরায়েলের বিমান হামলায়। ডিসেম্বরে নিহত হন তাঁর শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী সুফিয়ান তাইয়েহ। মরিয়ম বলেন, ‘আমার কাছে তিনি বাবার মতো ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শোনার পর আমার মনে হলো পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে আমার পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেল।’
তবু রাফার তাঁবুতে ঠাঁই নিয়ে অনিশ্চিত বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–বিভ্রাটের মধ্যেও মরিয়াম হাল ছাড়েননি। সীমান্তের কাছে দুর্বল মিসরীয় সিগন্যাল পাওয়া যায়, এমন স্থানে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণ অর্থায়নে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু তিনি এখনো গাজাতেই আটকে আছেন। ভিসা নিষেধাজ্ঞা থামিয়ে দিয়েছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন।
মরিয়ম বলেন, ‘সম্পূর্ণ অর্থায়িত পিএইচডি প্রোগ্রামের ভর্তির সুযোগের বার্তা পাওয়ার মুহূর্তটি আমি কখনোই ভুলব না। আমাদের তাঁবুতে ফিরে আমার বাচ্চাদের শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সুসংবাদটি জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমরা এই দুঃস্বপ্ন থেকে বাঁচব। কিন্তু ট্রাম্পের ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিতের কথা শুনে সবকিছু আবার ভেঙে পড়েছিল। মনে হয়েছিল যেন আমার স্বপ্নগুলো আবারও ধ্বংস হয়ে গেছে।’
যুদ্ধ না থাকলেও ফিলিস্তিন শিক্ষার্থীদের ভিসা সাক্ষাৎকার দিতে মিসর বা ইসরায়েলে যেতে হতো। এখন রাফা সীমান্ত প্রায় বন্ধ আর ইসরায়েল যাওয়ার অনুমতি মেলা অসম্ভব।গাজা শহরের আরেক শিক্ষার্থী ২২ বছরের লায়লারও অবস্থা একই। ইসরায়েলের আক্রমণ শুরু হওয়ার সময় পাঁচ বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে চার বছরে চলছিল। ওয়াই–ফাইয়ের সংযোগ পেতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা হেঁটে এদিক ওদিক যেতেন। সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে ফোন চার্জ করে আবেদনপত্র পাঠাতেন। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। কিন্তু তারপর এল নিষেধাজ্ঞা। সব এলোমেলো হয়ে গেল। তিনি জানালেন, ‘আমরা এখনো গাজাতেই আটকে আছি।’
লায়লাও ছদ্মনাম। তিনি গার্ডিয়ানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর আগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহর রামাল্লার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা