গ্রীসের বিখ্যাত চিকিৎসক ও গবেষক জর্জ ভিথুলকাস
Published: 6th, October 2025 GMT
গ্রিসের একজন বিখ্যাত চিকিৎসক ও গবেষক প্রফেসর ড. জর্জ ভিথুলকাস (Prof. Dr. George Vithulkas) - ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথির পথপ্রদর্শকদের একজন।
তিনি একজন বিশ্বখ্যাত ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক-ই নন ; তিনি একজন শিক্ষাবিদও। তিনি আধুনিক হোমিওপ্যাথির বিকাশে যেসব অবদান রেখেছেন, তা বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য ।
প্রফেসর ড.
তাঁর লিখিত বই পড়ার পরে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ থেকে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী জানা; অতঃপর লিখতে উৎসাহিত হলাম।
তার সংক্ষিপ্ত জীবনী:
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
প্রফেসর ডক্টর জর্জ ভিথুলকাস ১৯৩২ সালের ২৫ জুলাই গ্রীসের এথেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসা ও মানুষের সেবা করার আগ্রহ ছিল তার জীবনের মূল লক্ষ্য।
শিক্ষা:
তিনি একজন প্রকৌশলী ছিলেন এবং হোমিওপ্যাথির সাথে পরিচিত হন যখন তিনি একবার ফার্মেসির একটি বই হাতে পান। এর পরে তিনি হোমিওপ্যাথি পড়ার আগ্রহ থেকে ১৯৬০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় হোমিওপ্যাথি শিক্ষার যাত্রা শুরু করেন, পরবর্তীতে ভারতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৬৬ সালে Indian Institute of Homeopathy থেকে ডিপ্লোমা (বর্তমানে DHMS কোর্স নামে পরিচিত) অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে গ্রিসে ফিরে আসার পর ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি শেখানো ও অনুশীলন শুরু করেন। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অন্যান্য দেশে হোমিওপ্যাথির বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি শুধু হোমিওপ্যাথি অধ্যয়ন করেই থেমে জাননি, বরং তা প্রয়োগ করেন এবং পরে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৬৭ সাল থেকে তিনি ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি পড়িয়ে আসছেন।
কর্মজীবন:
শিক্ষা শেষে ১৯৬৭ সালে তিনি গ্রীসে ফিরে এসে ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি শিক্ষাদান, অনুশীলন ও গবেষণায় নিয়োজিত হন। তিনি নিজে এথেন্সে ১৯৭০ সালে “Athenian School of Homeopathic Medicine” প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখন “Center of Homeopathic Medicine” নামে পরিচিত এবং এটি বিশেষভাবে মেডিকেল ডক্টরদের জন্য প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। ১৯৯৫ সালে গ্রীসের আলোনিসোস দ্বীপে প্রতিষ্ঠা করেন International Academy of Classical Homeopathy (IACH), যা বিশ্বব্যাপী শ্রেষ্ঠ হোমিওপ্যাথি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।
গ্রন্থসমূহ:
The Science of Homeopathy
Homeopathy: Medicine of the New Man
Materia Medica Viva (বহু খণ্ডে প্রকাশিত আধুনিক হোমিওপ্যাথি রেফারেন্স বই)
Essence of Materia Medica
GV Keynotes with Remedy Relations
এই বইগুলো ২৩টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী হোমিওপ্যাথির গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সম্মাননা ও পুরস্কার:
১৯৯৬ সালে পেয়েছেন Right Livelihood Award, যা বিকল্প নোবেল পুরস্কার নামে খ্যাত।
মস্কো মেডিকেল একাডেমি এবং University of the Aegean থেকে সম্মানসূচক প্রফেসর পদক লাভ।
ভারত, রাশিয়া, হাঙ্গেরি, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সম্মান ও পুরস্কার প্রাপ্ত।
জীবনের দর্শন:
“রোগের মূলে গিয়ে তার প্রকৃত কারণ বুঝে চিকিৎসা করতে হবে, যাতে শরীর নিজেই সুস্থ হয়ে ওঠে।”
প্রফেসর ড. জর্জ ভিথুলকাসের জীবন ও কর্ম আমাদের শেখায়—
আসল চিকিৎসা হলো মানুষের স্বাভাবিক রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় করা ও রাখা এবং তাকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা।
তাঁর অবদান ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।
লেখক : ডা. গাজী খায়রুজ্জামান
(একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কলামিস্ট)
মোবাইল : 01743834816
[email protected]
আরো পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সদরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পইন উপলক্ষে ওরিয়েন্টেশন সভা
নারায়ণগঞ্জে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এডভোকেসী সভা
এলএমএইচআই ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস-২০২৫-এ হোমিওপ্যাথিক দুই চিকিৎসকের প্রতিনিধিত্ব
নিতাইগঞ্জে এমপি প্রার্থী সিরাজুল মামুনের গণসংযোগ
৩০০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গুর কিট দিল নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন
নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি গ্রহন
ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নবজাতকদের জন্য আইসিইউ ইউনিটের উদ্বোধন
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.কম
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ চ ক ৎসক উপলক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
দৃষ্টিহীন আলভীর চোখে আশার আলো জ্বালালেন ডিসি জাহিদুল
ফতুল্লার দেওভোগ এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক আজিজুল হক ও গৃহিণী রাশেদা বেগমের কিশোরী মেয়ে হাকিমা আক্তার আলভি দীর্ঘদিন ধরে প্রায় দৃষ্টিশক্তিহীন অবস্থায় ভুগছে।
পাঁচজনের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আজিজুল হক গার্মেন্টসে কাজ করে অল্প বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খান। তবুও ধার-দেনা ও আত্মীয়স্বজনের সাহায্যে মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে গেছেন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে, কিন্তু কোনো উন্নতি হয়নি।
চিকিৎসকরা দ্রুত ভারতের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। ভারতের ভিসাও সংগ্রহ করেছেন পরিবারটি, কিন্তু বিদেশে চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা। দৃষ্টিহীন মেয়েকে নিয়ে একের পর এক দ্বারে ঘুরেও ব্যর্থ হন রাশেদা বেগম।
অবশেষে হতাশ হয়ে সোমবার দেখা করেন সারাদেশে ‘মানবিক ডিসি’ হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে। জেলার এই অভিভাবক মনোযোগ দিয়ে শোনেন অসহায় মায়ের কষ্টের গল্প। তিনি রাশেদাকে সান্ত্বনা দেন, হতাশ না হতে পরামর্শ দেন এবং আলভীর চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
রাশেদা বেগম বলেন, “আমি মেয়ের চিকিৎসার জন্য অনেকের কাছে গিয়েছি, কেউ পাশে দাঁড়াননি। কিন্তু ডিসি স্যার আমার কথা শোনামাত্রই অনুদানের চেক দিলেন। পরিমাণে ছোট হলেও এই সহায়তা আমাদের জন্য অনেক সাহসের।”
তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জের স্বচ্ছল মানুষরা যদি মাত্র ১০০ টাকা করে দেন, তবে আমার মেয়ের চিকিৎসার সব খরচ উঠে যাবে। আমার মেয়ের স্বপ্ন—চোখ ফিরে পেয়ে পড়ালেখা করে একদিন ডাক্তার হবে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সীমিত বাজেটের কারণে একজনকে খুব বেশি সহায়তা করা সম্ভব নয়। তবে প্রায়ই এমন অসহায় মানুষ আমার কাছে আসেন। জেলার অভিভাবক হিসেবে আমি চেষ্টা করি, অল্প হলেও সবার পাশে দাঁড়াতে।”
আলভীর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয় মানুষদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।