কুষ্টিয়ায় লটারিতে হারা প্রার্থী জিতলেন আদালতের গণনায়
Published: 7th, October 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনে ভোট গণনায় দুজন প্রার্থী সমান ভোট পেয়েছিলেন। দেড় বছর আগে লটারি করে নির্বাচন কর্মকর্তা একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। হেরে যাওয়া প্রার্থী বিষয়টি না মেনে নিয়ে নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেন। শেষমেশ আদালতের দ্বারস্থ হন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আদালত আবার সেই ভোট গণনা করেন। তাতে দেখা যায়, পরাজিত প্রার্থী ২১৪ ভোট বেশি পেয়েছেন।
কুষ্টিয়ার নির্বাচনী ট্রাইবুন্যালে (জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালত) এই ভোট গণনা হয়। গত বছরের ৯ মার্চ এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় লটারিতে বিজয়ী হয়েছিলেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আবদুল মান্নান বিশ্বাস (স্বতন্ত্র)। এবার বিজয়ী হলেন মোটরসাইকেল প্রতীকের ফারুক আলম (স্বতন্ত্র)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের (সদর) নাজির মিজানুর রহমান বলেন, “দুইজন প্রার্থী ও তাদের আইনজীবীদের সামনে ভোট গণনা করা হয়েছে। মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী ২১৪ ভোট বেশি পেয়েছেন।
২০২৪ সালের ৯ মার্চ রিফায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। বেশির ভাগ প্রার্থী আওয়ামী লীগের রাজনীতির (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, মোট ভোটার ২৫ হাজার ৮৪৬ ভোটের মধ্যে বৈধ ভোট পড়ে ১৭ হাজার ৮১৩ ভোট। বাতিল হয় ১১৩ ভোট।
প্রার্থীদের মধ্যে ঘোড়া প্রতীকের আবদুল মান্নান বিশ্বাস (স্বতন্ত্র) ও মোটরসাইকেল প্রতীকের ফারুক আলম (স্বতন্ত্র) দুজনই সমান ৬ হাজার ১২৩ ভোট পান। সমান ভোট পাওয়ায় ওই দিন রাত একটার দিকে তৎকালীন জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু আনছার স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৪১ (৬) মোতাবেক দুইজন প্রার্থীর মধ্যে লটারি করেন। লটারিতে ঘোড়া প্রতীকের আবদুল মান্নান বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
লটারিতে হেরে যাওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হওয়া ফারুক আলম বলেন, “২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলার পর দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২৪ আগস্ট আদালত সিদ্ধান্ত দেন যে আবার ভোট গণনা করা হবে। এজন্য সোমবার দিন ধার্য্য ছিল। সেই মোতাবেক দুই প্রার্থী ও তাদের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে আদালতে পুনরায় ব্যালট পেপারগুলো গণনাকরা হয়। গণনায় তার ভোট বেড়েছে ২১৪টি।
ফারুক আলমের আইনজীবী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘খোলা আদালতে ভোট গণনা হয়। গণনা শেষে আদালত বাদী ফারুক আলমকে ২১৪ ভোট বেশি পাওয়ায় বিজয়ী ঘোষণা করেন।”
এ বিষয়ে আবদুল মান্নানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তার আইনজীবী জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিবাদী আবদুল মান্নান এখন কী করবেন, সেটা এখনো আমি জানি না।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল ম ন ন ন ফ র ক আলম স বতন ত র র আইনজ ব ভ ট গণন
এছাড়াও পড়ুন:
লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন মহানগর দায়রা আদালতেও নামঞ্জুর
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন ঢাকার মহানগর দায়রা আদালতেও নামঞ্জুর হয়েছে।
ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিন আজ রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর আইনজীবী গোলাম রব্বানী।
আইনজীবী গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। ওই জামিন আবেদন চ্যালেঞ্জ করে লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদন করা হয় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে। আজ তাঁর জামিন শুনানি হয়। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করেন। শিগগিরই লতিফ সিদ্দিকীর জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।
গত ২৮ আগস্ট সকালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, শেখ হাফিজুর রহমানসহ অন্যরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিতে যান। ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক ছিল ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। আলোচনা সভায় প্রথমে বক্তব্য দেন শেখ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের সংবিধানকে ছুড়ে ফেলার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের জুতার মালা পরাচ্ছে।’
শেখ হাফিজুর রহমানের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই মিছিল নিয়ে একদল ব্যক্তি ডিআরইউ মিলনায়তনে ঢোকেন। একপর্যায়ে তাঁরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে আলোচনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশের (ডিএমপি) একটি দল এলে তাঁরা পুলিশের কাছে লতিফ সিদ্দিকী, শেখ হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মনজুরুল আলমসহ অন্তত ১৬ জনকে তুলে দেন। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। পরদিন তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। সেদিন লতিফ সিদ্দিকী ছাড়া অন্যরা জামিনের আবেদন করলে আদালত নাকচ করেছিলেন।
২৯ আগস্ট লতিফ সিদ্দিকীকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তখন তিনি ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে রাজি হননি। আদালতের প্রতি তাঁর আস্থা নেই বলে তখন তিনি উপস্থিত আইনজীবীদের বলেছিলেন।