শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দী করেছে ইসরায়েল
Published: 9th, October 2025 GMT
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ গাজা অভিমুখী নৌবহর থেকে আটক অধিকারকর্মীদের একটি অংশকে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়েছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এবং ইসরায়েলে আরব সংখ্যালঘুদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা ‘আদালাহ’র বরাত দিয়ে দৃক এ তথ্য জানিয়েছে।
শহিদুল আলম দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন নৌযাত্রা শুরু করেছিল গাজা অভিমুখে। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এ বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গতকাল বুধবার ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা।
দৃক আজ এক বার্তায় বলেছে, ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এবং আদালাহ—দ্য লিগ্যাল সেন্টার ফর আরব মাইনরিটি রাইটস ইন ইসরায়েল (যারা অপহৃত ফ্রিডম ফ্লোটিলা অ্যাকটিভিস্টদের হয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছে) এর মাধ্যমে আমরা জেনেছি, আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ ফ্রিডম ফ্লোটিলা নৌবহরের সব সাংবাদিক, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, মানবাধিকারকর্মী ও জাহাজের নাবিকদের আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁদের ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফ্লোটিলার অধিকারকর্মীরা আদালাহর আইনজীবীদের জানিয়েছেন, জাহাজ দখল নেওয়ার পর থেকে তাঁরা ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর দ্বারা নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন।’
কেৎজিয়েত কারাগার ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় আটককেন্দ্র। এটা নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত। এখানে আটক ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপকভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়।
এ নৌবহরে আটটি নৌযান অংশ নিয়েছিল থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা প্ল্যাটফর্ম থেকে। থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা আজ বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, ইসরায়েল বেআইনিভাবে ফ্লোটিলা থেকে ১৪৫ জনকে অপহরণ করেছে। তাঁদের অনেককে কেৎজিয়েত কারাগারে নিপীড়নমূলক পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছে। সেখানে তাঁদের মারধর, অপদস্থ ও জুলুম করা হয়েছে। আদালাহর আইনজীবীরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই পোস্টে বলা হয়, আজকেই আটক ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়ে আদালতে শুনানি হতে পারে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাঁদের পরিপূর্ণভাবে আইনি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করছে।
ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও আয়ারল্যান্ডের বেশ কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্যকে ইতিমধ্যে ইসরায়েল থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা।
এর আগে গত সপ্তাহে গাজা অভিমুখী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ৪২টি নৌযান থেকে ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন। কয়েক ধাপে তাঁদের অধিকাংশকে ফেরত পাঠিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনী আমাদের আটকে দিয়েছে, আমাকে অপহরণ করেছে: শহিদুল আলম০৮ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধ ক রকর ম ইসর য় ল র ন বহর
এছাড়াও পড়ুন:
নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিতে শীর্ষে প্রথম আলো
দৈনিক পত্রিকা সমাজের দর্পণ। সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে প্রথম আলো। উপমহাদেশের মধ্যে শক্তিশালী ও পেশাদার গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে তারা পাঠকের আস্থা ধরে রেখেছে। প্রথম আলো দেশের স্বার্থে কাজ করুক, এটাই পাঠকদের প্রত্যাশা।
শনিবার বিকেলে ঝালকাঠিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। পত্রিকাটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, নারীনেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার প্রতিনিধিরা প্রথম আলোর ভূমিকা, সাংবাদিকতা, নিরপেক্ষতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করেন।
সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি আসম মাহমুদুর রহমান। এতে জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাকিনা আলম বলেন, এখন পরিবেশের ওপর চাপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলোকে পুনর্ব্যবহৃত (রিসাইক্লিং) কাগজ ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
মুক্তিযুদ্ধের তরুণ গবেষক ইসমাইল মুসাফির প্রথম আলোর মুদ্রণের মান ও বিজ্ঞাপনের ভাষায় নতুনত্ব আনায় প্রশংসা করেন। গ্রন্থাগারের উদ্যোক্তা নারায়ণ চন্দ্র মিস্ত্রি বলেন, গুণী মানুষদের নিয়ে প্রথম আলোর ধারাবাহিক প্রতিবেদন করা উচিত।
ঝালকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হাসান বলেন, ‘লিমনের ঘটনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রচণ্ড চাপের মুখে আমরা যখন আদালতে লড়ছিলাম, তখন প্রথম আলো নিয়মিত প্রতিবেদন করে লিমনের পক্ষে সত্য তুলে ধরেছিল। শুধু তখনই নয়, জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তারা সাহসী প্রতিবেদন করে জাতিকে সঠিক তথ্য দিয়েছে। এই ভূমিকা দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
জেলা জামায়াতের আমির হাফিজুর রহমান বলেন, সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো সমান দৃষ্টিতে সমাজকে দেখা—এটাই তাদের শক্তি।
ঝালকাঠিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে আগত অতিথিরা। শনিবার বিকেলে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে