ভিডিও গেমের জগতে যদি কোনো একটি নাম কিংবদন্তির মর্যাদা পেয়ে থাকে তবে তা মাইনক্র্যাফট। ২০০৯ সালে সুইডেনের ডেভেলপার মার্কাস নচ পার্সন মাইনক্র্যাফট গেমের প্রথম পাবলিক আলফা সংস্করণ প্রকাশ করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি কেভ গেম নামে পরিচিত ছিল। নচ এমন একটি গেম তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা খেলোয়াড়দের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেবে। ডিজিটাল লেগো ব্লকের মাধ্যমে যেকোনো কিছু তৈরি করা যাবে এমন ধারণা থেকে তৈরি করা হয় মাইনক্র্যাফট গেম।

২০১১ সালের নভেম্বরে মাইনক্র্যাফট গেম আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করা হয়। গেমটির সরল গ্রাফিকস ও সীমাহীন সৃজনশীল সম্ভাবনা এটিকে দ্রুত বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় করে তোলে। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট ২৫০ কোটি ডলারের বিনিময়ে মাইনক্র্যাফট ও তার ডেভেলপার স্টুডিও মোজাংকে অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের পর মাইনক্র্যাফট আরও বহু প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে।

মাইনক্র্যাফট ইতিহাসের সর্বাধিক বিক্রীত ভিডিও গেমগুলোর মধ্যে একটি। মাইনক্র্যাফটের এডুকেশন সংস্করণটি বিশ্বজুড়ে অনেক শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করেন শিক্ষকেরা। গণিত, ইতিহাস, এমনকি বিজ্ঞানের কঠিন ধারণাকে হাতেকলমে শেখানোর জন্যই মূলত শিক্ষকেরা এই গেম ব্যবহার করেন।

মাইনক্র্যাফটের গল্প বা কাঠামো প্রথাগত গেমের মতো নয়। এর প্রধান ঘরানা হলো স্যান্ডবক্স। এখানে খেলোয়াড়ের ওপর কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য দেওয়া হয় না। খেলোয়াড় নিজেই নিজের গল্পের পটভূমি ও লক্ষ্য নির্ধারণ করে। মাইনক্র্যাফটের জগৎ পদ্ধতিগতভাবে তৈরি হয়। আর তাই গেমটির গেমপ্লের মূল ভিত্তি হলো ব্লক ভাঙা, সংগ্রহ করা ও স্থাপন করা। প্রতিটি ব্লক কাঠ, পাথর, পানি বা ধাতুর মতো ভিন্ন উপাদানকে প্রতিনিধিত্ব করে। সারভাইভাল মোডে খেলোয়াড়কে সম্পদ সংগ্রহ করতে হয় ও সরঞ্জাম তৈরি করতে হয়। জুম্বি বা ক্রিপারের মতো বিপজ্জনক মবদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে হয়। গেমটির শেষ লক্ষ্যের মধ্যে একটি এন্ডার ড্রাগনকে পরাজিত করা। ক্রিয়েটিভ মোডে খেলোয়াড়েরা সীমাহীন সম্পদ নিয়ে খেলতে পারে। কোনো বিপদ ছাড়াই সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে বিশাল কাঠামো, শহর বা আর্টওয়ার্ক তৈরি করতে পারে।
সূত্র: আইজিএন
গেমটির জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ে।
https://www.

ign.com/games/minecraft

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগ

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই অভিযোগ করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। ট্রাইব্যুনাল আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

অভিযোগে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে ফজলুর রহমান বলেছেন, তিনি এই ট্রাইব্যুনাল মানেন না। তাঁর যুক্তি, এই ট্রাইব্যুনাল তৈরি হয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য। এই ট্রাইব্যুনালে অন্য কোনো বিচার হতে পারে না।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, ক্রাইম এগেইনস্ট পিসের বিচার করতে পারেন। এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। ফজলুর রহমানের মাথায় শুধু যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি আছে।

টক শোর আরেকটি অংশ তুলে ধরে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘এই কোর্টের গঠনপ্রক্রিয়া বলে—এই কোর্টে বিচার হইতে পারে না। এই কোর্টে যাঁরা বিচার করতেছেন, আমার ধারণা এঁদের মধ্যে ভেতরে একটা কথা আছে।’

টক শোর এই দুটি অংশ তুলে ধরে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ফজলুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এ ধরনের মন্তব্য করার পরিণতি জানেন। তারপরও ফজলুর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রাইব্যুনালের গঠনপ্রক্রিয়া, বিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাইব্যুনালকে অবমূল্যায়ন করে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে প্রতীয়মান হয়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালত অবমাননা করছেন।

আজ এ অভিযোগ উপস্থাপনের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর সদস্য-২ বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার ও সদস্য-১ বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন না।

প্রসিকিউশনকে শোনার পর আদেশে বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী বলেন, এটি খুবই গুরুতর অভিযোগ। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আগামী রোববার আবার শুনানি হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ফজলুর রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ