মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলায় মজিবুর খান (৫২) হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নুর মোহাম্মদ খান (৩২) ও আইয়ুব খান (৪৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা কারাগারে উপস্থিত ছিলেন। 

আরো পড়ুন:

চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই: ৪ আসামি গ্রেপ্তার  

দৌলতপুরে সেন্টু চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর নাসিম আখতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের তথ্য জানান। তিনি আদালতের এই আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

মামলার বাদী আরিফ হোসেন বলেন, ‘‘ওরা আমার বাবাকে কুপিয়ে খুন করেছেন। আজ আদালত দুইজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন। আমি ওদের ফাঁসি চাই।’’

দণ্ডপ্রাপ্ত নুর মোহাম্মদ সিরাজদীখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের উত্তর বাসাইল গ্রামের প্রয়াত বাবুল খানের ছেলে ও অপর দণ্ডপ্রাপ্ত আইয়ুব একই গ্রামের বাসিন্দা। 

নিহত মজিবুর খান একই উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের রাঙ্গামালিয়া গ্রামের হাছেন উদ্দিন খানের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৪ জুন দুপুরে উপজেলার ঈমামগঞ্জ বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন মজিবুর খান। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নিজ বাড়ির অদূরে তার পথরোধ করে প্রতিপক্ষরা। প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপায়। তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হামলার পরের দিন নিহতের ছেলে আরিফ খান বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করে সিরাজদিখান থানায় মামলা দায়ের করেন। 
 

ঢাকা/রতন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ