পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে আরও সাতজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম ৩০ অক্টোবর মামলা তিনটির পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন। প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি খান মো.

মইনুল হোসেন।

দুদকের পিপি তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক তিন মামলায় শেখ রেহানা ও তাঁর তিন ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে আজ আদালতে সাতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আজ যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিস সহকারী রেশমা, রেভিনিউ সুপারভাইজার দেওয়ান মো. সাঈদ, উচ্চমান সহকারী তৈয়বা করিম, হিসাব সহকারী মো. ফারুক, উপকর কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম চিশতি, উচ্চমান সহকারী আসাদুজ্জামান ও উপকর কর্মকর্তা মেহেদী হাসান।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি)। তিনি দেশটির সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি। এর আগে গত ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয় মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

এই ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত।

মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে অভিযুক্ত ১৬ জন হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।

দুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী, ঢাকায় যাঁদের প্লট-গাড়ি-বাড়ি কিছুই নেই, তাঁরা মূলত সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবার রাজউকের কাছে মিথ্যা হলফনামা দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তাঁদের ঢাকা শহরে জমি-বাড়ি কোনো কিছুই নেই। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে শেখ হাসিনা পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে বাড়ি-জমি-গাড়ি সবই আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা রাজউকের ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গসহ অন্যান্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ক সদস য র জউক র ল ইসল ম সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্ধ্যায় সারা দিনের আলোচিত খবর

ছবি: সৌরভ দাশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ