গত বছরের অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে পাশে বসিয়ে তাঁকে নতুন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ঘোষণা করেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।

সেই রিজওয়ান এ বছরের অক্টোবরে মুদ্রার অন্য পিঠ দেখতে যাচ্ছেন। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডের নেতৃত্বও হারাতে পারেন রিজওয়ান।

বর্তমানে নিজেদের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলছে পাকিস্তান। দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ২৮ অক্টোবর। এরপর ৪ নভেম্বর শুরু ওয়ানডে সিরিজ। এ মুহূর্তে তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক দিয়ে চলছে পাকিস্তান। টেস্টে শান মাসুদ, টি-টোয়েন্টিতে সালমান আলী আগা এবং ওয়ানডেতে মোহাম্মদ রিজওয়ান।

কিন্তু সম্প্রতি পিসিবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজের জন্য অধিনায়ক এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এতেই রিজওয়ানের অধিনায়কত্ব ধরে রাখা নিয়ে শঙ্কা জেগেছে।

ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামীকাল সোমবার প্রধান কোচ মাইক হেসনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে পিসিবির নির্বাচক কমিটি। সেখানেই নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক বেছে নিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

গত বছরের অক্টোবরে সীমিত ওভারের দুই সংস্করণের নেতৃত্ব পেলেও নভেম্বরেই টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব হারান রিজওয়ান। এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে খেলা চার টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই হেরে যায় পাকিস্তান। এরপর তিনি এ সংস্করণের দল থেকেই বাদ পড়েন।

তবে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল রিজওয়ানের। অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা—তিন দেশেই তাঁর অধিনায়কত্বে গত বছর ওয়ানডে সিরিজ জেতে পাকিস্তান।

কিন্তু বছর ঘুরতেই রিজওয়ানের ভাগ্যও যেন ঘুরে যায়। ২০২৫ সালে পাকিস্তান এখনো কোনো ওয়ানডে সিরিজ বা টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি। এর মধ্যে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভরাডুবি পাকিস্তান সমর্থকদের হতাশা আরও বাড়িয়েছে।

যদিও অধিনায়ক হওয়ার পর ওয়ানডেতে রিজওয়ানের ব্যাটিং গড় (৪১.

৬৬) বেড়েছে। কিন্তু তা দলের কোনো কাজে আসছে না বলেই হয়তো তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে পিসিবি।

এখন প্রশ্ন হলো, রিজওয়ানকে সরিয়ে দেওয়া হলে পাকিস্তানের নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হবেন কে? আলোচনায় আছে তিনটি নাম—বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদি ও সালমান আলী আগা।

বাবর আজম

পাকিস্তানের পাঁচ অধিনায়কের একজন বাবর আজম, যাঁর নেতৃত্বে ওয়ানডেতে ৬০ শতাংশের বেশি ম্যাচ জিতেছে দল। সেই বাবর আজমকে আবারও এ সংস্করণের নেতৃত্বে ফেরাতে পারে পিসিবি।

কিন্তু বাবর রাজি হবেন কি না, সেটাই প্রশ্ন। কারণ, এর আগে দুবার স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছেড়েছেন এই তারকা ব্যাটসম্যান। প্রথমবার ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর। ২০২৪ সালের মার্চে তাঁকে নেতৃত্বে ফেরানো হয়। কিন্তু অক্টোবরে আবারও অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।

তবে বাবরকে নেতৃত্বে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ব্যাটিং ফর্ম পিসিবিকে ভাবাতে পারে। ওয়ানডেতে তিনি সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন প্রায় ২৬ মাস আগে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খেলা সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচের দুটিতেই এক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন।

পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে বাবর আজম

মোট ম্যাচ ৪৩
পাকিস্তানের জয় ২৬
পাকিস্তানের হার ১৫
টাই
ফল হয়নি
শতকরা জয় ৬০.৪৭%

শাহিন আফ্রিদি

পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি। তাঁর নেতৃত্বে রেকর্ড তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাহোর কালান্দার্স।

কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই আফ্রিদির। গত বছর তাঁর নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের চারটিতেই হেরেছে পাকিস্তান। সেই সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পরই তাঁর অধিনায়কত্ব চলে যায়।

তবে সম্প্রতি দারুণ ছন্দে থাকায় আফ্রিদিকে আরেকবার অধিনায়ক করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে পিসিবি। তাঁর আসল কাজ বোলিং হলেও ব্যাটিংয়েও তিনি বেশ উন্নতি করেছেন।

২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সিমিং কন্ডিশনে। দলের প্রধান পেসার হওয়ায় আফ্রিদি যেহেতু ‘অটো চয়েজ’, তাই বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তাঁকে এখনই নেতৃত্বে আনতে পারে পিসিবি।

পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে শাহিন আফ্রিদি

মোট ম্যাচ
পাকিস্তানের জয়
পাকিস্তানের হার
শতকরা জয় ২০%

সালমান আলী আগা

তিন সংস্করণেই পাকিস্তান দলের নিয়মিত মুখ সালমান আলী আগা। এ বছরের শুরু থেকেই তিনি টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁকে মোটামুটি সফলই বলা চলে।

বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পাশপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আফগানিস্তানকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজেও দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বেই এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে পাকিস্তান।

মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা সালমান স্পিন বোলিংটাও খারাপ করেন না। যদিও আফ্রিদির মতো তাঁরও ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা নেই। তবে পিসিবি যেহেতু তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক নীতি থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, তাই সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই সালমানকে নেতৃত্ব দেওয়া হতে পারে।

পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে সালমান আলী আগা

মোট ম্যাচ ৩০
পাকিস্তানের জয় ১৭
পাকিস্তানের হার ১৩
শতকরা জয় ৫৬.৬৭%

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জওয় ন র স স করণ গত বছর ত বছর বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়ে গর্ববোধ করার কথা জানালেন রেজা কিবরিয়া

রেজা কিবরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। তিনি গণ অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। গত মাসের শুরুর দিকে তাঁর বিএনপিতে যোগ দেওয়ার খবর সামনে আসে। এখন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন।

বিএনপিতে যোগ দিতে পেরে গর্ববোধ করার কথা জানান রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, বিএনপি দুবার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাত থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে। একবার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান করেছিলেন, আরেকবার খালেদা জিয়া। এটা বিএনপির একটা ঐতিহাসিক ভূমিকা। এমন উদাহরণ অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না। এসব কারণে তিনি বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট হন। জিয়াউর রহমানকে তাঁর আদর্শ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রেজা কিবরিয়া বলেন, বিএনপির নেতৃত্ব দেশের নতুন প্রজন্মের সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। বিএনপির আগের ভিশন নেই, অনেক কিছু বদলে গেছে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাঁরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত যে, রেজা কিবরিয়া আজ তাঁদের মাঝে এসে তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। তিনি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রেজা কিবরিয়াকে তাঁদের দলে স্বাগত জানাচ্ছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রকাঠামোর প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য মেধাবী নেতৃত্ব ও প্রতিভাবান মানুষ প্রয়োজন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রেজা কিবরিয়ার বিএনপির পতাকাতলে আসাকে তাঁর দল স্বাগত জানাচ্ছে। অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে চান। আগামী সংসদ নির্বাচনে জন্য গত মাসের শুরুতে বিএনপি যে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে, সেখানে হবিগঞ্জ-১ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়।

২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেজা কিবরিয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে একই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। এর আগে তিনি গণফোরামে যোগ দেন। পরে দলটির সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর রেজা কিবরিয়াকে কেন্দ্র করে দলটি দুইভাগে বিভক্ত হয়। পরে তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের সঙ্গে গণ অধিকার পরিষদ গঠন করেন। তিনি দলটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হন। সেখানেও তাঁকে কেন্দ্র করে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এরপর তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। এবার তিনি বিএনপিতে যোগ দিলেন।

আরও পড়ুনবিএনপিতে যোগ দিয়েছেন রেজা কিবরিয়া০৫ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিয়ামের সঙ্গী ইধিকা পাল!
  • অবশেষে সৎকার হলো হিমাগারে থাকা ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ
  • চবি ক্যাম্পাসে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক
  • শিক্ষার্থী পরিচয়ে প্রতারণা, বাসাভাড়া নিয়ে দেড় বছর ক্যাম্পাসেই থেকেছেন
  • চুয়াডাঙ্গায় তরুণের লাশ উদ্ধার, ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষ হত্যা করেছে– অভিযোগ পরিবারের
  • ৫ ক‌্যাচ নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড ছুঁলেন তানজিদ
  • বিপিএলের আগে মুমিনুলকে সিডনিতে খেলার সুযোগ দিলেন হাথুরুসিংহে
  • আইপিএল নিলামে মোস্তাফিজের ভিত্তি মূল্য ২ কোটি রুপি, সাকিবের ১ কোটি
  • ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের ভিডিওটি সন্দ্বীপের
  • আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়ে গর্ববোধ করার কথা জানালেন রেজা কিবরিয়া