কয়েক দিনের মধ্যেই এনসিপি–এবি পার্টিসহ নতুন জোট: মজিবুর রহমান
Published: 23rd, November 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন জোট গঠন করা হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দল হিসেবে যারা সামনে থেকে ভূমিকা রেখেছে, তাদের নিয়ে এই জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোটে এবি পার্টির সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল থাকবে।
আজ রোববার দুপুরে ফেনী শহরের একটি গণমিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী–২ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে জনসংযোগ শুরু করেছেন মজিবুর রহমান। এরই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় জোট গঠনের বিষয়ে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জাতীয়ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জনগণের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা হবে। জোট ঘোষণার সম্ভাব্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ নভেম্বর।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এবি পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সুযোগ থাকার পরও বিএনপির সঙ্গে জোটে যাইনি। কারণ, বিএনপির অনেক নেতা এত বছর সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁদের দলের নমিনেশন পাওয়ার অধিকার আছে। তবে বিএনপি আমাদের জন্য কিছু সিট খালি রেখেছে—বিষয়টি সত্য নয়। বরং এসব প্রশ্নে আমরা বিব্রত হই। বিএনপি একটি পুরোনো দল, তারা তাদের মতো করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। আমরা নতুন দল হিসেবে আমাদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সংশয় দেখছেন না জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি করতে হবে। এ জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও আন্তরিক হতে হবে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ফেনী-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে নিজের ঘাটলা বা বাড়িতে সালিস দরবার করবেন না, প্রশাসনকে কাজের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ এবং বাজার বা স্কুল কমিটির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না। বরং জেলা প্রশাসকসহ সব সরকারি দপ্তরে সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তা বাছাইয়ের চেষ্টা, সরকারি দপ্তরে কাজের জবাবদিহি নিশ্চিত করা, সরকারি বরাদ্দের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
এরই মধ্যে ফেনীর উন্নয়নে বিভিন্ন ভূমিকার কথা জানিয়ে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আগামী দিনে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেনীতে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সেনা ব্রিগেড স্থাপনের জন্য চেষ্টা করা হবে।
সংস্কার প্রসঙ্গে মজিবুর রহমান বলেন, অভ্যুত্থানের পর সবাই মুক্তভাবে রাজনীতি করছে, এটা একটা বড় অর্জন। এখন যে কেউ সরকারপ্রধানের কড়া সমালোচনা করতে পারছেন, এটি কিছুদিন আগেও সম্ভব ছিল না। প্রধানমন্ত্রী পদে দুবারের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী দলের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক করার মতো সংস্কার বাস্তবায়িত হলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক পরিবর্তিত হবে।
শেখ হাসিনার বিচার কার্যক্রম সম্পর্কে মঞ্জু বলেন, শেখ হাসিনা দেশে এসে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তাঁর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন। প্রয়োজনে তিনি বা তাঁর দল বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেতে আবেদন করতে পারেন।
ফেনী জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক আহসানুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম। উপস্থিত ছিলেন দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন, যুগ্ম সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম, মামুন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহীন সুলতানী, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব মিয়াজী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা মনি, সহদপ্তর সম্পাদক নাজরানা হাফিজ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম গণসংযোগ করলেন বিএনপি নেতা ইসরাফিল খসরু
নির্বাচনী প্রচারণায় জমে উঠছে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসন। এই আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। তবে দলের মনোনয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাঠে সক্রিয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু। তিনি প্রতিদিনই এলাকায় সভা, সমাবেশ ও উঠোন বৈঠক করছেন। গতকাল শনিবার নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করে বারিক বিল্ডিং মোড়ে সমাবেশ করেন ইসরাফিল খসরু।
বিগত ১৭ বছর বিএনপির কেউ মাঠ ছেড়ে যায়নি মন্তব্য করে ইসরাফিল খসরু বলেন, বিএনপি জনগণের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছে। তাই আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রশাসনে নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হবে, বিচার বিভাগ স্বাধীন করা হবে এবং তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফা কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি জাতির পুনর্জাগরণের নীলনকশা। এই দফাগুলোর মাধ্যমে দেশে সুশাসন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের ১০টিতে প্রার্থী ঘোষণা হয়। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। এ আসনে দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী ইসরাফিল খসরু ও নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান। ইসরাফিল খসরু বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সালের নির্বাচন পর্যন্ত পরপর চারবার এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আমীর খসরু মাহমুদ।
এবারের নির্বাচনে এক পরিবার থেকে একজনকে প্রার্থী করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। এর মধ্যেও দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আশাবাদী। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’