যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের হলোম্যান বিমানঘাঁটিতে একবার এলিয়েনের (ভিনগ্রহবাসী) মুখোমুখি হয়েছিলেন বিমানবাহিনী ও মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর কর্মকর্তারা। ১৯৬৪ সালে ঘটেছিল এই ঘটনা।

এ বিষয়ে অবগত ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ (১৯৮৯-১৯৯৩ সাল)। নতুন মুক্তি পাওয়া একটি প্রামাণ্যচিত্রে এমন অবিশ্বাস্য দাবি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পোস্ট।

তবে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দাবির পক্ষে প্রামাণ্যচিত্রে প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখানো হয়নি।

‘দ্য এজ অব ডিসক্লোজার’ নামের এ প্রামাণ্যচিত্রে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী এরিক ডেভিসের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ২০০৩ সালে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বুশ তাঁকে ওই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন।

এরিক ডেভিস ২০০৭ সালে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠিত অ্যাডভান্সড অ্যারোস্পেস থ্রেট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রামের (এএটিআইপি) বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন প্রয়াত সিনেটর হ্যারি রিড।

‘দ্য এজ অব ডিসক্লোজার’ নামের এ প্রামাণ্যচিত্রে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী এরিক ডেভিসের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ২০০৩ সালে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় বুশ তাঁকে ওই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুশ এরিককে বলেছেন, তিনটি মহাকাশযান ওই ঘাঁটির কাছে আসে এবং একটি অবতরণ করে। সেটি থেকে এক এলিয়েন বেরিয়ে এসে বিমানবাহিনী ও সিআইএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে। বুশ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে নাকি জানানো হয়, তা জানার ‘প্রয়োজন নেই’।

জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে নৌবাহিনীর পাইলট ও সিআইএর পরিচালক ছিলেন। প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁকে এ ঘটনা জানানো হয়েছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত শুক্রবার অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পাওয়া ওই প্রামাণ্যচিত্রে পদার্থবিদ ও সাবেক এএটিআইপি সদস্য হ্যাল পাথহফের সাক্ষাৎকারও রয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, ভিনগ্রহের বিভিন্ন সত্তার নমুনাও উদ্ধার করা হয়েছে।

যেসব সামরিক সদস্য ভিনগ্রহের ওই মহাকাশযানের কাছাকাছি এসেছিলেন, তাঁদের কয়েকজন ভীষণভাবে দগ্ধ বা আহত হয়েছেন।গ্যারি নোলান, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট ও ক্যানসার গবেষক

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজিস্ট ও ক্যানসার গবেষক গ্যারি নোলান বলেছেন, যেসব সামরিক সদস্য ওই মহাকাশযানের কাছাকাছি গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন, তাঁদের কয়েকজন ভীষণভাবে দগ্ধ বা আহত হয়েছিলেন।

আরও পড়ুনএলিয়েন ধরতে গুপ্ত প্রকল্প১৮ ডিসেম্বর ২০১৭সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইট হাউসে মামদানির সঙ্গে বৈঠক কি ট্রাম্পের একটি কৌশল

রাজনৈতিক দিক দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ঝামেলায় পড়েন, তখন একটি কৌশল খাটান তিনি। হয় তিনি কোনো লড়াইয়ে জড়ান বা প্রতিপক্ষ খুঁজে বের করেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা ভুল সিদ্ধান্তের পর নজর ঘোরাতে আজ শুক্রবার এমনই এক কৌশল খাটিয়েছেন তিনি। তা হলো নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির সঙ্গে বৈঠক।

হোয়াইট হাউসে মামদানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প দাবি করেন, মামদানিই তাঁর সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় বেলা তিনটায় এ বৈঠক হওয়ার কথা। বাংলাদেশের হিসাবে তখন সময় হয় দিবাগত রাত দুইটা। মেয়র নির্বাচনে মামদানির প্রতি ট্রাম্পের বারবার চড়াও হওয়ার কারণে এ বৈঠক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আগ্রহ রয়েছে।

প্রথমে দেখে নেওয়া যাক সাম্প্রতিক দিনগুলোয় কী কী সংকটের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। তিনি হয়তো শুনেছেন যে এক দশক ধরে রিপাবলিকান পার্টির ওপর তাঁর প্রবল প্রভাব ফিকে হয়ে আসছে। কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইন নিয়ে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। আর জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করে উল্টো হাস্যকর অবস্থার মুখে পড়েছেন।

তাই বোঝাই যাচ্ছিল—ক্রমেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা ট্রাম্প নতুন কোনো সংঘাতের কৌশল খুঁজবেন। তিনি পেয়েও গেছেন। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাকে সেনাসদস্যদের মনে করিয়ে দিতে দেখা যায় যে অবৈধ কোনো আদেশ মানার বাধ্যবাধকতা নেই তাঁদের। এ নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ওই আইনপ্রণেতারা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক আচরণ করেছেন, যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

এমন মন্তব্য নিয়ে এরই মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট শিবিরের সংঘাত শুরু হয়েছে। ওই ভিডিওতে থাকা ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ক্রিসি হলাহ্যান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা বলেছেন। আর তা তিনি বলেছেন শুধু এ জন্য যে আমি এবং আরও কয়েকজন একটি ভিডিওতে আইন মানার কথা বলেছি।’

এখন কথা হচ্ছে, ট্রাম্প কেন এসব লড়াই পছন্দ করেন। স্বাভাবিক রাজনীতিতে এ ধরনের আচরণ একজনের রাজনৈতিক জীবন নষ্ট করে দিতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প উল্টো এসব থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় রক্ষণশীল সংবাদমাধ্যমগুলো ট্রাম্পের পক্ষে প্রচার শুরু করে। দলের রক্ষণশীল সমর্থকেরা তাঁর পক্ষে একত্র হয়। আর এটি সংকট থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে বড় সহায়তা করে।

ট্রাম্পের এই কৌশল নতুন নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী প্রচারণা, সিনেটর জন ম্যাককেইনের যুদ্ধের রেকর্ড নিয়ে উপহাস কিংবা ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের মিথ্যা দাবি—এসব ট্রাম্পকে জনপ্রিয় থাকতে সাহায্য করেছে। তবে এখন প্রশ্ন—যুক্তরাষ্ট্র যখন অর্থনৈতিক দুর্বলতার মুখে এবং ট্রাম্পের সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে, তখন এই কৌশল কতটা কাজে লাগবে।

আজ হোয়াইট হাউসে মামদানির সঙ্গে বৈঠক ট্রাম্পের আরেকটি কৌশল। নিজের নানা ভুল থেকে নজর ঘোরাতে মামদানিকে তিনি একহাত নেবেন, এমন আশঙ্কা রয়েছে। দুজনই নিউইয়র্কের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়েছে উঠেছেন। তবে ট্রাম্পের বয়স ৭৯। তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শেষের দিকে। অপর দিকে মামদানির বয়স মাত্র ৩৪। তিনি তরুণদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়।

ট্রাম্প মামদানির মাধ্যমে সব ডেমোক্র্যাটকে ‘চরমপন্থী’ রূপে দেখাতে চাচ্ছেন—বিশেষ করে আগামী বছরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে। ট্রাম্প মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট মেয়র’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও মামদানি কমিউনিস্ট নন। তিনি নিজেকে প্রকাশ্য গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মামদানির নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

আজকের বৈঠক মামদানির জন্য বড় একটি পরীক্ষা। অতীতেও হোয়াইট হাউসে ডেকে নিয়ে অতিথিদের সবার সামনে চরম অপমান করতে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আজ মামদানির জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয়টি ছিল এটা প্রমাণ করা যে তিনি ট্রাম্পের সামনে দাঁড়াতে সক্ষম এবং নিউইয়র্কের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সংঘর্ষ মোকাবিলা করতে পারবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নায়ক মারুফের বাসায় থাকছেন মাহি
  • ট্রাম্পকে এখনো ফ্যাসিবাদী মনে করেন, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে কী উত্তর দিলেন জোহরান মামদানি
  • ট্রাম্প-মামদানির বিস্ময়কর বৈঠকে যা ঘটল, হঠাৎ মামদানির এত প্রশংসার কারণ কী
  • মামদানির হাত চাপড়ে, মজার ছলে ঘুষি দিয়ে কী বোঝালেন ট্রাম্প
  • মামদানি দুর্দান্ত মেয়র হবেন, আমি সমর্থন করব: ট্রাম্প  
  • বৈঠকে একে অন্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প-মামদানি
  • হোয়াইট হাউসে মামদানির সঙ্গে বৈঠক কি ট্রাম্পের একটি কৌশল