আজ ১৩ জানুয়ারি। দিনাজপুরের হিলি রেলওয়ে স্টেশনের ট্রেন ট্র্যাজেডি দিবস। ৩০ বছর আগে ১৯৯৫ সালের এই দিনে হিলি রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। দিনটি উপলক্ষে হিলিবাসী তখন থেকেই ট্রেন ট্র্যাজেডি দিবস পালন করে আসছেন।
হিলি রেলওয়ে স্টেশন কার্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালের ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে হিলি রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল গোয়ালন্দ থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী লোকাল একটি ট্রেন। এ সময় বিপরীত দিক সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী আন্তঃনগর সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
দুর্ঘটনায় বিকট শব্দে দুমড়ে-মুচড়ে যায় লোকাল ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি। পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন ও স্থানীয়রা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করেন। ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ২৭ বলা হলেও স্থানীয়দের দাবি, ওই ঘটনায় অন্তত শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত কিশোরের মৃত্যু
সাভারে চার জন নিহতের ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্স ও বাসের চালক গ্রেপ্তার
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ঘোষণা দেন নিহত ও আহতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের। এর মধ্যে, অনেকে এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
হাকিমপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ‘‘সেদিনের কথা মনে পড়লে আজও শরীর শিউরে উঠে। সেই রাতে হিলি বাজার প্রেস ক্লাবে বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। এত বিকট শব্দ ছিল, যে আমরা স্থির করতে পারছিলাম না কোথায় কী হচ্ছে। ছুটে যাই রেলস্টেশনের দিকে।’’
‘‘গিয়ে দেখি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। শত শত মানুষের আহাজারি। ক্ষত-বিক্ষত মানুষের দেহের বিভিন্ন অংশ পড়ে আছে। আহতরা বাঁচার জন্য আহাজারি করছে, অনেকের শরীর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বুঝে উঠতে পারছিলাম না, কী করা উচিত। অবশেষে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে হিলি হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’- যোগ করেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার জীবনে এর আগে এত লাশ কখনো একসঙ্গে দেখিনি। সে দিনের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা আজও হিলির মানুষকে আতঙ্কে রাখে।’’
হিলি রেলওয়ে একতা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বুলু বলেন, ‘‘প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও হিলি রেলস্টেশন প্লাটফর্মে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া হবে। পাশাপাশি আলোচনা সভা ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।’’
ঢাকা/মোসলেম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় পর্যটক নিহত, আহত ৫
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় জিয়াউল হক (৬৫) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫ জন।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেল পুলিশবাহী বাস, আহত ২০
খাগড়াছড়িতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট থেকে পাঁচজন পর্যটক নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্রে যাচ্ছিল। ভোলাগঞ্জ পয়েন্টে আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পাথরবাহী ট্রাক্টর অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশার চালকসহ ৬ জন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জিয়াউল হককে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি রতন শেখ বলেন, ‘‘ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে পাথরবাহী ট্রাক্টরচাপায় এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’
ঢাকা/নূর/রাজীব